1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : editor :
  3. [email protected] : moshiur :
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১৭ পূর্বাহ্ন

‘আমার স্ত্রী তো আন্দোলনে যায়নি, তাকে কেন গুলি করে মারল?’

মহানগর রিপোর্ট :
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৩
  • ১৭১ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

‘আমার স্ত্রী তো একজন সাধারণ গার্মেন্টস কর্মী ছিল। সে তো আন্দোলনে যায়নি। তার তো কোনো দোষ ছিল না। তাকে কেন পুলিশ গুলি করে মারল?’ কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন গাজীপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত গার্মেন্টস কর্মী আঞ্জুয়ারা খাতুনের স্বামী জামাল বাদশা।

কাঁদতে কাঁদতে জামাল বাদশা বলেন, ‘আমার স্ত্রী আঞ্জুয়ারা ইসলাম গার্মেন্টসে চাকরি করত। আমি আলাদা একটি গার্মেন্টসে চাকরি করি। গতকাল সরকার বেতন বাড়ালেও শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ হয়। আজ সকালে আবারও বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকরা আন্দোলনে নামে। এর মধ্যে গার্মেন্টস ছুটি ঘোষণা করে। আঞ্জুয়ারা গার্মেন্টস থেকে বের হয়ে চৌরাস্তার জরুন এলাকায় এলে পুলিশ গুলি করে।’

dhakapost
নিহত আঞ্জুয়ারার কর্মস্থলের পরিচয়পত্র

তিনি বলেন, ‘সে বাসায় আসার কোনো গলি খুঁজে না পাওয়ায় এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। পরে পুলিশের গুলি তার মাথায় এসে লাগে। ঘটনাস্থলে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল সে। সেখান থেকে আঞ্জুয়ারাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

জানা গেছে, গতকাল মজুরি বোর্ড ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি প্রত্যাখ্যান করে আজ (বুধবার) সকালে বিক্ষোভে নামেন গাজীপুরের কোনাবাড়ি ও জরুন এলাকার স্ট্যান্ডার্ড গার্মেন্টস লিমিটেড, রিপন নিটওয়্যার লিমিটেড, ইসলাম গার্মেন্টস ও বেস্টঅল সোয়েটারসহ আরও কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা। তারা কাজে যোগ না দিয়ে কারখানার সামনেই বিক্ষোভ শুরু করলে কারখানা ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

dhakapost
গাজীপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত গার্মেন্টস কর্মী আঞ্জুয়ারা খাতুনের স্বামী জামাল বাদশা ও স্বজনেরা / ছবি- সংগৃহীত

পরে সকাল ৮টার দিকে কাশিমপুরের জরুন মোড়ের সামনে একত্রিত হয়ে হাতে ইট ও লাঠি-সোঁটা নিয়ে মিছিল করতে থাকেন শ্রমিকরা। একপর্যায়ে বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে কাঠ ও টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেন তারা। এছাড়া, বিভিন্ন যানবাহন ভাঙচুরের চেষ্টা করেন শ্রমিকরা। একপর্যায়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ। পরে ছত্রভঙ্গ হয়ে রওশন মার্কেট হয়ে হাতিমারার দিকে এগিয়ে যায় উত্তেজিত শ্রমিকরা।

গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আশরাফ উদ্দিন জানান, শ্রমিকদের শান্ত থাকতে অনুরোধ করা হলেও শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশের ওপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এক পর্যায়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে টিয়ারশেল ছুড়লে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

dhakapost
কোনাবাড়ী এলাকায় দুপুর থেকে ফের আন্দোলনে নেমেছে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা (ছবি : সংগৃহীত)

পরে দুপুর ১২টা ও সাড়ে ১২টার দিকে দুজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মধ্যে একজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেন, সকাল থেকেই শ্রমিকরা আন্দোলন করছিল। আমরা তাদের বলেছিলাম ফ্যাক্টরিতে ঢুকতে, প্রয়োজনে কাজ বন্ধ রাখতে আর কারখানায় ভাঙচুর না চালাতে। কিন্তু তারা আমাদের নির্দেশনা না শুনে অন্য কারখানার শ্রমিকদের আন্দোলনে নামানোর চেষ্টা করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে পুলিশ টিয়ার শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: সিসা হোস্ট