1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : editor :
  3. [email protected] : moshiur :
বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ০৫:১১ অপরাহ্ন

জয়শঙ্করের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক
হাসিনাকে ‘ফুল স্টপ’ করাতে ভারতকে বার্তা দেবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

মহানগর রিপোর্ট :
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৪৭ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর কিছুদিন তার কোনো ‘সাড়া শব্দ’ পাওয়া যায়নি। এমনকি তিনি কোথায় আছেন সেটিও বেশ গোপন রাখে নয়াদিল্লি।

এছাড়া তার এই বক্তব্যের পর ঢাকা ও দিল্লিতে বাংলাদেশ- ভারতের দূতদের তলব-পাল্টা তলবের মুখে পড়তে হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতেই আগামী সপ্তাহে ওমানের রাজধানী মাস্কটে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন।

কূটনৈতিক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে ঢাকা-দিল্লির দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে অস্বস্তি তৈরি হয়। বিশেষ করে, বাংলাদেশে ভারতের সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ এবং কলকাতা ও আগরতলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলার ঘটনা যেন আগুনে ঘি ঢালার মতো পরিবেশ তৈরি করে।

তবে এই ‘শীতল সম্পর্ক’ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। জানুয়ারির মাঝামাঝিতে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণসহ সীমান্তের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আবার দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। সে সময় ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করে বাংলাদেশ। এর ২৪ ঘন্টা না যেতে ভারতও নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনার নুরাল ইসলামকে তলব করে। সেগুলোর রেশ কাটতে না কাটতেই আসে শেখ হাসিনার বক্তব্য ইস্যু।

হাসিনার বক্তব্যের কারণে দেশে নতুন করে আবারও অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছে— এমনটি জানিয়ে ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করে প্রতিবাদ জানায় ঢাকা। এরপর বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করে‌ দিল্লি।

বাংলাদেশে ভারতের সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ এবং কলকাতা ও আগরতলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলার ঘটনা যেন আগুনে ঘি ঢালার মতো পরিবেশ তৈরি করে।

শুধু এতে থেমে থাকেনি ভারত। তারা শেখ মুজিবের বাড়ি ভাঙার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেয়। কিন্তু নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের এমন প্রতিক্রিয়া ভালোভাবে নেয়নি ঢাকা। এর জবাবে বাংলাদেশের কথা, “আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ বক্তব্য ‘অপ্রত্যাশিত’ ও ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’।”

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও মুখপাত্র রফিকুল আলম বলেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী ভারতে অবস্থান করে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক বক্তব্য প্রদান করছেন, যা বাংলাদেশের জনগণ ভালোভাবে নিচ্ছে না। গত ৫ ফেব্রুয়ারি তার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ধানমন্ডির ৩২ নাম্বারে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল সেই বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার এরইমধ্যে অবস্থান পরিষ্কার করেছে। এ বিষয়ে ৬ ফেব্রুয়ারি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি মন্তব্য অন্তর্বর্তী সরকারের নজরে এসেছে।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ বক্তব্য প্রদান অপ্রত্যাশিত এবং অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা প্রতিবেশী দেশটিতে নানা ধরনের বিরূপ পরিস্থিতি হতে দেখেছি। কিন্তু বাংলাদেশ কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সরকারিভাবে কোনো বক্তব্য প্রদান করে না। অন্যদের কাছ থেকেও বাংলাদেশ একই ধরনের ব্যবহার প্রত্যাশা করে।”

দেশের অপর একটি কূটনৈতিক সূত্র বলছে, শেখ হাসিনাকে থামানোর পাশাপাশি প্রত্যার্পন চুক্তির আওতায় তাকে ফেরত দিতেও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আহ্বান জানাতে পারেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। এছাড়া তাদের মধ্যে সীমান্ত, ভিসা, তিস্তা, গঙ্গা চুক্তির নবায়নসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

অপরদিকে গত বৃহস্পতিবার ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলবের পর সাংবাদিকদের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, “ভারতকে আমরা লিখিতভাবে অনুরোধ করেছি, শেখ হাসিনাকে সংযত করার জন্য। আমরা বলেছি, ওনি যেন বক্তব্য না দেন, যেটা বাংলাদেশের বিপক্ষে যাচ্ছে। আমরা এটার কোনো জবাব পাইনি এখনও। গত কয়েকদিনের কার্যকলাপের কারণে আমরা আরেকবার ভারতকে প্রতিবাদ নোট দিয়েছি। শেখ হাসিনা বক্তব্য দিয়ে দেশে এক ধরনের অস্থিশীলতা উসকে দিচ্ছেন।”

প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনাকে ফেরত পেতে কূটনৈতিক পত্র দিয়েছে বাংলাদেশ। সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে, এতে কাজ না হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে স্থানীয় কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, হাসিনার পতনের পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে নিউেইয়র্কে জাতিসংঘের অধিবেশনের ফাঁকে তৌহিদ-জয়শঙ্করের প্রথম সাক্ষাৎ হয়। ওমানের মাস্কটে হবে তাদের দ্বিতীয় সাক্ষাৎ। তারা বলেছেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের হস্তক্ষেপকে মোটেই ভালোভাবে দেখার সুযোগ নেই। এগুলো বন্ধে আহ্বান জানাবে ঢাকা। পাশাপাশি ভারতে অবস্থান করে শেখ হাসিনা যেন বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি না করে তার আহ্বান জানানো হবে। বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চায়, সেই বার্তাই ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

মাস্কটে ইন্ডিয়ান ওশেন কনফারেন্সের ফাঁকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও কৃষি মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার। এছাড়া, কনফারেন্সে যোগ দেওয়া আরও কিছু দেশের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার।

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: সিসা হোস্ট