রাজশাহী নগরীর এক পাশজুড়ে বিস্তৃত পদ্মার পাড়ের প্রায় ১২ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে গড়ে উঠেছে বিনোদন কেন্দ্র। এখানে শুধু স্থানীয় জনগণই নয়, নয়নাভিরাম এ পরিবেশের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে দূর-দূরান্ত থেকে আসছেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরাও।
শীতের সকাল কিংবা পড়ন্ত বিকেল সব সময় ভিড় জমে থাকে এখানে। সূর্য কিংবা চাঁদের প্রতিবিম্ব যখন পানিতে পড়ে, তখন এক অসাধারণ দৃশ্যের অবতারণা হয়। নদীর তীর ঘেঁষেই আবার কোথাও কোথাও রয়েছে মনোরম সবুজ মাঠ। এমনকি পদ্মার কোল ঘেঁষে বিভিন্ন পয়েন্ট জুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে সড়ক পথও।
নগরীর বুলনপুর থেকে শুরু করে বড়কুঠি ও পঞ্চবটি হয়ে সাতবাড়িয়া এলাকা পর্যন্ত এসব পয়েন্ট বিস্তৃত। এসব পয়েন্টে থাকা বাঁধের সড়কে হেঁটে কিংবা মোটরবাইকে বেশ আরামেই ঘুরে আসা যায় পদ্মার তীর।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক সংলগ্ন বুলনপুর আইবাঁধ এবং পঞ্চবটি আইবাঁধ এলাকাতেই দর্শনার্থীদের আনাগোনা বেশি। বুলনপুর এলাকার স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, কয়েক বছর আগে এ বাঁধটি করা হয়েছে। ইংরেজি ‘আই’ অক্ষরের আদলে হওয়ায় স্থানীয়দের কাছে এগুলো আইবাঁধ নামেই বেশি পরিচিত। হাইটেক পার্ক সংলগ্ন বাঁধটি হাইটেক আইবাঁধ নামে পরিচিতি পেয়েছে।
এখানে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীরা বলেন, দারুণ সুন্দর পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে রাজশাহীর পদ্মা নদীর পাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকা। তবে আরও কিছু সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা হলে এটিই হয়ে উঠতে পারে রাজশাহীর প্রধান বিনোদন কেন্দ্র।
নওগাঁ থেকে হাইটেক পার্ক আইবাঁধ এলাকায় বেড়াতে আসা তারেক হাসান বলেন, রাজশাহী এসেছিলাম একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে। এখানে এসে শুনলাম আইবাঁধের কথা। তাই চলে এলাম। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত থেকে যে দারুণ পরিবেশ ও প্রকৃতি উপভোগ করলাম, সেটি সত্যিই দারুণ ছিল। আমাদের মতো সাধারণ জনগণের কাছে বিনোদন কেন্দ্র খুব কম। এমন একটি স্থান হওয়াতে আমাদের জন্য ভালো হয়েছে।
এখনও অত্র এলাকায় পর্যটক ও দর্শনার্থীবান্ধব বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধার প্রয়োজন বলে মনে করেন আরেক দর্শনার্থী নাসিমা আক্তার। তিনি বলেন, পদ্মার কিনারা জুড়ে যদি ভালো আবাসিক হোটেল থাকে, তাহলে রাজশাহীর বাইরে থেকে যারা আসবেন, তারা রাতে থাকতে পারবেন। এমন কিছু পরিকল্পনা নিয়ে স্থানগুলো সাজানো হলে এখানে একটি ভালো পর্যটন কেন্দ্র হতে পারে।
দর্শনার্থীদের এমন চাহিদার বিষয়টি মাথায় রেখে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক) তাদের সেবার পরিধি বাড়িয়ে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান রাসিক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।
Leave a Reply