ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব বিষয়ক একটি অভিযোগের শুনানি শুরু হয়েছে জাতিসংঘের অন্যতম অঙ্গপ্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস-আইসিজে)। আজ সোমবার থেকে আগামী এক সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে এই শুনানি।
১৯৬৭ সালে মধ্যপ্রাচ্যের আল আকসা অঞ্চলে ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনের সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছিল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। কিন্তু মৌখিকভাবে তাতে স্বীকৃতি দিলেও বাস্তবে ইসরায়েল নিয়মিত সেই সীমানা লঙ্ঘণ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর গাজা উপত্যকায় ২০০৫ সাল থেকে দখলদারিত্ব কার্যক্রম স্থগিত রাখলেও এই উপত্যকার সীমান্তপথগুলো সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে ইসরায়েল।
আইসিজের ১৫ জন বিচারপতি প্যানেলের সব সদসের উপস্থিতিতে শুরু হয়েছে সোমবারের শুনানি। ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল মালিকিও এজলাসে হাজির হয়েছেন। তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কারো উপস্থিতি দেখা যায়নি। ইহুদি রাষ্ট্রটি জানিয়েছে, আত্মপক্স সমর্থন করে দেওয়া বক্তব্য লিখিত আকারে পাঠানো হয়েছে এবং শুনানিতে ইসরায়েল পক্ষের আইনজীবী তা পড়ে শোনাবেন।
এছাড়া শুনানিতে চীন, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, মিসর এবং ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত আছেন।
প্রসঙ্গত, গত অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান শুরুর পর ৩০ ডিসেম্বর জাতিসংঘ আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যার অভিযোগে মামলা করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। গত ১১ ও ১২ জানুয়ারি সেই মামলার শুনানিও হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা গাজার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জন মানুষকে হত্যার পাশাপাশি ২৪০ জন ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে ধরে নিয়ে যায়। অভূতপূর্ব সেই হামলার পর সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।
চার মাসেরও বেশি সময় ধরে চলমান সেই অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ২৯ হাজারেরও বেশি মানুষ, আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭০ হাজার। এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনীর গোলায় বাড়িঘর হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন আরও লাখ লাখ ফিলিস্তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, ও মিসরের নিরলস চেষ্টায় গত ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭ দিনের অস্থায়ী বিরতি চুক্তি হয়েছিল হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে। সেই ৭ দিনে নিজেদের কব্জায় থাকায় জিম্মিদের মধ্যে ১০৮ জনকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস। পাল্টায় ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে দেড়শর বেশি মানুষকে মুক্তি দিয়েছিল ইসরায়েলও।
হিসেব অনুযায়ী, হামাসের কব্জায় এখনও ১৩২ জন জিম্মি রয়েছে। তাদের ফিরে পেতে ইসরায়েলে ব্যাপক বিক্ষোভ-আন্দোলন শুরু করেছেন জিম্মিদের স্বজনরা। ইসরায়েলের সাধারণ জনগণের একাংশও যোগ দিয়েছেন আন্দোলন কর্মসূচীতে।
সূত্র : রয়টার্স
Leave a Reply