নগরীতে স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষনের প্রতিবাদে ও ধর্ষকের উপযুক্ত বিচারের দাবিতে মানবববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর কাজলা এলাকায় ট্যালেন্ট ডেভলাপমেন্ট স্কুল এর আয়োজনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিতহয়।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ট্যালেন্ট ডেভলাপমেন্ট স্কুল এর প্রিন্সিপাল কানিজ আখতার বানু, ভাইস প্রিন্সিপাল সোহেলী ইয়াসমীনসহ অত্র স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ভিকটিম মো: চাঁন মিয়া, তৌহিদ, মুজদার আলী, শামসুল আলম, শামীউল ইসলাম প্রমুখ। মানববন্ধন থেকে অংশগ্রহণকারীরা ধর্ষনের অভিযোগে গ্রেপ্তার তিন জনক লিটনের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি করেন।
স্কুল ছাত্রীর মা জানায়, ধর্ষক লিটন মহানগরীর মতিহার থানার কাজলা মৃধাপাড়া এলাকার মৃত আজিমুদ্দিনের ছেলে। তারা উভয়েই ধরমপুর এলাকায় জনৈক কামালের বাড়িতে ভাড়া থাকেন।তিনি বাসা বাড়ীতে কাজে গেলে বাড়ি ফাঁকা থাকতো। সেই সুযোগে আমার মেয়েকে একা পেয়ে বিভিন্ন সময় তার শরীরে হাত দিত এবং কু-প্রস্তাব দিত লিটন। ইতিপূর্বে বিষয়টি মেয়ে আমাকে জানালে আমি প্রতিবাদ করেছিলাম।
এরই ধারবাহিকতায় গত ১৭ ডিসেম্বর ২০২২) সকাল সাড়ে ১০টায় কাজের জন্য বেরিয়ে গেলে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আমার মেয়েকে তার ঘরে ডেকে নিয়ে যায় লিটন। এ সময় তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষন করে। পরে তাকে বলে এই ঘটনা কাউকে বললে কেটে পদ্মা নদীতে ফেলে দেব। ভয়ে আমার মেয়ে বিষয়টি গোপন রাখে। এরপর গত ৫ ফেব্রুয়ারী সকাল সাড়ে ১০টায় আমার মেয়ে জানায়, বুকে তিব্র ব্যাথা অনুভব করছে। পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (রামেক) হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে যায়। সেখানে থাকা কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ৩নং ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। এদিন আমার মেয়ে আমাকে পূর্বের সমস্ত ঘটনা বিস্তারিত খুলে বলে। পরে আমি বাদী হয়ে মতিহার থানায় একটি মামলা দায়ের করি। মামলা নং-৭,তাং-১০/০২/২০২৩।
জানতে চাইলে মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ হাফিজুর রহমান জানান, স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় তার মা বাদী হয়ে মতিহার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার পর গত শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারী) অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত লিটনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ হয়েছে।
ভিকটিম এর চাচাতো ভাই ধর্ষনের শিকার ওই স্কুল ছাত্রী ট্যালেন্ট ডেভলাপমেন্ট স্কুলের শিক্ষার্থী ছিলো ও কাজলা মৃধা পাড়াতে ভাড়া থাকতো। ধর্ষনের অভিযোগে অভিযুক্ত লিটন ও একই বাড়িতে ভাড়া থাকতো। তবে ভিকটিম বেশির ভাগ সময় পাশে তার চাচার বাড়িতে অর্থাৎ আমাদের বাড়িতে থাকতো। আর ভিকটিম এর মা বিভিন্ন বাসা বাড়িতে কাজ করতো।
ষষ্ঠ শ্রেনীর শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় ঘটনার দিন দুপুর ১২টার দিকে ভিকটিম তার চাচার বাসা থেকে নিজের বাড়িতে কাপড় আনতে গেলে লিটন তাকে জোরপূর্বক ধর্ষন করে ও এই ঘটনা প্রকাশ করলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। ওই স্কুল শিক্ষার্থী ভয়ে তার পরিবারকে বিষয়টি জানায়নি, তবে ঘটনার পর থেকে সে অস্বাভাবিক আচরন করতে থাকে।
এক পর্যায়ে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে ঘটনাটি গত ৭ ফেব্রুয়ারী পরিবারের নিকট প্রকাশ পায়। পরে গত ১০ ফেব্রুয়ারি ভিকটিম এর মা বাদী হয়ে মতিহার থানায় মামলা দায়ের করলে মতিহার থানা পুলিশ লিটনকে আটক করে কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
Leave a Reply