1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : editor :
  3. [email protected] : moshiur :
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ:

অস্থির চিনি ও তেলের বাজার

মহানগর রিপোর্ট :
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ৫ মে, ২০২৩
  • ১১০ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে অপরিশোধিত চিনির দাম। যদিও দেশে চিনি আমদানি মোটামুটি স্বাভাবিক রয়েছে। মজুতও রয়েছে পর্যাপ্ত। তবে অজানা কারণে দেশের বাজারেও পরিশোধিত চিনির সরবরাহ কম। অন্যদিকে দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের দাম ফের বেড়েছে। আমদানিতে সরকারের ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হওয়ার অজুহাতে প্রতিদিনই বাড়ছে ভোজ্যতেলের দাম। সবমিলিয়ে দেশে অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য দুটির বাজারে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১০ দিন আগে খাতুনগঞ্জের বাজারে এক মণ পরিশোধিত চিনির মূল্য ছিল তিন হাজার ৮৫০ টাকা। বুধবার (৩ মে) বিক্রি হয়েছে চার হাজার ৬২০ টাকায় ও বৃহস্পতিবার (৪ মে) বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৬৩০ থেকে ৪০ টাকায়।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বছরে দেশে কম-বেশি ২০ লাখ টনের মতো চিনির চাহিদা রয়েছে। এ হিসাবে গড়ে প্রতি মাসে দেড় লাখ টনের বেশি চিনির চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে বছরে দেশে চিনি উৎপাদিত হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টনের মতো। বাকি চিনি আমদানি করে চাহিদা মেটানো হয়। দেশের বাজারে হাতে গোনা পাঁচটি প্রতিষ্ঠান চিনি আমদানি করে। এগুলো হলো সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, দেশবন্ধু গ্রুপ ও আবদুল মোনেম লিমিটেড। তারা আন্তর্জাতিক বাজার থেকে অপরিশোধিত চিনি এনে পরিশোধনের পর বাজারজাত করে।

বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন অপরিশোধিত চিনির দাম ৬৭৫ মার্কিন ডলার। এক মাস আগেও যা ছিল ৫২০ মার্কিন ডলার। বর্তমান দরে চিনি আমদানি করা হলে এর খরচ পড়বে প্রতি কেজি ১৩১ টাকা করে। এ অবস্থায় চিনি আমদানি করবে কি না সে বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত চেয়েছে চিনি আমদানিকারক ও পরিশোধনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন। গত ২ মে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে সংগঠনটির মহাসচিব গোলাম রহমানের সই করা এক চিঠিতে এ সিদ্ধান্ত চাওয়া হয়।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বেড়েছে এটি ঠিক। যদিও এই বর্ধিত মূল্যের চিনি বাজারে আসতে আরও সময় লাগবে। এর আগেই চিনির দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আবার বর্তমানে চিনি আমদানি মোটামুটি স্বাভাবিক রয়েছে। কিন্তু বাজারে সরবরাহ কমে গেছে। এ কারণে চিনির দাম হু হু করে বাড়ছে।

জানতে চাইলে মেঘনা গ্রুপের উপ-মহাব্যবস্থাপক (আমদানি) মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের চিনি আমদানি মোটামুটি স্বাভাবিক রয়েছে। প্রতি মাসে দুই জাহাজে গড়ে এক লাখ টন করে চিনি আমদানি করা হচ্ছে। এখনো বহির্নোঙরে একটি জাহাজ থেকে চিনি খালাস করা হচ্ছে। ওই জাহাজে প্রায় ৬০ হাজার টন চিনি রয়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত বছরের শেষে ও এ বছরের শুরুর দিকে চিনির বাজার লাগামহীন হয়ে পড়ে। রমজানকে সামনে রেখে বাজারে লাগাম টানতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি চিনি আমদানিতে নিয়ন্ত্রণ শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এই সুবিধা আগামী ৩০ মে পর্যন্ত বলবৎ থাকার কথা রয়েছে। এর আগে থেকে চিনির বাজারে আবারও অস্থিরতা তৈরি হতে থাকে।

এদিকে চিনির মতো তেলের বাজারেও অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এর কারণ হিসেবে ভ্যাট কমানোর ঘোষণা বাতিল হওয়াকে অজুহাত দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়তির দিকে থাকায় দেশের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে গত বছরের ১৬ মার্চ ভোজ্যতেলের ভ্যাট আমদানি পর্যায়ে ১০ শতাংশ কমানোর ঘোষণা দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। কয়েক দফায় মেয়াদ বাড়ানোর পর গত ৩০ এপ্রিলে ভ্যাট মওকুফের মেয়াদ শেষ হয়। এতদিন আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট ১৫ শতাংশের পরিবর্তে পাঁচ শতাংশ কার্যকর ছিল। এখন আবার ১৫ শতাংশে ফিরে গেল।

এ কারণে আজ (বৃহস্পতিবার) প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম ১২ টাকা বাড়িয়ে ১৯৯ টাকা নির্ধারণ করে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনটির নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম মোল্লার সই করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭৬ টাকা; যা ছিল ১৬৭ টাকা। আর পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৯০৬ টাকা থেকে ৫৪ টাকা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৯৬০ টাকা। এছাড়া খোলা পাম সুপার তেল লিটার প্রতি ১১৭ টাকা থেকে ১৮ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

যদিও ভ্যাট কমানোর ঘোষণার প্রত্যাহারের আগে থেকে প্রয়োজনীয় পণ্যের দামও প্রতিদিন বেড়ে গিয়েছিল। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের অন্যতম বৃহত্তম পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে ১০ দিন আগে সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে মণ প্রতি ছয় হাজার ২০০ টাকা থেকে ৬ হাজার ২৫০ টাকা। গতকাল (বুধবার) বিক্রি হয়েছে ছয় হাজার ৫০০ টাকায়। মাত্র একদিনের ব্যবধানে আজ বিক্রি হচ্ছে ছয় হাজার ৮০০ টাকায়।

একইভাবে ১০ দিন আগে পাম তেল বিক্রি হয়েছে মণ প্রতি চার হাজার ৫২০ টাকা করে। বুধবার বিক্রি হয়েছে চার হাজার ৯৪০ টাকায় ও আজ (বৃহস্পতিবার) বিক্রি হচ্ছে চার হাজার ৯৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। ১০ দিন আগে প্রতি মণ পাম সুপার তেলের দাম ছিল চার হাজার ৭০০ টাকা। বুধবার বিক্রি হয়েছে পাঁচ হাজার ১০০ টাকায় ও আজ বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ১৪০ টাকায়।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট মাহবুব আলম বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বেশি। এ কারণে দেশেও দাম বেড়েছে। ভোজ্যতেলের দামও বাড়তির দিকে। কারণ ভোজ্যতেলের ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হয়েছে।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াচ্ছেন। সরকার এতে সায় দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমতির দিকে। তারপরও শুল্ক প্রত্যাহারের ঘোষণা বাতিল হওয়ার অজুহাতে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েছেন। যে পরিমাণ নতুন শুল্ক যোগ হচ্ছে তার চেয়ে বেশি পরিমাণে দাম বেড়েছে। একইভাবে দেশে যে পরিমাণ চিনি মজুত আছে তা দিয়ে পুরো বছর চলে যাবে। তারপরও বাজারে চিনির সংকট তৈরি করা হয়েছে। দাম বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ীরা সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন। সরকারও যথাযথ বাজার তদারকি করছে না।

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: সিসা হোস্ট