সকালে সূর্যের দেখা মিললেও হাড়কাঁপানো শীতে ভোগান্তি পোহাচ্ছে উত্তরের হিমালয়কন্যা পঞ্চগড়। শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে সকাল ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়ার তথ্যানুযায়ী, গত ১৬ ডিসেম্বর থেকেই পঞ্চগড়ে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে। চলতি সপ্তাহে ১০ থেকে ৯ ডিগ্রির তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৬ দিন। অপর এক দিন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সপ্তাহজুড়েই এ জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে বরফঝরা শীত উপেক্ষা করে জীবিকার তাগিদে হিম সকালেই কাজে যেতে দেখা যায় এ অঞ্চলের পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিক, ভ্যানচালক, দিনমজুর থেকে নিম্ন আয়ের বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষদের। পাথর শ্রমিকরা নদীতে বরফ জলের মধ্যেই নেমে পড়েন কাজে। এ আয়ের মধ্য দিয়ে চলে তাদের পরিবারের ভরণ-পোষণ।
মহানন্দা ও ডাহুক নদীতে পাথর তোলা ইরফান, আজগর ও মোতালেবসহ কয়েকজন পাথর শ্রমিক জানান, নদীর পানি বরফের মতো ঠান্ডা। কিন্তু কী করার, পাথর তোলা ছাড়া আর কোনো কাজ নেই। এ পাথর তুলেই জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। তাই পেটের তাগিদেই বরফ জলে নেমে পাথর তুলতে হচ্ছে।
চা শ্রমিক আরশেদ, সাইফুল, জামালসহ কয়েকজন বলেন, এখন আগের মতো কুয়াশা নেই। কিন্তু কনকনে শীত। ভোরে প্রচণ্ড হিম-শীতের মধ্যেই তারা চা বাগানে পাতা তুলতে এসে হাত-পা অবশ হয়ে আসছে। কিন্তু কী করবো, জীবিকার তাগিদে কাজ করতে হচ্ছে।
এদিকে শীতের কারণে বাড়তে শুরু করেছে বিভিন্ন শীতজনিত রোগব্যাধি। জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোতে আউটডোরে ঠান্ডাজনিত রোগী বাড়তে শুরু করেছে। চিকিৎসার পাশাপাশি শীতজনিত রোগ থেকে নিরাময় থাকতে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন চিকিৎসকরা।
জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর এ জেলায় শীত বেশি থাকে। এবারও শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করেছি। প্রকৃত গরিব, অসহায় ও শীতার্তদের মধ্যে এসব শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে।
Leave a Reply