গভীর পানিতে তলিয়ে গেছে ধান। তাই বাধ্য হয়ে ডুব দিয়ে দিয়ে পানির নিচে তলিয়ে থাকা ধান যতটা সম্ভব কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন নদী তীরবর্তী বিপন্ন কৃষকরা।
তবে জীবন বাজি রেখে কৃষকরা পানির নিচ থেকে যে পরিমাণ ধান তুলে আনছেন, তলিয়ে থাকা ধানের তুলনায় তা খুবই নগণ্য।
কষ্টসাধ্য হওয়ায় সবার পক্ষে এটা সম্ভবও হচ্ছে না। তাদের বুক ভরা কষ্ট-হাহাকার নিয়ে নদীর দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখা গেছে কৃষকদের।
তাদেরই সুলতানপুর গ্রামের একজন ইউনুস আলী (৬০)। তিনি বলেন, ছয় বিঘা জমিতে ধান এবং তিন বিঘা জমিতে ভুট্টা রোপণ করেছিলেন তিনি। ধান-ভু্ট্টা পেকে কাটার উপযুক্ত হয়েছে। কিন্তু হঠাৎই সব তলিয়ে গেছে। তিনি সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ডুব দিয়ে বেশ কয়েক বস্তা ধান পানির নিচ থেকে কেটে পাড়ে তুলেছেন।
একটু সামনে এগুতেই চোখে পড়ে একই গ্রামের সাজু মিয়া (২৭) নৌকায় করে ধান কেটে আনছেন।
তিনি বলেন, তার পাঁচ বিঘা জমির পাকা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক কষ্ট করে মাত্র দেড় বিঘা জমির ধান কাটতে পেরেছি। ধান ছাড়া তো আমাদের জীবিকার অন্য কোনো পথ নাই। পেটে তো কিছু দিতে হবে। তাই জীবন বাজি রেখে দম আটকিয়ে পানির নিচ থেকে ধান কেটে আনতে বাধ্য হচ্ছি।
কিশোরগাড়ি গ্রামের ইসমাইল হোসেন জানান, চার/পাঁচদিনের মধ্যেই চোখের সামনে সব তলিয়ে গেল। এলাকাবাসীর শত শত বিঘা জমির ধান-ভুট্টা এখন পানির নিচে।
এ ব্যাপারে ওই ইউনিয়নের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম রিন্টু বলেন, এ ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত করতোয়া ও আখিরা নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। ফলে কয়েকদিনের অতিবৃষ্টিতে ইউনিয়নের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পশ্চিম পাশের এলাকা দুই নদীর পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে ইউনিয়নের ১৭টি গ্রামের ধান-ভুট্টাসহ বিভিন্ন রবিশস্য পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ।
এ ব্যাপারে পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান জানান, ভাঙন এলাকার খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্ভাব্য সাহায্য-সহযোগিতা করা হবে।
Leave a Reply