বিগত বছরগুলোর মতো চলতি বছরেও রমজান মাসে পবিত্র আল-আকসা মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারবেন ফিলিস্তিনি মুসল্লিরা। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর।
প্রতি বছর রমজান মাসে আল-আকসা মসজিদে নামাজ আদায় করতে আসেন লাখ লাখ মুসল্লি। তবে গত পাঁচ মাস ধরে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান এবং তার জেরে পশ্চিম তীর অঞ্চলে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী ও বসতকারীদের সঙ্গে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের সংঘাতের কারণে এ বছরের পরিস্থিতি খানিকটা ভিন্ন।
প্রথমত, এটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ, আমরা এখন এই ঝুঁকি নিতে পারি না। দ্বিতীয়ত, যেখানে আমাদের নারী ও শিশুরা গাজায় জিম্মি হিসেবে আটক রয়েছে, সেখানে (রমজান মাসের নামাজ আদায়ের মাধ্যমে) টেম্পল মাউন্টে হামাস তা উদযাপন করবে— এমনটাও আমরা হতে দিতে পারি না,’ কয়েক দিন আগে এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন বেন গিভির।
গত কাল প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর থেকে বিবৃতি দেওয়ার কিছু সময় পর পৃথক এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য রমজান একটি পবিত্র মাস। বিগত বছর গুলোর মতে এ বছরও এই মাসের পবিত্রতা অক্ষুন্ন রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে ইসরায়েল।’
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে সামরিক-বেসামরিক ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিকসহ ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় আরও ২৪০ জন ইসরায়েলি এবং অন্যান্য দেশের নাগরিককে।
১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে সেদিন প্রথম একদিনে এতজন মানুষের হত্যা দেখেছে ইসরায়েল। অভূতপূর্ব সেই হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী এবং তার এক সপ্তাহ পর বিমান বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।
অভিযানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩০ হাজার ৫৩৪ জন, আহত হয়েছেন আরও ৭১ হাজার ৯৮০ জন ফিলিস্তিনি। নিহত ও আহতদের মধ্যে একটি বড় অংশই নারী, শিশু, কিশোর-কিশোরী এবং বেসামরিক লোকজন।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যাপক প্রচেষ্টায় গত ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মানবিক বিরতি ঘোষিত হয়েছিল গাজায়। সে সময় ১০৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তার পরিবর্তে বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ১৫০ জন ফিলিস্তিনিকে ছেড়ে দিয়েছে ইসরায়েলও।
হিসেব অনুযায়ী, এখনও ১৩২ জন জিম্মি রয়েছেন হামাসের কব্জায়। তাদের ছাড়িয়ে আনতে গাজায় রমজান মাস শুরু হওয়ার আগেই দ্বিতীয় দফায় ৪০ দিনের যুদ্ধবিরতি হওয়ার কথা রয়েছে।
সূত্র : এএফপি, এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড
Leave a Reply