1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : editor :
  3. [email protected] : moshiur :
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ:
বিজয় দিবসে রাষ্ট্রপতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে আমন্ত্রণ সাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, পূর্বাভাসে শীত নিয়ে নতুন বার্তা ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম-হোয়াটসঅ্যাপ সাড়ে তিন ঘণ্টা পর সচল ঘন কুয়াশায় মধ্যরাত থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ গাজায় বর্বর হত্যাযজ্ঞ চলছেই, নিহত ছাড়াল ৪৪ হাজার ৮০০ ভোটাধিকার বঞ্চিত দেড় কোটি প্রবাসী, কার্যকর উপায় খুঁজছে সংস্কার কমিশন ভারতে পুলিশি পাহারায় ভাঙা হলো ১৮০ বছর পুরোনো মসজিদের একাংশ আগরতলা অভিমুখে লংমার্চে অংশ নিতে নয়াপল্টনে নেতাকর্মীরা ডিজিটাল মিডিয়ার যুগে ছাপা সংবাদপত্র রুগ্ণ শিল্প ৪৮ ঘণ্টায় সিরিয়ায় ৪৮০টি হামলা ইসরায়েলের, হামলা সিরীয় নৌবহরেও

৩ বছরের মুনাফা এ ঈদেই করতে চান ব্যবসায়ীরা

মহানগর রিপোর্ট :
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ১ এপ্রিল, ২০২৩
  • ৫২৪ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারের আঁচ লেগেছে রাজধানীর পাইকারি মার্কেট ও শপিংমলগুলোতেও। ঈদকে সামনে রেখে ক্রেতাদের পকেট কাটার অভিযোগ উঠছে বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে। মূলত করোনা মহামারি ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অজুহাত তুলে রমজানের শুরু থেকে পোশাকের বাড়তি দাম হাঁকাচ্ছেন তারা। বিষয়টি অকপটে স্বীকারও করছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীদের দাবি, করোনাকাল ও সরকারের বিধি নিষেধের কারণে গত তিন বছরের (২০২০, ২০২১ ও ২০২২) ঈদে আশানুরূপ মুনাফা হয়নি। এর সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাবে ব্যবসায় দেখা দিয়েছে মন্দাভাব। তাই এবারের ঈদে গত তিন বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে হবে, না হলে আগামীতে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়বে।

ঈদে পোশাকে শতকরা ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ দাম বেড়েছে। কিছু কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ

রমজানের ঈদের বাকি এখনো ২১ থেকে ২২ দিন। তবে এরই মধ্যে মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে ক্রেতাদের আনাগোনা বেড়েছে। অনেকেই ঈদের কেনাকাটা শুরু করেছেন। অফিস-কিংবা বাড়ির কাজের কারণে দিনের বেলা না আসলেও সন্ধ্যার পরপরই ক্রেতাদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে।

রাজধানীর গুলিস্তান,পল্টন, মৌচাক-মালিবাগ এবং নিউমার্কেট এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, ক্রেতাদের চাহিদা মূলত গজ কাপড়, থ্রিপিস ও পাঞ্জাবিতে। এই তিনটির পাশাপাশি শাড়ি ও লেহেঙ্গা, গাউনসহ অন্যান্য পোশাকও বিক্রি হচ্ছে। দোকানগুলোও গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে সারিসারিভাবে সাজিয়ে রেখেছে দেশি-বিদেশি পণ্যগুলো। ক্রেতা দেখলেই হাঁকডাক দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। নানান কথা ও অফার দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্টের চেষ্টা করছেন তারা। তবে ক্রেতার পোশাক পছন্দ হলেই ইচ্ছামতো দাম হাঁকাচ্ছেন। হাজার টাকার কাপড়ে ন্যূনতম ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা মুনাফা করছেন। অর্থাৎ ক্রেতারা ২০২২ সালে যে পোশাক ১ হাজার টাকায় কিনেছেন। এবছর সেটা ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। যারা দর-দাম কম করছেন না, তাদের আরও বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের এক কথা করোনার কারণে তিন বছর ব্যবসা করতে পারিনি। পুঁজি খাটিয়ে ব্যবসা ধরে রেখেছি, এবারের ঈদে পোষাতে হবে। অর্থাৎ তিন বছরের লাভ এবার করতে হবে।

মার্কেটে আসা ক্রেতারা বলছেন, ঈদে পোশাকে শতকরা ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ দাম বেড়েছে। কিছু কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ।

এবার বড় দোকান থেকে বেশি দামে কাপড় কিনতে পারবো না বলে কম দামে একটি শার্ট কিনেছি। এই শার্ট ঈদের দিন গায়ে দিবো

ক্রেতা শহিদুল ইসলাম

তবে বিক্রেতারা বলছেন, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে একদিকে ডলারের দাম বেড়েছে। এতে করে গত বছরের তুলনায় ডলার প্রতি ২০-২৫ টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। এছাড়া গ্যাস ও বিদ্যুৎসহ উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এছাড়া দোকান ও কর্মচারী ভাড়াসহ খরচের পর মুনাফা আসবে। সব কিছু হিসাব করে এবার বেশি দামে পোশাক বিক্রি করতে হচ্ছে।

ভারত-চীন থেকে শাট ও টি-শার্ট আমদানি করে গুলিস্তানের গোলাপ শাহ শপিং সেন্টারে বিক্রি করেন শিমুল আহমেদ। জানতে চাইলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত বছর ভালো ব্যবসা হয়েছে। এবছরও শবে বরাতের পর থেকে বিক্রি হচ্ছে টুক-টাক। আশা করছি- আগামী সপ্তাহ থেকে বিক্রি বাড়বে।

২০০ টাকার শার্ট কিনলাম সাড়ে ৩শ টাকা দিয়া। এহন আপনিই কন, দাম বেশি না কম

গত বছরের তুলনায় এবার দাম বাড়ছে কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতি পিস শার্টের মূল্য গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। গত বছর যে চায়না শার্ট বিক্রি করেছি ২৫০ টাকা এবার সেই শার্ট বিক্রি করছি ৩৫০ টাকায়। গত বছর ভারতীয় অরবিন্দ শার্ট বিক্রি করেছি ৮০০ টাকায়। এবার তা বিক্রি করছি ১২৫০ টাকা।

এ দোকানেই কথা হয় ক্রেতা শহিদুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, এবার বড় দোকান থেকে বেশি দামে কাপড় কিনতে পারবো না বলে কম দামে একটি শার্ট কিনেছি। এই শার্ট ঈদের দিন গায়ে দিবো।

দাম কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০০ টাকার শার্ট কিনলাম সাড়ে ৩শ টাকা দিয়া। এহন আপনিই কন, দাম বেশি না কম।

এখনো ঈদের বিক্রি পুরোপুরি শুরু হয়নি বলে জানিয়েছেন সিদ্দিক বাজার বাচ্চাদের পোশাক বিক্রি করা জসিম উদ্দিন। এ দোকানদার বলেন, এবারের ঈদ উপলক্ষ্যে দেশীয় পোশাকের পাশাপাশি চায়না ও ভারত থেকে আমদানি করেছি। শূন্য থেকে ১০ বছরের বাচ্চাদের জন্য আলাদা করে সাজানো রয়েছে নানা রঙের পোশাক। এসব পোশাকের মূল্য সর্বনিম্ন ৮০০ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত।

গত বছরের তুলনায় এবার দাম কেমন বেড়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, পোশাকের দাম হাজারে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা বেড়েছে। পিস প্রতি হিসাব করলে জিরো বয়সের বাচ্চাদের জামার দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। ৫ বছরের বাচ্চাদের পোশাকের দাম বেড়েছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। তার বেশি বয়সীদের দাম বেড়েছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত।

গুলিস্তানের পীর ইয়ামেনি মার্কেটের এক লুঙ্গি বিক্রেতা বলেন, এবার ঈদ উপলক্ষ্যে ১০০ থেকে ৪০০ টাকার লুঙ্গি আমি দোকানে এনেছি। কিন্তু বিকিকিনি কম, দামও বেশি। মাস শেষ তাই হয়তো বিক্রি কম। তবে এবার লুঙ্গি প্রতি দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।

একই মার্কেটের আরেক ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম মানিক বলেন, করোনা ও সরকারি বিধিনিষেধের কারণে গত তিন বছর আমাদের লোকসান গুণতে হয়েছে। গত বছর কিছুটা মুনাফার দেখা পেয়েছিলাম। আশা করছি- এবার ভালো ব্যবসা হবে।

এদিন সকাল-দুপর গড়িয়ে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ২২শ টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন একই মার্কেটের আরেক দোকানদার জসিম উদ্দিন। তিনি দেশি থ্রিপিসের পাশাপাশি ভারতীয় ও পাকিস্তানি থ্রি পিস বিক্রি করেন। যার মূল্য ১০০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত।

অনেকটা ক্ষোভ নিয়ে এ বিক্রেতা বলেন, মানুষ পোশাক কখন কেনেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার পর যদি সামর্থ্য থাকে তারপর কেনেন, তাই না? এমন কোনো জিনিস আছে যে দাম বাড়েনি। সবই বাড়ছে, তাহলে মানুষ কিনব কেমনে?

পোশাকের দাম কেমন বেড়েছে, জানতে চাইলে এ বিক্রেতা বলেন, সাধারণ থ্রীপিসে দাম বেড়েছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। গত বছরের তুলনায় এবার বেশি দামে কিনতে হয়েছে, তাই এখন বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আমাদের কিছুই করা নেই।

পীর ইয়ামেনি মার্কেটের দোকানগুলো ক্রেতা শূন্য হলেও বিপরীত চিত্র দেখা গেছে রাজধানীর নিউমার্কেটে। এখানে শবে বরাতের পর থেকেই ক্রেতাদের ভালো আনাগোনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

এই ঈদে আমাদের গত তিন বছরের মুনাফার টাকা তুলতে হবে। আমরা সেইভাবে দোকান পরিচালনা করছি নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন

নিউমার্কেটের শাড়ির দোকানদার নূরুল ইসলাম জানান, যাকাতের শাড়ি থেকে শুরু করে, ঘরে পড়া, বিয়ে কিংবা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পরিধান করা শাড়ি বিক্রি করছেন তিনি। শবে বরাতের পর থেকেই এগুলো বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ৪ ধরনের যাকাতের শাড়ি রয়েছে তার কাছে। গত বছর ৩০০ টাকা করে বিক্রি করা যাকাতের শাড়ি এবার বিক্রি করছেন ৪০০ টাকায়। প্রতিটি শাড়িতে একশ থেকে দেড়শ টাকা দাম বাড়তি। ২০২০ ও ২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে বেচা বিক্রি ভালো হয়েছে। আশা করছি এ বছর আরও ভালো হবে।

নিউমার্কেটে স্বামীকে নিয়ে কেনাকাটা করতে এসেছেন ছায়েরা আক্তার নামের এক গৃহবধূ। তিনি বলেন, রোজার ১০ কিংবা ১৫ হয়ে গেলে পোশাকের দাম বেড়ে যায়। দোকানগুলোতে দম ফেলার জায়গা পাওয়া যায় না। তাই আগে আগে আসলাম। কিন্তু এখানে এসে অবাক। এক হাজার থ্রিপিস দাম করছে ৩০০০ হাজার টাকা। ঘুরে ফিরে মেয়েদের জন্য দুটি থ্রিপিস কিনলাম।

সার্বিক বিষয়ে নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন বলেন, শবে রবাতের পর থেকে ঈদের পোশাক বিক্রি শুরু হয়। এবার এখনো সেভাবে বিক্রি শুরু হয়নি। তবে গজ কাপড় ও থ্রিপিস বিক্রি হচ্ছে। কারণ এগুলো দর্জিকে দিতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রত্যেক ঈদেই ঘরে পড়া ও সাধারণ পার্টিতে ঘুরে বেড়ানো পোশাকই বেশি বিক্রি হয়। আমরা সেই চিন্তা করেই পোশাক উৎপাদন করেছি। ভারত, পাকিস্তান এবং কাশ্মীর থেকে আমদানি করেছি। তবে এবার এসব পোশাকের দাম বেড়েছে শতকরা ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ। গত বছর ১ হাজার টাকায় যে থ্রিপিস বিক্রি করেছি। এবছর সেই থ্রিপিস বিক্রি করছি ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকায়। আমাদের কোন উপায় নেই, কারণ ডলারের মূল্য বৃদ্ধি হয়েছে। উৎপাদন খরচও বেড়েছে।

আশা করছি এবার ঠিকভাবে ব্যবসা করতে পারলে করোনা ও সরকারের বিধিনিষেধের কারণে গত ৩ বছর যে লোকসান হয়েছে, সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবো দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন

নিউমার্কেট এ ব্যবসায়ী আরও বলেন, এবারের ঈদে আমাদের গত তিন বছরের মুনাফার টাকা তুলতে হবে। আমরা সেইভাবে দোকান পরিচালনা করছি। আশা করছি- এ বছর ভালো বিক্রি হবে।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সব কিছুর দাম বেড়েছে। এ কারণে ঈদেও পোশাকের দাম বেড়েছে। এবার ঠিকভাবে ব্যবসা করতে পারলে আশা করছি করোনা ও সরকারের বিধিনিষেধের কারণে গত ৩ বছর যে লোকসান হয়েছে। সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবো।

রাজধানীর মালিবাগ বাজারের আয়েশা শপিং কমপ্লেক্সের দোকানদার সুলতান মাহমুদ বলেন, ৮০০/১০০০ টাকার পাঞ্জাবি এবছর কেনা ও উৎপাদন খরচই ১২০০ কিংবা ১৩০০ টাকা। আমরা বিক্রি করছি ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকায়। আর মাঝারি মানের ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকার পাঞ্জাবি এবার বিক্রি করছি ২৬০০ থেকে ২৮০০ টাকায়। আর ৪০০০ টাকার পাঞ্জাবি সাড়ে ৫০০০ হাজার টাকা বিক্রি করছি। তা না হলে আমাদের লাভ থাকবে না।

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: সিসা হোস্ট