1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : editor :
  3. [email protected] : moshiur :
শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ১০:৪৯ অপরাহ্ন

এবার বাড়ল ঋণের সুদহার

মহানগর রিপোর্ট :
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৩
  • ১১১ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

নীতি সুদহারের পর এবার ঋণের সুদহার বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অনিয়ন্ত্রিত মূল্যস্ফীতি সামাল দিতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এখন থেকে ‘এসএমএআরটি’ বা ‘স্মার্ট’ রেট বাড়িয়ে সাড়ে ৩ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ঋণের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্মার্টের সঙ্গে সর্বোচ্চ ২ শতাংশের বদলে সর্বোচ্চ আড়াই শতাংশ মার্জিন যোগ করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবরর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে দেশের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতির উপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে— এমন পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতি কমাতে সুদহার বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্মার্টের সঙ্গে ৩ শতাংশের জায়গায় সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৫ শতাংশ মার্জিন যোগ করতে হবে। এছাড়া প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ঋণের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্মার্টের সঙ্গে সর্বোচ্চ ২ শতাংশের স্থলে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৫ শতাংশ মার্জিন যোগ করে সুদহার নির্ধারণ করতে হবে। তবে কৃষি ও পল্লী ঋণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ মার্জিন ২ শতাংশ অপরিবর্তিত থাকবে।

যে পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করে এখন ঋণের সুদহার নির্ধারিত হচ্ছে, তা হলো ‘এসএমএআরটি’ বা ‘স্মার্ট এসএমএআরটি’ বা ‘স্মার্ট’ তথা– সিক্স মান্থ মুভিং এভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল হিসেবে পরিচিত। প্রতি মাসের শুরুতে এই হার জানিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি বছরের জুলাইয়ে ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের ৬ মাসের গড় সুদহার (স্মার্ট রেট) ছিল ৭ দশমিক ১০ শতাংশ, আগস্টে হয় ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ। সবশেষ সেপ্টেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ২০ শতাংশে।

নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসের ‘স্মার্ট’ হারের সঙ্গে সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ শতাংশ হারে মার্জিন বা সুদ যোগ করে অক্টোবর মাসে ঋণ দিতে পারবে ব্যাংক। সেই হিসেবে, চলতি অক্টোবর মাসে ব্যাংক থেকে বড় অংকের ঋণে সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ সুদ দিতে হবে। প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ঋণের সুদহার হবে ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ। তবে কৃষি ও পল্লী ঋণের ক্ষেত্রে আগের মতো সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ২০ শতাংশ সুদ দিতে হবে।

এর আগে বুধবার (৪ অক্টোবর) নীতি সুদহার বা রেপো রেট একবারে দশমিক ৭৫ শতাংশ পয়েন্ট বাড়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতদিন নীতি সুদহার ছিল ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। বাড়ানোর পর আজ থেকে নতুন নীতি সুদহার বা রেপো রেট হয়েছে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচ্চপর্যায়ের সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। এর ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো যে টাকা ধার করে, তার সুদহার বাড়বে। পাশাপাশি ব্যাংকগুলোতে রাখা আমানত ও ব্যাংকঋণের সুদহারও বাড়বে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক আরও সংকোচনমূলক মুদ্রা সরবরাহের পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিল।

মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির জন্য এতদিন মূলত ডলারের মূল্যবৃদ্ধিকে দায়ী করে আসছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি কমানোর চেষ্টা করছে। সুদের হার বাড়লে মানুষ সাধারণত ব্যাংকে আমানত রাখতে উৎসাহিত হবে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে, গত জুন ও জুলাই মাসে দেশে মূল্যস্ফীতি সামান্য কমার পর আগস্ট মাসে তা আবার বেড়েছে। আগস্টে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশে। এ সময় দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হঠাৎ অনেকটা বেড়ে গেছে। খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার উঠেছিল ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশে। যা বিগত বছরে কখনও হয়নি। এর আগের মাসে এই খাতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৭৬ শতাংশ। অর্থাৎ আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ২.৭৮ শতাংশ।

এ অবস্থার সমাধান খুঁজতে অর্থনীতিবিদ ও আর্থিক খাতের বিশেষজ্ঞসহ খাত সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ নিচ্ছে নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। তারই অংশ হিসেবে বুধবার বিকেলে আলোচনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়েছিলেন সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান।

বৈঠকে সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান চলমান অর্থনীতির সংকট সমাধানে বিভিন্ন পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, দেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকটে বড়দের ঋণ কমিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি নীতি সুদহার বাড়িয়ে বাজার থেকে টাকা তুলে নেওয়ার জরুরি। একইসঙ্গে মূল্যস্ফীতি কমাতে ‘সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও রাজস্ব নীতি’ গ্রহণ এবং খরচ কমানো দরকার।

এ মুহূর্তে প্রবৃদ্ধির চেয়ে সামষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীলতার জন্য বড় বিষয় বলেও উল্লেখ করেন সাবেক এই গভর্নর।

মূল্যস্ফীতির চাপ, ডলারের দামের অস্থিতিশীলতা এবং লাগামহীন খেলাপি ঋণ এখন অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এমন পরিস্থিতিতে দেশে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফেরাতে সবার আগে মূল্যস্ফীতি কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। তার মতে, মূল্যস্ফীতি কমাতে পারলে এমনিই ডলার বাজার স্থিতিশীল হয়ে যাবে। গত ২৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়োজিত এক বৈঠকে এসব পরামর্শ দেন এ অর্থনীতিবিদ।

এর আগে গত ২১ সেপ্টেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। বৈঠকে নতুন করে টাকা ছাপিয়ে সরকারকে ঋণ না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি।

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: সিসা হোস্ট