1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : editor :
  3. [email protected] : moshiur :
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২১ পূর্বাহ্ন

বাজারে আমের রাজত্ব, আগ্রহ কম লিচু-কাঁঠালে

মহানগর রিপোর্ট :
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ১০ জুন, ২০২৩
  • ২১৪ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

বাজারে এখন আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, জামরুল, তালসহ নানা বাহারি ফল। ভরা মৌসুম হওয়ার পরও বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে এসব ফল। বিশেষ করে আম কিনতে গেলে বাঁধ সাজছে দাম। ক্রেতাদের অভিযোগ, ফলমূলে মানুষের বেশি আগ্রহ থাকায় সুযোগ নিচ্ছে বিক্রেতারা। তবে বিক্রেতারা বলছেন, বেশি দামে কেনা, তাই বাধ্য হয়েই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

শুক্রবার (৯ জুন) বিকেলে রাজধানীর বাড্ডা, রামপুরা ও আফতাবনগর গেট সংলগ্ন ফলের বাজারে সরেজমিনে ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গ্রীষ্মের শুরু থেকেই আম, কাঁঠাল, লিচু, জামসহ নানা ফলে সয়লাব থাকে বাজার। এসময় পাওয়া যায় জামরুল, তালের শাঁস, ডেউয়া, সফেদা, করমচা, অড়বরইয়ের মতো দেশি ফল। থাকে বিভিন্ন রকমের বারোমাসি ফলও। কিন্তু বর্তমানে ভরা মৌসুম হওয়ার পরও বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে এসব ফল।

চাহিদা বেশি থাকায় পকেট কাটছেন আম ব্যবসায়ীরা

ফলের বাজারে এখন আমের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। যারা আম কিনতে আসেন, তাদের মধ্যে খুব কম মানুষই ৪-৫ কেজির কম পরিমাণে আম কেনেন। আবার অনেক আমপ্রেমী আছেন, যারা তৃপ্তি মেটাতে পাইকারি বাজার থেকে আমের ক্যারেট কেনেন।

আফতাবনগর গেট সংলগ্ন ফলের বাজারে সঙ্গে কথা হয় ক্রেতা মফিজুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, এখন পুরোপুরি আমের সিজন কিন্তু দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঢাকায় ঢুকতে ঢুকতে আমের অবস্থা অনেকটাই খারাপ হয়ে যায়। তারপরও নিয়মিত কেনা হয়, খাওয়া হয়।

দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দাম তুলনামূলক একটু বেশি। তবে কাওরান বাজারসহ অন্যান্য বাজারে গেলে আবার দাম কিছুটা কম। আমাদের প্রত্যাশা হলো, যেহেতু এখন ফলমূলের সিজন, সব ধরনের ফলের দাম সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যে নিয়ে আসা উচিত। এখান থেকে যে আমটা ৮০ টাকায় নিচ্ছে, এটা ৬০ টাকা হলে ঠিক ছিল। তারপরও বাসার মানুষ-মেহমানদের জন্য কিছু নিতে হয়।

রফিকুল ইসলাম নামক আরেক ক্রেতা বলেন, যেহেতু এখন আম-লিচুর সিজন, তাই এসব ফলে মানুষের আগ্রহটা একটু বেশি। এই সুযোগটাই নিচ্ছে বিক্রেতারা। যেই আমটা রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে তারা কিনে আনছে ৩০-৩৫ টাকা কেজিতে, সেটাই ঢাকায় এনে বিক্রি করছে দুই থেকে তিন গুণ বেশি দামে। এগুলো মানুষকে ঠকানো ছাড়া আর কিছুই না।

দাম বেশি কিন্তু ‘কিছুই করার নেই’

মৌসুম অনুযায়ী ফলের দাম বেশি স্বীকার করলেও ‘কিছুই করার নেই’ বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। মো. সাগর নামক এক বিক্রেতা বলেন, এখন আমের চাহিদা ভালো, কিন্তু রেট (মূল্য) বেশি। গতবারের চেয়ে এবার আমের উৎপাদন অনেক বেশি। সেইসঙ্গে মানুষের চাহিদাও বেশি। দাম বেশি হওয়ার কারণ হলো, আমাদেরকেই বেশি দামে কিনে আনতে হচ্ছে। যে কারণে চাইলেও কমে বিক্রি করার সুযোগ নেই।

দাম কমবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ধীরে ধীরে তো আম শেষ হয়ে যাচ্ছে। রাজশাহী থেকে এই মুহূর্তে আমের দাম কমানোর সম্ভাবনা খুবই কম। আমরা আশঙ্কা করছি, সামনে হয়ত দাম আরও বাড়তে পারে।

বাজারে কোন আমের চাহিদা বেশি– এমন প্রশ্নের জবাবে মো. সাগর বলেন, বাজারে এখন রূপালী, হিমসাগর, ল্যাংড়া, হাঁড়িভাঙা আম আছে। এর মধ্যে বেশি চাহিদা হিমসাগর ও ল্যাংড়া আমের। আমি হিমসাগর বিক্রি করছি ১০০ টাকায় আর ল্যাংড়া আম বিক্রি করছি ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। এছাড়াও আম্রপালি ৮০ থেকে ১০০ টাকায়, হাঁড়িভাঙা ৮০ থেকে ৯০ টাকায় কেজি বিক্রি করছি।

বাজারে আসছে হাঁড়িভাঙা-বারি জাতের আম

রংপুরের বিষমুক্ত ও অতি সুমিষ্ট আঁশহীন হাঁড়িভাঙা আম এবার নির্দিষ্ট সময়ের ১০ দিন আগেই বাজারে আসছে। আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ২০ জুনের পরিবর্তে ১০ জুন থেকে আম পাড়া শুরু হবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এদিকে আগামী কিছুদিনের মধ্যে বারি জাতের বিভিন্ন সুমিষ্ট আমও বাজারে আসতে শুরু করবে।

ফল বিক্রেতা বলেন, বাজারে কিছুদিনের মধ্যেই যুক্ত হবে হাঁড়িভাঙা আম। ধীরে ধীরে যখন অন্যান্য আমগুলো শেষ হয়ে আসবে তখন বাজারে রাজত্ব করবে এই হাঁড়িভাঙা। এখন যেগুলো হাঁড়িভাঙা নামে বিক্রি হচ্ছে, সেগুলোর অধিকাংশই ভুয়া। আর কিছু থাকলেও সেগুলো অপরিপক্ব।

তিনি বলেন, আমের সিজন আরও মাস দুয়েক থাকবে। বর্তমানে আমরা হিমসাগর, ল্যাংড়া, আম্রপালি আম বিক্রি করছি। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে হিমসাগর। প্রতি কেজি হিমসাগরের দাম ৮০ থেকে ৯০ টাকা। আর রুপালি আম বিক্রি করছি ১০০ টাকায়, ল্যাংড়া আম বিক্রি করছি ৭০ থেকে ৮০ টাকায়।

৪০০ টাকার নিচে বাজারে লিচু নেই

লিচুর সিজন শেষের দিকে। সাধারণত মে থেকে জুন মাসের মধ্যেই বাজারে পরিপক্ব লিচু পাওয়া যায়। দেশে রাজশাহী, যশোর, দিনাজপুর, রংপুর, কুষ্টিয়া, পাবনা, ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রামসহ কয়েকটি জেলায় লিচুর চাষ হলেও দিনাজপুরের লিচুকেই দেশের সেরা বলে দাবি করেন সেখানকার চাষিরা।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কিছুদিন আগেও যে লিচু শতক সর্বনিম্ন ৩০০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে সেটি এখন ৪২০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

লিচুর দাম প্রসঙ্গে বিক্রেতা মো. আজিম মিয়া বলেন, বর্তমানে ১০০ লিচু বিক্রি করছি সর্বনিম্ন ৪২০ থেকে ৪৫০ টাকা দামে, যেটি কিছুদিন আগেও ছিল ৩০০ টাকা। লিচুভেদে দামও একেকরকম। আগে দাম কিছুটা কম ছিল। এখন তো সিজন শেষের দিকে, তাই দাম বেড়ে গেছে। সামনে দাম হয়ত আরও বেড়ে যাবে।

বাজারে লিচুর চাহিদা কেমন– জানতে চাইলে তিনি বলেন, দাম একটু বেশি হলেও ভালো লিচুর চাহিদা আছে। আমি প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয় হাজার লিচু বিক্রি করি। লাভও থাকে মোটামুটি।

ক্রেতা কম কাঁঠালের, কমেও বিক্রি হচ্ছে না

ফলের বাজারে অনেকটাই জৌলুস হারিয়েছে জাতীয় ফল কাঁঠাল। বাজারে আম-জাম আর লিচুর ব্যাপক চাহিদা থাকলেও কাঁঠাল কেনায় ক্রেতাদের খুব বেশি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশে চলমান তীব্র গরমের কারণে কাঁঠালের খুব বেশি চাহিদা নেই।

কাঁঠাল বিক্রেতা মো. ইব্রাহিম হোসেন বলেন, মানুষ অন্য ফল কিনলেও এবার কাঁঠালের চাহিদা খুবই কম। কম দামেও বিক্রি করা কঠিন। যে সাইজের কাঁঠাল গত বছর ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বিক্রি করেছি, সেটি এবছর ২০০ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে না। প্রতিনিয়তই কিছু কাঁঠাল বিক্রি করতে না পারায় নষ্ট হয়।

বিক্রি কম হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশে গত কিছুদিন মাত্রাতিরিক্ত গরম। সবার ধারণা কাঁঠাল খেলে গরমের তীব্রতা আরও বেড়ে যাবে। এজন্যই হয়ত কাঁঠালের চাহিদা কম। গত বছরও কিন্তু এত কম চাহিদা ছিল না।

বাজারে মিলছে আরও যেসব গ্রীষ্মকালীন ফল

বাজারে পাওয়া যাচ্ছে গ্রীষ্মকালীন আরেক ফল জাম। প্রতি কেজি জাম পাওয়া যাচ্ছে ১২০ টাকা থেকে ১৬০ টাকায়। এছাড়া রয়েছে রসালো জামরুল, যা প্রতি কেজি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সঙ্গে গাবও এসেছে বাজারে, বিক্রি হচ্ছে জামরুলের মতো দামে। পাশাপাশি প্রতি পিস আনারস বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৮০ টাকায়।

তাল গ্রীষ্মের আরেকটি ফল। আকারে বড় শাঁসের তাল বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। আর আকারে ছোট তাল ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: সিসা হোস্ট