এবার পুলিশের সেই বিতর্কিত সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যার হুমকী দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যার হুমকী দেন এএসআই আশরাফুল। এ ঘটনায় এএসআই আশরাফুলকে পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র থেকে জেলা পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, এএসআই আশরাফুল ইসলাম বগুড়া জেলার গাবতলী থানার বাগবাড়ি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে কর্মরত থাকাকালীন তদন্ত কেন্দ্রের ছাদে উঠে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যার হুমকী দেন। বিষয়টি তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ জানতে পেরে বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান। এরপর তাকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন বগুড়া জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
জিজ্ঞাসাবাদে এএসআই আশরাফুল জানান, জমিজমা নিয়ে দ্বন্দ্বের কারনে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। বিধায়, ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন।
তবে বগুড়া জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, এএসআই আশরাফুল ইসলাম আগের স্ত্রীকে রেখে পরবর্তীতে আরও একটি বিয়ে করেছেন। বিষয়টি নিয়ে দাম্পত্য কলহের কারণে তিনি আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন বলেও ওই সূত্রটি জানায়। বিষয়টি সমাধান করে নিতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এএসআই আশরাফুলকে ২৩ দিনের ছুটিতে পাঠান। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই না করে উল্টো এলাকায় গিয়ে আপন খালার জমি দখল করতে যান এএসআই আশরাফুল।
জমি দখলে বাধা দেয়ায় দুই নারীসহ তিন জনকে হত্যার চেষ্টা চালান এএসআই আশরাফুল। এ ঘটনায় এএসআই আশরাফুলসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করা হয় রাজশাহীর দুর্গাপুর থানায়। মামলার তথ্য-উপাত্ত বগুড়া জেলা পুলিশ সুপারসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছেও পাঠানো হয়েছে বলে জানায় সূত্রটি।
এদিকে, এএসআই আশরাফুল বাগবাড়ি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা চেষ্টার আগেই তার এক ভাবির সাথে মোবাইল ফোনে কথোপকথনের সময় আত্মহত্যা করবেন বলে হুমকী দেন। সম্প্রতি মোবাইল ফোনের সেই কথোপকথনের অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ২ মিনিট ৬ সেকেন্ডের অডিও ক্লিপে বিএনপির মহাসচিব তারেক রহমান, দুর্গাপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা সাইদুর রহমান মন্টুকে নিয়েও অশ্লীল মন্তব্য করতে শোনা গেছে।
বগুড়া জেলার গাবতলী থানার বাগবাড়ি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (পুলিশ পরিদর্শক) কামরুজ্জামান জানান, সম্প্রতি তদন্ত কেন্দ্রের ছাদে উঠে লাফিয়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন এএসআই আশরাফুল। বিষয়টি জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হলে তাকে বগুড়া জেলা পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড্ করা হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।
বগুড়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুর রশিদ জানান, সম্প্রতি আত্মহত্যার চেষ্টা সহ অন্যান্য আরও কিছু অভিযোগ উঠেছে এএসআই আশরাফুলের বিরুদ্ধে। আপাতত তাকে পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড্ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply