রাজশাহী নগরীর অবৈধ পাঁচটি বাস টার্মিনাল সরানোর দাবি তুলেছেন সাধারণ মানুষ। দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বনাও জানানো হয়েছে। অবৈধ পাঁচটি বাস টার্মিনাল সরানোর জন্য ফেসবুকে জোর দাবি তোলা হয়েছে আন্দোলনকারী কিছু শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকেও।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজশাহী শহরে আরডিএ’র অনুমোদিত (রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) দুটি বাস টার্মিনাল রয়েছে। নওদাপাড়া আন্তঃজেলা বাসটার্মিনাল ও শিরোইল লোকাল বাস টার্মিনাল। কিন্তু শিরোইল লোকাল বাস টার্মিনাল থেকেই মূলত ঢাকাগামী সব বাস ছেড়ে যায়। আবার আন্তঃজেলার বাসগুলো নওদাপাড়া বাস্ট্যান্ড থেকে ছাড়লেও সেগুলো এসে জড়ো হয় শহরের অভিযাত পদ্মা আবাসিক এলাকার পাশে ভদ্রা মোড়ে, রেলগেট মোড়ে, তালাইমারী মোড়ে ও বহরমপুর মোড়ে। এতে ওই মোড়গুলোতে যানজট লেগেই থাকে। বিশেষ করে নগরীর ভদ্রা মোড়ে ও রেলগেট এলাকায় থাকে তীব্র যানজট।
এলাকাবাসী বার বার এ দুটি বাস টার্মিনাল উচ্ছেদের জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এতোদিন কোনো লাভ হয়নি। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এখন নগরীর ভিতরে অবৈধভাবে গড়ে উঠা সব বাস টার্মিনালগুলো সরানোর জোর দাবি উঠেছে। এ নিয়ে গত দুই-তিন দিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সরগোল চলছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহাতাব উদ্দিন জোর করে নগরীর ভদ্রা, শিরোইল, রেলগেট, তালাইমারী ও বহরমপুর মোড় চারটি স্থানে অবৈধভাবে বাসস্ট্যান্ড গড়ে তুলেন। এসব বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রতি দিন অন্তত লাখ টাকা চাঁদা উঠানো হয়। বাস শ্রমিক ইউনিয়ন ও মালিক সমিতির নামে এ চাঁদা উত্তোলন হয়। এর নেপথ্যে ছিলেন ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহাতাব উদ্দিন। একসময় তিনি বাসের হেল্পার ছিলেন। এরপর শ্রমিক নেতা হয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান তিনি। নিয়ন্ত্রণ নেন গোটা বাসস্ট্যান্ডের। ফলে বছরের পর বছর ধরে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এসব বাস টার্মিনালগুলোর সামনে যাত্রী ওঠানো-নামানোর জন্য বাস দাঁড়িয়ে থাকে। এতে করে রাত-দিন যানজট লেগেই থাকে। গত প্রায় ১৫ বছর ধরে এসব টার্মিনাল চালু রয়েছে।
কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সোচ্চার থাকা নগরীর ব্যবসায়ী আরাফাত হোসেন রুবেল তাঁর ফেসবুকে লিখেন, ‘নগরীর ভদ্রা বাসস্ট্যান্ড নওদাপাড়া আন্তঃজেলা টার্মিনালে এবং শিরোইল বাসস্ট্যান্ড পুরনো টার্মিনালে সরানো হোক।’
সাইফুল ইসলাম নামের এক আন্দোলনকারী তার ফেসবুকে লিখেছেন, রাজশাহী নগরীর ৫টি অবৈধ বাসটার্মিনাল এখনই সরানোর উদ্যোগ নিতে হবে আমাদের। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি দ্রুত এই বাসটার্মিনালগুলো সরান। না হলে আমরা এগুলো সরাতে বাধ্য হবো।’
আশিফ ইকবাল নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘নগরীর ৫টি স্থানে রাস্তার ওপরে টার্মিনালের নামে বাস দাঁড় করিয়ে চরম অরাজোকতা সৃষ্টি করা হয়। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ে এতে করে। আবার অভিজাত পদ্মা আবাসিক এলাকার ভিতর দিয়ে চলাচল করে আন্তঃজেলা বাসগুলো। এসব অনিয়ম আর মেনে নেওয়া হবে না। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আমরাই এসব বাস টার্মিনাল বন্ধে পদক্ষেপ নিব।’
Leave a Reply