রাজশাহীর পবা উপজেলায় হড়গ্রাম ইউনিয়নের কুলপাড়ায় মৃত আজিজুল আলমের জাল টিপসই নিয়ে তার প্রায় ২৫ বিঘা সম্পদ দলিল করে নিয়েছে তার ৫ ছেলে। সেই সাথে মৃত আজিজুলের স্ত্রী রাশিদা বেওয়া ও তার ৩ মেয়েকে তাদের ওয়ারিস সূত্রে পাওনা সম্পদ থেকে বঞ্চিত করে জোর পূর্ব দখল করে রেখেছে বলে অভিযোগ ৫ ছেলে আবুল কালাম, আবু বাক্কার, এমরান আলী, বাদশা, রুবেলের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় মৃত আজিজুলের স্ত্রী রাশিদা বেওয়া ও তার তিন মেয়ে সবুরা, ডলি ও পলি বাদি হয়ে পবা থানার সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে রাজশাহীতে গত ২০২২ সালে ২৪ অক্টোবর আবুল কালাম, আবু বাক্কার, এমরান আলী, বাদশা আলী, রুবেল আলীর বিরুদ্ধে বাটোয়ারা মামলা করেন। সাম্প্রতিক মামলা তুলে নিতে বিবাদীরা বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছে । এর আগে ওই সব সম্পদের বাউন্ডারি ওয়াল নির্মান করতে গেলে কাজ বন্ধ করে দেই শাহমুখদুম থানা পুলিশ। বন্টন নামার মামলার রায় না হওয়া পর্যন্ত ৫ ছেলে কেউ কোন সম্পদ বিক্রি করতে যেন না পারে এ বিষয়ে গত বুধবার তিন মেয়েকে নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অভিযোগ করেন রাশিদা বেওয়া।
জানা গেছে, পবা উপজেলার শাহমুখদুম থানার মিয়াপুর কুলপাড়ার মৃত আজিজুল আলমের স্ত্রী রাশিদা বেওয়া ও তাদের তিন মেয়ে সবুরা, ডলি ও পলি এবং ৫ ছেলে আবুল কালাম, আবু বাক্কার, এমরান, বাদশা, রুবেল। পবা উপজেলার, মৌজা:-কুলপাড়া, জে.এল নং-৬৮ মধ্যে আরএস খতিয়ান নং ১৭, আরএস দাগ নং ১৫৫, রকম ভিটা, জমির পরিমান .৬৩ শতক এর কাত .২১ শতক, অপরদিকে, পবা উপজেলার মৌজা- হরিষার ডাইং, জে.এল. নং-৬৭ মধ্যে আরএস খতিয়ান নং ১১, আরএস দাগ নং ৩২৫, ৩২৬, রকম ধানী, জমির পরিমান .২৬ শতক কাত .০৯ শতক, .২৪ শতক কাত .০৮ শতক, মোট .৫০ শতক কাত .১৭ শতক। তফশিলকৃত সম্পদের ওয়ারিস সূত্রে মালিক মৃত আজিজুলের স্ত্রী, তিন মেয়ে ও ৫ ভাই। আজিজুল মৃত্যুর পূর্বে কিছু জমি দলিলে স্বাক্ষর করে ৫ ছেলের নামে লিখে দেই। আজিজুল সুস্থ থাকা অবস্থায় তার স্থাবর ও অস্থাবর কোন সম্পদ কাউকে লিখে বা দান করে দেইনি। গত ২৪ জুন ২০২১ তারিখে আজিজুল মৃত্যুর কিছু দিন পরে তার বড় মেয়ে তার ৫ ভাইদের কাছে জমির ভাগ চাইতে গেলে তাকে মারপিট করে। এ বিষয় শাহমুখদুম থানায় মামলা করতে গেলে মামলা নেইনি থানা।
গত ২৪ জুন ২০২১ ইং তারিখে আজিজুল মৃত্যু বরণ করেন। মৃত্যুর পূর্বে র্দীঘদিন যাবত আজিজুল অসুস্থ অবস্থায় তার ছেলেদের কাছে ছিলেন। আজিজুলের স্ত্রী ও ৩ মেয়েকে তাদের ওয়ারিস সূত্রে পাওয়া সম্পদ থেকে বঞ্চিত করতে চক্রান্ত করে আজিজুল অসুস্থ থাকা অবস্থায় তার ৫ ছেলে তার কাছে থেকে কৌশলে দলিলে টিপসই নিয়ে প্রায় ২৬ বিঘা জমি তার ৫ ছেলে লিখে নেয় ও একটি হেবা দলিল করে গত ২০২০ সালে ২৩ ডিসেম্বর। সেই দলিলে প্রায় ২.৮৩৬৭ একোর জমি উল্লেখ কারা হয়েছে। এর আগে কুলপাড়া মৌজার কিছু সম্পদ তার ৫ ছেলেকে লিখে দিয়েছেন আজিজুল। সেই দলিলে ছেলেদের জমি লিখে দেয়ার সময় আজিজুলের স্বাক্ষর রয়েছে। রাশিদা বেওয়া ও তার তিন মেয়েকে সম্পদ থেকে বঞ্চিত করার জন্য ৫ ছেলে তার পিতা অসুস্থ থাকা অবস্থায় টিপসই নিয়ে একটি হেবা দলিল করে সম্পদ জবরদখল করে রেখেছে বলে অভিযোগ করেন মৃত আজিজুলের স্ত্রী রাশিদা বেওয়া।
তিনি আরো বলেন, আমার স্বামী অসুস্থ থাকা অবস্থায় তার কাছে থেকে টিপসই নিয়ে ৫ ছেলে ২.৮৩৬৭ একর জমি তাদের নামে লিখে নিয়ে জাল দলিল করে। ওই সম্পদের দলিল হওয়ার পরে অসুস্থ অবস্থায় আমার স্বামীকে মিস্টি খাইয়ে তাড়া তাড়ি মেরে ফেলেছে ৫ ছেলে। আমাকে ও আমার তিন মেয়েকে সকল সম্পদ থেকে তারা বঞ্চিত করেছে।
তিনি আরো বলেন, আমার স্বামীর মৃত্যুর পরে তার সম্পদের ওয়ারিস সূত্রে মালিক আমি। আমাকে ও তিন মেয়েকে সম্পদ থেকে বঞ্চিত করে ৫ ছেলে জোর করে সম্পদ ভোগ দখল করে খাচ্ছে। আদালতে মামলা করেছি। আশা করি আদালত আমার ও আমার ৩ মেয়ের ওয়ারিস সূত্রে যে পরিমান সম্পদ পাবো তা সঠিক ভাবে বন্টন করে দিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। সেই সাথে পিতার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে সম্পদ লিখে নেয়ার জন্য ও তাদের অসুস্থ পিতাকে মিস্টি খাইয়ে দ্রুত মেরে ফেলার জন্য ৫ ছেলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রস্তুুতি প্রক্রিয়াধিন রয়েছে।
এ বিষয় মৃত আজিজুল আলমের ছেলে আবুল কালামসহ অন্যানদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, আমার পিতা আমাদের ৫ ভাইকে লিখে দিয়েছে সম্পদক। এ কারনে বোনেরা সম্পদক পাই না আইনগত ভাবে। তবে টিপসই নিয়ে ও মিষ্টি খাইয়ে অসুস্থ পিতাকে মেরে ফেলার অভিযোগ অস্বীকার করেন তারা।
Leave a Reply