1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : editor :
  3. [email protected] : moshiur :
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২৬ পূর্বাহ্ন

রাজশাহীতে ফটো সাংবাদিকের বাসায় হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট

মহানগর রিপোর্ট :
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২১ মার্চ, ২০২৩
  • ১৯১ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

রাজশাহী মহানগরীর সাগরপাড়া বটতলা এলাকায় ইত্তেফাকের ফটোসাংবাদিক আজাহার উদ্দিনের বাসা ও পরিবারের উপর হামলা চালিয়ে মারপিট, বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার ও শনিবার রাতে সন্ত্রাসী ভাড়া করে দুই দফায় ওই পরিবারের উপর হামলা চালানো হয়।

হামলায় ওই পরিবারের নারী ও শিশুসহ ১০/১২ জন আহত হয়েছেন। শনিবার রাতের হামলার ঘটনায় নগরীর বোয়ালিয়া থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এদিকে রবিবার রাতে হামলার সময় রাত ৮টা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছালে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, নগরীর সাগরপাড়া এলাকার ফটোসাংবাদিক আজাহার উদ্দিন ও তার সহোদর শামীম ও পরিবার দীর্ঘদিন ঘরে বিহারিদের সম্পত্তিতে বসবাস করছেন। তারা ওই জমি বিহারিদের কাছ থেকে কিনেছেন। কিন্তু এই সম্পত্তি দখলের জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করেন এই এলাকার মৃত মজিবর রহমানের ছেলে ইকবাল হোসেন দিলদার ও তার ঘনিষ্ট বন্ধু মৃত কোরবার আলীর ছেলে নুরু। ভুয়া দলিল করে ১৯৭১ সাল থেকে ভয় ভীতি দেখিয়ে আসছিলেন দিলদারের বাবা মৃত মজিবর রহমান। বর্তমান কিছু সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণ করছেন তার ছেলে দিলদার ও কোরবান আলীর ছেলে নুরু।

গত শনিবার ফটোসাংবাদিক আজাহারের সহোদর শামীমের ছেলে মধু সাগরপাড়া বটতলা গলির ভেতরে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে ছিলেন। এসময় নুরু ও তার ভাড়াটে বাহিনী উস্কানীমূলক কথা বললে শুরু হয় বাকবির্তডা। এক পযার্য়ে ভাড়াটে বাহিনীরা মধুকে হকি, লাঠি দিয়ে মারধর করে। পরে মধুকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার মাথায় ৮টি ও পায়ে ৪ টি সেলাই দেয়া হয়েছে। মারামারির সময় বটতলা মোড়ে মামুনের মুরগির দোকানের ৫৫হাজার টাকা ও রাতের মারামারিতে শামিমের বাড়ির কিস্তির ৯০হাজার টাকা লুট করে টিভিসহ আসবাবপত্র ভাংচুর করে।

এই হামলার রেশ কাটতে না কাটতে শনিবার রাতে আবারও প্রায় ৫০-৬০ জন ভাড়াটে বাহিনী নুরুর নেতৃত্বে হকি, হাসা বটি লাঠিছোটা নিয়ে শামীমের বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। তারা বাড়ি ভাংচুর করে জায়গাটি দখল করার চেষ্টা করে। হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় এলাকার বাসিন্দা লেবুর ছেলে উদ্দম, ইশা আলীর ছেলে জুয়েল, ঈসরাইলের ছেলে লিটন, মৃত ইসমানের ছেলে সনি, জামিলসহ অন্যান্য পাড়া মহল্লার ৩০-৪০ জন ভাড়াটে অংশ নেয়।

এসব ভাড়াটে শামীমের ছোট ছেলে মামুন ও স্ত্রী সুখিসহ পরিবারের লোকজনদের মারপিট করে আহত করে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ সকালে একবার গিয়ে ঘটনাস্থলটি পরিদর্শন করে। কিন্তু রাজশাহী সিটি করপোরেশনের স্থানীয় কাউন্সিলরের হস্তক্ষেপে পুলিশ অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করেনি বলে অভিযোগ উঠেছে।

অন্যদিকে দফায় দফায় হামলার পরও মামলা রেকর্ড না হওয়ায় সোমবার সন্ধ্যা ৭টা ৫৫ মিনিটে একই সন্ত্রাসীরা ফটোসাংবাদিক আজাহার উদ্দিনের বাড়ি দখলের উদ্দেশ্যে আবার হামলা চালায়। হামলায় আজাহার উদ্দিন, তার স্ত্রী শবনম, ভাতিজা মামুন গুরুতর আহত হন। এসময় সন্ত্রাসীরা তার মোটর সাইকেল ও বাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। খবর পেয়ে বোয়ালিয়া থানা ও ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ হামলায় জড়িতদের পরিবারের কয়েক সদস্যকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

শামীমের স্ত্রী হাসিনা ও মামুনের স্ত্রী সুখি জানান, কিস্তির টাকাতেই শামীম বটতলা মোড়ে পান চায়ের দোকানে ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করতো। তারা জানান, এলাকায় পুলিশ আসার সাথে তারা পালিয়ে গেলেও পুলিশ চলে গেলে বুক ফুলিয়ে ঘুড়ে বেড়ান, দেখান ভয়ভীতি। এদিকে ঘটনার পর ফটো সাংবাদিক আজাহার উদ্দিন তার বড় ভাই শামীমের বাড়ি দেখেন এবং অসহায়ের মতো সেখান থেকে চলে যান। প্রভাবশালীরা টাকা দিয়ে ভাড়াটে মাস্তান দিয়ে তার বড় ভাইকে আগুনে পুড়িয়ে মারার চেষ্ঠা করে এবং বিহারিদের জায়গা থেকে উচ্ছেদ করেন।

জানা গেছে, পূর্বে এই জমি নিয়ে দিলদারের সাথে একাধিক বার সমঝোতা হয়েছে। তখন দিলদার সময় নিয়েছিল। কিন্তু সময় নেওয়ার ছয়মাস পরেও কোনো সাড়া দেয়নি। বিহারিরাও সমঝোতা চেয়েছিল। কারণ ১৫টি পরিবার অসহায়, তারা সকলেই প্রায় বৃদ্ধ। এ বিষয়ে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বরাবর লিখিত দরখাস্তও দেওয়া হয়েছে। সেই সূত্রে তহসিল অফিসেও বসা হয়েছিলো। কিন্তু সেখানে হামলাকারীদের পক্ষে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছিলো।

সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলদের সাথে বসলেও হামলাকারীদের পক্ষে রায় দেওয়া হয়েছে। অসহায় বিহারিদের পক্ষে কোনো অভিযোগ আমলেই নেয়া হয়নি। অথচ, বিহারিরা তহসিল অফিসে প্রথমে খোজ নিতে গেলে সেখানে মজিবর রহমানের নামে কোনো রেকর্ড পায়নি।

এরপর ৬মাস পরে আবারও যোগাযোগ করলে সেখানে খাজনা খারিজের কাগজ পাওয়া গেছে। বিহারিদের পূর্ব মালিকানা থাকা অবস্থায় যেসকল খাজনা খারিজ করা হয়েছিলো সেগুলো রেকর্ডে খুজে পাওয়া যায়নি, পেইজটি ছেড়া ছিলো। এদিকে রেজিস্ট্রি অফিসে গেলেও সেখানেও বালাম বই অনেক পুরাতন হয়ে যাবার কারণে পেইজটির কিছু অংশ নষ্ট পাওয়া যায়।

সেজন্য বিহারিদেরকে রেজিস্ট্রি অফিস একটি প্রত্যায়ন পত্র দেয়। পরে বিহারিরা একটি স্যাটিফাইড কপি পায়। তাতে প্রায় সাড়ে ৪বিঘা জায়গা উল্লেখ আছে। এখানে ১৫জনের মালিকানাও আছে। এদিকে এতদিন ধরে দখলদাররা সাড়ে ৪বিঘা জমির মধ্যে সাড়ে ৩৩ কাঠা জমি নিজেদের বলে দাবি করে আসছে। শেষ বার দিলদারের সাথে বসায় সে সাড়ে ৩৩ কাঠা জায়গা তার বলে দাবি করেন, সেখান থেকে সাড়ে ১৩ কাঠা জমি বিহারিদের কাছে থেকে বুঝে নিতে চান।

বিহারিরা দিলদারকে জানিয়েছিল, পুকুরে ২৫ কাঠা জমি আগে আমাদেরকে বুঝিয়ে দেখান। তারপরে আমরা আপনাকে সাড়ে ১৩কাঠা জমি বুঝিয়ে দিবো। তারপর থেকে দিলদারের সাথে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। তবে ভিতর ভিতর তাদের পরিকল্পনা ছিলো পুরো জায়গাটি হাতিয়ে নেওয়ার। এদিকে নুরুর পরিবার থেকে জানানো হয় দিলদারের থেকে পুরো জায়গাটি তারা কিনে নেন।

বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী হোসেন জানান, ঘটনার পর কয়েক দফায় সেখানে পুলিশ পাঠিয়েছি। বিষয়টি আমি দেখছি। তারা যে অভিযোগ করেছেন সেই অভিযোগটি মামলা আকারে রেকর্ড করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: সিসা হোস্ট