মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় একাধিক সেতুতে নেই সংযোগ সড়ক। এতে কোনো কাজেই আসছে না কয়েক লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুগুলো। দীর্ঘদিন আগে নির্মিত সেতুগুলো অব্যহৃত অবস্থায় পড়ে থাকায় এর আয়ুকালও কমছে।
উপজেলার বাউশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের পোড়াচক বাউশিয়া নয়াকান্দি এলাকায় কাজলী নদীর ওপর কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি প্রায় এক যুগ ধরে যাতায়াতের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে আছে। সেতুটির উত্তর-পূর্ব দিকের কাঁচা সড়ক ও পশ্চিম প্রান্তের আনুমানিক ৫শ ফুট সংযোগ সড়ক না থাকায় ব্যবহৃত হচ্ছে না।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার ভবেরচর ওয়াজীর আলী উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন সেতুটির পূর্ব পাশে সংযোগ সড়ক নাই। রাস্তা থাকলে সেতুটিকে ঘিরে ভবেরচর-লক্ষ্মীপুর এলাকার মধ্যে সংযোগ স্থাপনসহ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভবেরচর বাসস্ট্যান্ড থেকে উপজেলা সদর পর্যন্ত বিকল্প রুট হিসেবে ব্যবহার করা যেত। কিন্তু নির্মাণের পাঁচ বছর পার হলেও সড়ক না থাকায় সেতুটি অব্যবহৃত পড়ে আছে।
ভবেরচর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি ওয়ার্ড সদস্য মোশারফ হোসেন জানান, সেতুর পূর্বপাশের উভয় দিকে চড়া মূল্যের ব্যক্তিমালিকানা জমি থাকায় সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা যাচ্ছে না। জমি অধিগ্রহণের টাকা সেতুর বাজেটে ছিল না। তারপরও ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সেতুটি সচল করতে নানামুখী প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।
এদিকে ভবেরচর ইউনিয়নের শ্রীনগর গ্রামের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল হকের বাড়ির পাশে নির্মিত সেতুর দক্ষিণ প্রান্তের সংযোগ সড়ক নেই। অপরদিকে আলীপুরা গ্রামের মহসিন শিকদারের বাড়ির পাশে নির্মিত সেতুর পশ্চিম প্রান্তের সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুটি পড়ে রয়েছে।
ভবেরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার সাহিদ মো. রিটু জানান, আলীপুরায় ত্রিশ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু ও ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী করা হলে কয়েকটি গ্রামের মানুষ স্বল্প সময়ে যাতায়াতের সুবিধা পেত। কিন্তু সেতুটির পশ্চিম প্রান্তের ব্যক্তিমালিকানাধীন দুপাশের দুটি পুকুর ভরাট না করার কারণে কয়েক দফায় সংযোগ সড়ক করেও মাটি ধরে রাখা সম্ভব হয়নি।
গজারিয়া ইউনিয়নের বাঁশগাঁও গ্রামের সেতুটির উভয় পাশের সংযোগ সড়ক সংস্কার করার অভাবে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কাশেম জানান, সেতুতে ওঠার সময় উভয় পাশের সংযোগ সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা উল্টে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে।
গুয়াগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের আনুমানিক ২০০ ফুট দক্ষিণ পাশের একটি সেতুর রেলিং ভেঙে রয়েছে দীর্ঘদিন। সেতুর উভয় পাশের এবড়ো-থেবড়ো কাঁচা সড়ক দিয়ে যাতায়াত করছে এলাকাবাসী। সেতুর পাশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীদের অধিকাংশেরই বিদ্যালয়ে যেতে হয় রেলিং ভাঙা ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতু পেরিয়ে।
এ ব্যাপারে গজারিয়া উপজেলা প্রকৌশলী ইসতিয়াক আহমেদ জানান, কিছু কিছু সেতুর সংযোগস্থলের জমি ব্যক্তি মালিকানায় থাকায় তাদের বাধার কারণে কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। এসব সেতু ও সড়কের সংস্কার কাজ পর্যায়ক্রমে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
Leave a Reply