আজ ২৬শে মার্চ। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বাঙালির জীবনে নেমে আসে এক ভয়ংকর, নৃশংস ও বিভীষিকাময় অন্ধকার রাত। অন্য দিনের মতো সেটি স্বাভাবিক ছিল না। অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি বাহিনী নিরস্ত্র ও ঘুমন্ত বাঙালির ওপর যখন ঝাঁপিয়ে পড়ে ইতিহাসের বর্বরোচিত নিধনযজ্ঞ আর ধ্বংসের উন্মত্ত তাণ্ডব চালায়, সেদিন থেকে স্বাধীনতা শব্দটি বাঙালির হয়ে যায়। দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
এদিকে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত করা হয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এরই মধ্যে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গনকে ধুয়ে মুছে নতুন রূপ দেওয়া হয়েছে। যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এ ছাড়া ওয়াচ টাওয়ার ও সিসিটিভি কন্ট্রোলের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হবে পুরো এলাকা।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও অন্যান্য পতাকায় সজ্জিত করা হবে। আজ সরকারি ছুটি থাকবে। দিবসটি উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা বাণী দিয়েছেন। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র, নিবন্ধ ও সাহিত্য সাময়িকী প্রকাশ করবে। ইলেকট্রনিক মিডিয়াসমূহ মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রচার করছে।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা; সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান; শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা; মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র এবং চলচ্চিত্র প্রদর্শনের আয়োজন এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ফুটবল, টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট, কাবাডি, হাডুডু ইত্যাদি খেলার আয়োজন করা হয়েছে।
এ ছাড়া মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান করা হবে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহে দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও উপাসনার আয়োজন করা হবে। দেশের সব হাসপাতাল, জেলখানা, শিশু পরিবার, বৃদ্ধাশ্রম, ভবঘুরে প্রতিষ্ঠান ও শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রসমূহে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে।
দেশের সব শিশুপার্ক ও জাদুঘরসমূহ উন্মুক্ত রাখা হবে এবং বিনা টিকিটে দর্শনার্থীরা প্রবেশ করতে পারবে। চট্টগ্রাম, খুলনা, মোংলা ও পায়রা বন্দর এবং ঢাকার সদরঘাট, নারায়ণগঞ্জের পাগলা, বরিশাল ও চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজসমূহ সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে অনুরূপ কর্মসূচি পালন করা হবে।
Leave a Reply