স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার আপত্তিকর ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইলের দায়ে এক ব্যক্তিকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও নগদ দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড। বুধবার দুপুরে রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম আবদুল আলিম (৪২)। তিনি বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার কহুল গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে। রায় ঘোষণাকালে দণ্ডিত আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাকে আদালতের নির্দেশে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠায় কোর্ট পুলিশ।
রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ইসমত আরা বেগম জানান, অভিযুক্ত আবদুল আলিম সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট এবং তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মরত আছেন, এমন মিথ্যা পরিচয়ে বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলতেন। তিনি তার সঙ্গে সুসম্পর্কও গড়ে তোলেন।
এর সূত্র ধরে তিনি ২০২১ সালের মার্চ মাসে ওই প্রধান শিক্ষিকার বাড়িতে যান। এ সময় তিনি জোর করে শিক্ষিকার আপত্তিকর কিছু ছবি তোলেন। পরে টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে এসব ছবি অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে ওই শিক্ষিকাকে ব্ল্যাকমেইল শুরু করেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই স্কুল শিক্ষিকা বগুড়ার শাজাহানপুর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। পরে পুলিশ আবদুল আলিমকে গ্রেফতার করে। এরপর তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। পরে সাইবার ট্রাইব্যুনালে এই মামলার বিচার শুরু হয়। আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। পরে আজ দুপুরে আদালতে মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।
রায়ে একটি ধারায় আবদুল আলিমকে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে আরও তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। এছাড়া অন্য আরেকটি ধারায় আদালতের বিচারক তাকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করেন। জরিমানার টাকা অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড। আর আলাদা দুইটি ধারায় এই কারাদণ্ড দেওয়া হলেও তা একসঙ্গেই চলবে বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
Leave a Reply