1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : editor :
  3. [email protected] : moshiur :
সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৪০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ:
সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৭৩ হাজার শূন্যপদে নিয়োগের নির্দেশ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের ছুটি ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত কর ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন প্রকল্পে লাখ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতি আরও যত মামলায় দণ্ড আছে তারেক রহমানের লেভেল ক্রসিংয়ে চলছেই ঝুঁকিপূর্ণ ইউটার্ন, বন্ধ করবে কে? বাংলাদেশিদের অস্ত্রোপচার বাতিলে কলকাতাজুড়ে হাসপাতালে হাহাকার গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৪৭ ফিলিস্তিনি শোনা সাক্ষীর ভিত্তিতে বিচারিক আদালত রায় দিয়েছিলেন : হাইকোর্ট বেসরকারিতে ৭৬ শতাংশ আসন ফাঁকা রেখে শেষ হলো স্কুলে ভর্তির আবেদন একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা : তারেক রহমান-বাবরসহ সব আসামি খালাস

সাদা রাতের শহরে

আন্তর্জাতিক রিপোর্ট :
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৩
  • ৪৩০ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

ডোমোডেডোভো এয়ারপোর্ট (রাশিয়া) থেকে: ৩২ হাজার ফুট উচ্চতায় বসে অনেক কিছুই মনে আসে। তবে সবথেকে বেশি করে যা মনে হয়, তা হলো নিজের স্বপ্নগুলো।

 

রাশিয়ার নিউ জেনারেশন প্রোগ্রামে অংশ নিতে আগামী চার দিনের জন্য গন্তব্য নির্ধারণ হয়েছে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে। ঢাকা থেকে যখন রওনা হয়েছি, তখনও বেশ শান্ত ছিল সবকিছু। কিন্তু বাহরাইন এয়ারপোর্ট থেকে যখন রাশিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম, মনের ভেতর উত্তেজনা শুরু হলো তখন থেকেই। সৌভাগ্যক্রমে জানালার পাশে সিট হওয়ায় রাতের আকাশে মেঘ দেখা ছাড়া আর কোন কাজ নেই। সিটের সামনে থাকা এলসিডি মনিটরে যেসব সিনেমা আর কার্টুন দেখার অপশন রয়েছে, তারও সবই প্রায় দেখা। তাই পাশের সিটে বসে থাকা ভদ্রমহিলার দিকে এক নজর তাকিয়ে আবার চোখ ফেরালাম জানালা দিয়ে বাইরে।

বিমান যখন রাশিয়ার আকাশে উড়তে শুরু করেছে তখন চোখটা একটু বুজে এসেছিল। আমি আমার জানালার পাশে বসা। কেবিন ক্রু অ্যালিনা এসে মিষ্টি হাসির সঙ্গে জানিয়ে দিয়ে গেলো- কিছুক্ষণের মধ্যেই ল্যান্ড করবো আমরা। সুন্দরী এই লম্বা পায়ের তরুণীর গায়ের রঙ ফর্সা। ছোট ছোট চুলগুলো ঘন কালো আর চোখজোড়া ঠিক আকাশ- সমুদ্রের মাঝামাঝি নীলে ভরপুর। তার মিষ্টি ও আন্তরিক হাসি যে কারো মন ভালো করাতে প্রস্তুত। অন্তত প্রেম প্রত্যাশী পুরুষদের তো অবশ্যয়!

তাকিয়ে দেখলাম পাশের ভদ্রমহিলা কম্বলে মুখ ঢাকা দিয়ে বসে বসে ঘুমাচ্ছেন। সুন্দরতম বিমানবালার ওমন মিষ্টি হাসামাখা মুখ দেখার পর এমন কালো কম্বলে ঢাকা মুখ দেখতে কারই বা ভালো লাগে! আর এই ভদ্র মহিলার সঙ্গে কথা হয়নি এক বাক্যও। সেই যে উঠে বসে কম্বল মুড়ি দিয়েছেন, আর কোনদিকে দেখাদেখি নেই।

পেছনের রো-তে বসে আছেন তিন বাংলাদেশি। দেশ টিভির উপস্থাপক বাবলি আক্তার, ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশের (ইউএনবি) প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম এবং চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের সংবাদকর্মী শারাবান তহুরা জিনিয়া। তারাও আমার সঙ্গে অংশ নিচ্ছেন নিউ জেনারেশন প্রোগ্রামে। জিনিয়া আপু ঘুম ভাঙার পর মোবাইলে ছবি তুলছেন বিমানের জানালা দিয়ে নতুন আবিষ্কার করতে যাওয়া এই শহরটার। নিচে তাকিয়ে দেখছেন মুগ্ধ দৃষ্টিতে। তার সেই দৃষ্টিতে লোভ জাগলো আমারও। একটু রোমাঞ্চিত হয়েই তাকালাম বাইরে। বাকি দুজন তখনও ঘুমোচ্ছে।

দৃষ্টি ফিরিয়ে জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম। ভোরের সে স্নিগ্ধ দৃশ্য সত্যিই মনোহর। সূর্যের লাল আভায় ভরে আছে পুরোটা দিক। মেঘের উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে আমাদের বিমান। মাঝে মাঝে এক আকাশ মেঘের নিচে দেখা মেলে আরও এক আকাশ মেঘের। ঠিক যেন সাত আসমানের মধ্যে দুই আসমান উপরে আমরা। এক আসমান উপরে নিজেকে আবিষ্কার করেছিলাম সাজেকে। তুলো তুলো মেঘ যখন চারিদিকটা ভরিয়ে দিয়েছিল, তখন মেঘের স্তুপে দেখা যাচ্ছিল না নিচের আর কিছুই। মনে হয়েছিল ঠিক যেন দাঁড়িয়ে আছি এক আসমান উপরে। আজও যেন তেমন একটা অনুভূতি। তবে তা আরও বেশি।

কিছুক্ষণের মধ্যেই ল্যান্ডিংয়ের জন্য অ্যানাউন্স করলেন ক্যাপ্টেন। সকলের সঙ্গে নির্দিষ্ট সিটে বসতে বললেন কেবিন ক্রু দেরও। আমি অ্যালিনার দিকে তাকালাম। না তাকিয়ে আসলে উপায় ছিল না। এমন সুন্দরীর দিকে না তাকানো অন্যায়। পুরো বিমানে আর কেউ তার মতো করে নজর কাড়েনি। আর তাছাড়া তার সিটটা যখন আমাদের সামনেই, তখন বাধ্য হয়ে হয়েও তাকাতে হয়। আমার তখন শুধু মনে হলো কবি জয় গোস্বামী যেনো ঠিক এমন একটি মূহূর্তের কথা ভেবেই লিখেছিলেন- “চোখ, চলে গিয়েছিল, অন্যের প্রেমিকা, তার পায়ে। / যখন, অসাবধানে, সামান্যই উঠে গেছে শাড়ি—/ বাইরে নেমেছে বৃষ্টি। লণ্ঠন নামানো আছে টেবিলের নীচে, অন্ধকারে/ মাঝে মাঝে ভেসে উঠেছে লুকোনো পায়ের ফর্সা আভা…/ অন্যায় চোখের নয়। না তাকিয়ে তার কোনো উপায় ছিল না। ”

বিমান যখন ৫ হাজার ফুট উচ্চতায় তখন ভোরের হালকা আলোতে খুব সুন্দর করে চোখে পড়লো নিচের সারি সারি ওক আর পাইন গাছের বন। সে বন যেন শেষ হয় না। মাঝে মাঝে বনের মধ্য দিয়ে এঁকেবেঁকে চলে গেছে সুন্দর ছিমছাম রাস্তা। আর কছুক্ষণ পর ও রাস্তায় পা রাখবো আমরাও। আমি নিচে তাকিয়ে বনগুলো দেখছিলাম। বনগুলো এতই ঘন যে মনে হচ্ছে তারা তাদের ছায়া দিয়ে পৃথিবীকে ঢেকে দিয়েছে। অথচ পৃথিবীর তাতে কোন রাগ নেই, কোন আপত্তি নেই। বরং সে যেনো খুব ভালোবেসেই গ্রহণ করেছে তা। পৃথিবীর সেই ভালোবাসা গায়ে মেখেই আমি রাশিয়ায় প্রবেশ করছি। শুধু একটু সময়ের অপেক্ষা।

এই রাশিয়া নিয়ে কত স্বপ্ন, কত কৌতূহল। রাশিয়া পরিচিত তার সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং সংস্কৃতির জন্য। এটি একটি প্রাচীন দেশ যা ৯ম শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। রাশিয়ান অর্থনীতি বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে একটি। এছাড়া এটি একটি শিল্পোন্নত দেশ যা তেল, গ্যাস, ধাতু এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদের জন্য বিখ্যাত। এছাড়া রাশিয়া তার বিস্তৃত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের জন্যও পরিচিত। এটিতে বিস্তীর্ণ বন, তুষার-ঢাকা পর্বতমালা, এবং বরফের সমুদ্র রয়েছে। রাশিয়ার কিছু জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যের মধ্যে রয়েছে মস্কো, সেন্ট পিটার্সবার্গ, ক্রিমিয়া এবং সাইবেরিয়া। রাশিয়া একটি বৈচিত্র্যময় দেশ যা বিভিন্ন সংস্কৃতি এবং ভাষার লোকদের আবাসস্থল। এটি একটি প্রাণবন্ত এবং আকর্ষণীয় দেশ যা পর্যটকদের জন্যও। রাশিয়ান মেয়েরা বিখ্যাত তাদের লম্বা পায়ের জন্য। আর বলা হয়ে থাকে যে, জান্নাতি হুরদের সৌন্দর্য্যের বিবরণের একটা বড় অংশও এসেছে এই রাশিয়ান মেয়েদের সৌন্দর্যের কাছ থেকেই। সেই স্বপ্নের দেশে পা রাখতে যাচ্ছি। পা রাখতে যাচ্ছি ২০১৮ সালের বিশ্বকাপে বারবার দেখা সেই রেড স্কয়ারের দেশে।

সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে আমাদের বিমান ল্যান্ড করলো রাশিয়ার ডোমোডেডোভো এয়ারপোর্টে। কুয়াশা নেই একটুও, স্নিগ্ধ পরিবেশ চারপাশে। পাতাঝরা ওক আর পাইন গাছের সাথে সাথে আমাদের স্বাগত জানালো রাত জেগে দাঁড়িয়ে থাকা এস-সেভেন এয়ারলাইন্সের একঝাক সবুজ এয়ারবাস। বিমানের জানালা দিয়ে সে দৃশ্য দেখলে মনের মধ্যে সুখ অনুভব হয়। আলাদা ভালোলাগা কাজ করে, আনন্দ জাগে। সেই আনন্দ আর উত্তেজনা নিয়েই বিমান থেকে পা রাখলাম রাশিয়ার মাটিতে। পা রাখলাম সাদা রাতের শহরে।

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: সিসা হোস্ট