ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর রমনা থানায় করা মামলায় জামিনে কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছেন সাভারে কর্মরত প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামস। সোমবার (৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা ২২ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার (কেরানীগঞ্জ) থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
এরপর তিনি তার মায়ের কাছে ফেরেন।
জানা গেছে, রাত ১০ টার দিকে ধামরাইয়ের ডাউটিয়া এলাকায় ভাইয়ের বাসায় অবস্থান করছিলেন শামসের মা করিমন নেছা। মুক্তির পর শামস সেখানেই যান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দৈনিক প্রথম আলোর বাংলা বিভাগের প্রধান তুহিন সাইফুল্লা ও হেড অব অ্যাডমিন উৎপল রায়। তারা শামসকে তার মায়ের কাছে দিয়ে যান।
চারদিন পর ছেলেকে ফিরে পেয়ে এ সময় অশ্রুসিক্ত হয়ে ওঠে করিমন নেছার চোখ। কান্না করতে করতেই তাদের সহায়তাকারী সবাইকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। আমার শামসু আমার কাছে আজ আসছে। সবার কাছে আমি দোয়া চাই।
এর আগে সন্ধ্যায় সাংবাদিক শামসের মুক্তির খবর নিশ্চিত করেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুবুল ইসলাম। তিনি বলেন, আদালত থেকে তার বেল বন্ড অফিসিয়ালি আমাদের কাছে পৌঁছানোর পর সব নিয়ম মেনে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
এর আগে দুপুরে শামসুজ্জামানকে ২০ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূরের আদালত। জামিন আদেশ শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত প্রতিবেদন না দেওয়া পর্যন্ত শামসুজ্জামানকে জামিন দেওয়া হয়েছে।
গত ৩০ মার্চ পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শামসুজ্জামানকে কারাগারে পাঠান আদালত। সেদিন তার জামিন আবেদন নাকচ করা হয়।
এর আগের দিন ২৯ মার্চ মশিউর মালেক নামে এক আইনজীবী বাদী হয়ে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, পত্রিকাটির সাভারের নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামস, সহযোগী এক ক্যামেরাম্যানসহ অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।
ওইদিন রাতেই শামসুজ্জামানকে এ মামলায় গ্রেপ্তার করে রমনা থানা পুলিশ। যদিও এর প্রায় ২ দিন আগে শামসুজ্জামানকে তার সাভারের বাসা থেকে তুলে আনে সিআইডি। জিজ্ঞাসাবাদের পর ২৯ মার্চ মধ্যরাতে তাকে রাজধানীর একটি সড়কে ছেড়ে দেওয়া হয়। এর পরপরই রমনা থানা পুলিশ তাকে সেখান থেকে গ্রেপ্তার করে।
এ মামলায় প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান রোববার (২ এপ্রিল) উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছেন।
গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের দিন প্রথম আলো অনলাইনে প্রকাশিত একটি খবর নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। ওই খবরের একটি উদ্ধৃতি সংযুক্ত করে বানানো ছবি-কার্ডে মহান স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলে সরকার ও সরকার দলীয় লোকজন। ওই সংবাদে ক্ষুব্ধ হয়েই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলাটি করেন আইনজীবী মশিউর মালেক।
Leave a Reply