ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বসানো ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরা আংশিকভাবে চালু হচ্ছে। রফতানির পোশাক চুরিসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ ঠেকাতে এ কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে।
আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড থেকে কুমিল্লার দাউদকান্দি পর্যন্ত সিসি ক্যামেরা চালু করে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে।
গত বছরের জুনে কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে যে অংশের কাজ শেষ হয়েছে, সেই অংশের সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো চালু করে নজরদারি শুরু করার প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হয়েছে।
হাইওয়ে পুলিশ সূত্র জানায়, ২০২১ সালের জুনে ‘হাইওয়ে পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক প্রকল্পের অধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু হয়। মহাসড়কের ২৬৫ কিলোমিটারের মধ্যে চুরি-ডাকাতি, চাঁদাবাজি রোধের পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টা যানবাহনের বেপরোয়া গতি নজরদারি করতে ৪৯০টি স্থানে ১ হাজার ৪২৭টি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে।
এসব ক্যামেরার মাধ্যমে যানবাহনের নম্বরপ্লেট, গতিপথ, সন্দেহজনক অনুপ্রবেশ, স্লো ট্রাফিক এলাকা, বেপরোয়া গতিসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড শনাক্ত করা যাবে। ক্যামেরাগুলোর মধ্যে আছে লং ভিশন ক্যামেরা, পিটিজেড ডোম ক্যামেরা, চেকপয়েন্ট ক্যামেরা ও বুলেট ক্যামেরা। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
এ প্রকল্পের পরিচালক হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক বরকত উল্লাহ খান বলেন, মহাসড়ক নিরাপদ করতেই সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। মহাসড়কে অপরাধ দমন বিশেষ করে রফতানির পোশাক চুরি, দুর্ঘটনা রোধ, দুর্ঘটনা হলে দায়ী যানবাহন শনাক্ত এবং পুরো এলাকা নজরদারি আওতায় আনতেই এ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, রাজধানীর সাইনবোর্ড থেকে চট্টগ্রামের সিটিগেট এলাকা পর্যন্ত দুটি অঞ্চলে বিভক্ত হাইওয়ে পুলিশ। দাউদকান্দি থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত গাজীপুর অঞ্চল এবং বাকি অংশ কুমিল্লা অঞ্চল মহাসড়কে লাগানো ৪৯০টি পোল (ক্যামেরা লাগানোর খুঁটি) ৫টি মনিটরিং সেন্টার থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
ক্যামেরা থেকে ডেটা সংরক্ষণের জন্য মেঘনাঘাট এলাকায় একটি দ্বিতল ডেটা সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। একতলায় একটি ডেটা সেন্টার এবং অন্য তলায় একটি মনিটরিং সেন্টার থাকবে। এ ছাড়া গাজীপুর অঞ্চলে একটি মনিটরিং সেন্টার হবে। আর কুমিল্লা অঞ্চলে চারটি মনিটরিং সেন্টারের মধ্যে মেঘনাঘাট ছাড়াও দাউদকান্দি হাইওয়ে থানা, কুমিল্লা আঞ্চলিক কার্যালয় ও বার আউলিয়া হাইওয়ে থানায়ও একটি করে মনিটরিং সেন্টার হবে।
রফতানির পোশাক চট্টগ্রাম বন্দরে নেওয়ার পথে কাভার্ড ভ্যান থেকে চুরির ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। গত এক বছরে পাঁচটি অভিযানে রফতানির পোশাক চুরির সঙ্গে জড়িত ২৮ জনকে গ্রেফতারে কথা জানিয়েছে র্যাব-৪। এর মধ্যে দুই দশক ধরে মহাসড়কে রফতানির পোশাক চুরির সঙ্গে জড়িত মো. সাহেদ ওরফে সিলেটি সাঈদও আছেন। এই সিলেটি সাঈদ রফতানির পোশাক চুরির অন্যতম হোতা। সাহেদের পাশাপাশি অন্তত ১০টি চক্রের তথ্য পাওয়া গেছে, যারা মহাসড়কে রফতানির পোশাক চুরি করছে। রফতানির পোশাক চুরি ঠেকাতে মহাসড়ক সিসিটিভির আওতায় আনার দাবি করছিলেন রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান ও পণ্য পরিবহনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
Leave a Reply