1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : editor :
  3. [email protected] : moshiur :
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১৩ পূর্বাহ্ন

কমে যাচ্ছে গ্যাসের মজুত, অবশিষ্ট আছে ৩২ শতাংশ!

মহানগর রিপোর্ট :
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ১৫২ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

• উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের পরিমাণ ২৯ টিসিএফ
• উত্তোলন করা হয়েছে ২০ টিসিএফ গ্যাস
• কমে যাচ্ছে শেভরনের উৎপাদন
• গত বছরের চেয়ে কমেছে ৪% উৎপাদ

সম্প্রতি সরকারের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের হাইড্রোকার্বন ইউনিটের প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশে উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের পরিমাণ ২৯ দশমিক ৯২৬৫ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ)। এর মধ্যে গত জুন পর্যন্ত উত্তোলন করা হয়েছে ২০ দশমিক ৩৫৩৪ টিসিএফ, যা মোট মজুতের ৬৮ শতাংশ। ওই সময় দেশে অবশিষ্ট গ্যাস মজুত ছিল ৯ দশমিক ৫৭৩১ টিসিএফ বা ৩২ শতাংশ।

ভোলা নর্থ ২নং কূপে গ্যাসের সন্ধান মিলেছে। এখান থেকে দৈনিক ২০ মিলিয়ন বা ২ কোটি ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা যাবে / ফাইল ছবি

দেশে উত্তোলনযোগ্য গ্যাস মজুতের পরিমাণ ২৯ দশমিক ৯২৬৫ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ)। এর মধ্যে গত জুন পর্যন্ত উত্তোলন করা হয়েছে ২০ দশমিক ৩৫৩৪ টিসিএফ, যা মজুতের ৬৮ শতাংশ। ওই সময় দেশে অবশিষ্ট গ্যাস মজুত ছিল ৯ দশমিক ৫৭৩১ টিসিএফ বা ৩২ শতাংশ

অন্যদিকে, সিলেট গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানির অধীন পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্রে মজুত ছিল সাত দশমিক ৩৩ টিসিএফ। এর মধ্যে উত্তোলন করা হয়েছে মাত্র এক দশমিক ৮৫৫৯ টিসিএফ বা ২৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ। অবশিষ্ট রয়েছে পাঁচ দশমিক ১৭৭১ টিসিএফ গ্যাস।

হাইড্রোকার্বন ইউনিটের তথ্য মতে, বর্তমানে দেশে সর্বোচ্চ গ্যাস মজুত রয়েছে রশিদপুর, তিতাস ও কৈলাসটিলায়। এ তিন ক্ষেত্রে গ্যাস মজুতের পরিমাণ যথাক্রমে দুই দশমিক ৪৩১৫ টিসিএফ, ২ দশমিক ২৫৬৭ টিসিএফ ও দুই দশমিক ০৮৩৯ টিসিএফ। এর মধ্যে তিতাস বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডসের অধীনে এবং রশিদপুর ও কৈলাসটিলা সিলেট গ্যাস ফিল্ডসের অধীনে রয়েছে।

২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে গ্যাস উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৬৪৫ দশমিক ৬১৪ মিলিয়ন ঘনমিটার। এর আগের ২০২১-২২ অর্থবছরে গ্যাস উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ২৩ হাজার ৭৮৩ দশমিক ১০৪ মিলিয়ন ঘনমিটার। অর্থাৎ গত অর্থবছর গ্যাস উৎপাদন কমেছে এক হাজার ১৩৭ দশমিক ৬৯ মিলিয়ন ঘনমিটার বা চার দশমিক ৭৮ শতাংশ

বর্তমানে বাপেক্সের অধীনে গ্যাস ক্ষেত্র রয়েছে আটটি। এগুলোতে গ্যাস মজুত ছিল এক দশমিক ৪৬০৮ টিসিএফ, যার মধ্যে শূন্য দশমিক ৬০৬৬ টিসিএফ উত্তোলন করা হয়েছে। অবশিষ্ট রয়েছে শূন্য দশমিক ৯০০২ টিসিএফ।

পেট্রোবাংলার তথ্য মতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে গ্যাস উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৬৪৫ দশমিক ৬১৪ মিলিয়ন ঘনমিটার। এর আগের ২০২১-২২ অর্থবছরে গ্যাস উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ২৩ হাজার ৭৮৩ দশমিক ১০৪ মিলিয়ন ঘনমিটার। অর্থাৎ গত অর্থবছর গ্যাস উৎপাদন কমেছে এক হাজার ১৩৭ দশমিক ৬৯ মিলিয়ন ঘনমিটার বা চার দশমিক ৭৮ শতাংশ।

কমে যাচ্ছে শেভরনের মজুত

দেশীয় কোম্পানির বিপরীতে দেশে সবচেয়ে বেশি গ্যাস সরবরাহ করছে মার্কিন কোম্পানি শেভরন। কোম্পানিটির অধীন তিনটি ক্ষেত্রে গ্যাস মজুত ছিল সাত দশমিক ৬১২৭ টিসিএফ। এর মধ্যে সাত দশমিক ৫৪২৩ টিসিএফ গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছে। অর্থাৎ শেভরনের অধীন ক্ষেত্রগুলো থেকে ৯৯ শতাংশের বেশি গ্যাস মজুত শেষ। বর্তমানে কোম্পানিটির অধীন জালালাবাদ ক্ষেত্রে কোনো গ্যাস মজুত নেই। মৌলভীবাজার ও বিবিয়ানায় সামান্য গ্যাস মজুত রয়েছে।

বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র। দেশে দৈনিক গ্যাস উৎপাদনের প্রায় ৪৫ শতাংশ আসে এখান থেকে। বিবিয়ানায়ও সামান্য গ্যাস মজুত আছে / ফাইল ছবি

স্থানীয় সরবরাহের তুলনায় গ্রিডে বাড়তি গ্যাস দেয়ার ফলে শেভরনের মজুত দিনদিন কমে আসছে। গ্যাস সরবরাহ বর্তমান মাত্রায় অব্যাহত থাকলে আগামী দু-তিন বছরের মধ্যে শেভরনের মজুত শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

স্থানীয় কোম্পানির পরিচালনাধীন গ্যাসক্ষেত্রসমূহে মোট মজুত আছে অর্ধেকেরও বেশি। কিন্তু সে তুলনায় তারা গ্যাস উত্তোলন ও সরবরাহের মাত্রা বাড়াতে পারেনি। শেভরনের ক্ষেত্রগুলো থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হলে ঘাটতি পূরণের জন্য স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো আদৌ প্রস্তুত কি না, সে নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।

কী বলছেন সংশ্লিষ্টরা

শেভরনসহ স্থানীয় গ্যাসক্ষেত্রগুলোর মজুত কমে আসা ভবিষ্যৎ বিপর্যয়ের ইঙ্গিত প্রকাশ করে। চাহিদা অনুযায়ী যদি গ্যাসের সরবরাহ না বাড়ানো যায় তাহলে ব্যাপক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে গ্যাস খাত। যদিও সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, নতুন কূপ খনন ও ওয়ার্কওভারের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানো যেতে পারে।

পেট্রোবাংলার পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মাইনস) মো. কামরুজ্জামান খান বলেন, গ্যাসের সরবরাহ বাড়াতে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ৪৬টি কূপ খননের পরিকল্পনা ইতোমধ্যে কার্যকর করা হচ্ছে। এতে করে প্রায় ৬০ কোটি ঘনফুট গ্যাস গ্রিডে যুক্ত হবে। সিলেট, ভোলা, বিয়ানীবাজারের কূপগুলো থেকে গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে। পরিকল্পনার আওতায় সামনে গ্যাসের উৎপাদন ও সরবরাহের পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পাবে।

জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় দীর্ঘদিন ধরে সাগরে অনুসন্ধান চালানোর কথা বলে আসছেন বিশেষজ্ঞরা / ফাইল ছবি

সম্প্রতি এক ব্রিফিংয়ে বিদ্যুৎ,জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, গত আট মাসে আমরা প্রায় ১০০ এমএমসিএফ গ্যাস নতুনভাবে আনার ব্যবস্থা করেছি। আমরা আশাবাদী, ২০২৪ ও ২০২৫ সালের মধ্যে আরো ৫০০ এমএমসিএফ গ্যাস সিস্টেমে দিতে পারব।

শেভরন ও বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের সম্ভাবনা নিয়ে তিনি বলেন, বিবিয়ানার এক্সটেনশনে আমরা আশাবাদী। ২০২৭ সালের পর থেকে আমাদের একটা ভালো সম্ভাবনা আছে। এরই মধ্যে আমরা সার্ভের রেজাল্ট দেখেছি। সেখানে শেভরন কাজ করছে। ২০২৭ সালের পর আমরা একটা ভালো অবস্থানে যেতে পারব।

অনুসন্ধানের কাজটা উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়নি : বদরুল ইমাম 

গ্যাসসহ জ্বালানি সংকটের প্রধান কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা ‘দেশীয় সম্পদের অনুসন্ধানে যথাযথ গুরুত্ব প্রদান না করা’-কে চিহ্নিত করে আসছেন। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বদরুল ইমাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের দেশের জ্বালানি খাতের যে সংকট, তার বিকল্পে আমরা কখনোই নজর দিই না। বিকল্পটা হলো, নিজ দেশের সম্পদের দিকে নজর দেয়া। নির্দিষ্ট একটা সময়ের মধ্যে শেভরনের সরবরাহ কমে আসবে। সেক্ষেত্রে যদি আমাদের স্থানীয় সম্পদ অনুসন্ধান ও উত্তোলনে নজর দেয়া না হয় তাহলে পরিস্থিতি কঠিন হয়ে পড়বে।

‘বাংলাদেশের মাটির নিচে প্রচুর সম্পদ রয়েছে। বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোও নিশ্চিত করেছে যে দেশে ব্যাপক পরিমাণ গ্যাসের সম্ভাবনা রয়েছে। সাগরের তলদেশে জ্বালানির সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আমরা তার যথাযথ ব্যবহার করতে পারছি না। গ্যাস নিয়ে যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করে, তারা সবসময়ই বলে আসছে গ্যাস আবিষ্কারের জন্য বঙ্গোপসাগর একটি উৎকৃষ্ট জায়গা। কিন্তু আমাদের দেশে অনুসন্ধানের হারটা খুবই নিম্নগামী। অনুসন্ধানের কাজটা কেউ উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারেনি।’

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: সিসা হোস্ট