বেশ কিছুদিন ধরে বাংলাদেশের কাছে বোয়িং বিক্রির প্রস্তাব দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি এ নিয়ে বেশ তৎপর দেখা যাচ্ছে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে। সবশেষ গতকাল সোমবার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন হাস।
এ বিষয়ে আজ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বোয়িং কেনা-বেচার সঙ্গে বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া বা ভিসানীতির কোনো সম্পর্ক নেই।
দোহা সফর শেষে দেশে ফিরে মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এসময় বোয়িং সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বড় দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতরা সবসময় তাদের দেশের জিনিস কেনার জন্য রীতিমতো পিড়াপিড়ি করেন। এটা তাদের দায়িত্বের অংশ। আমরা এটা নিয়ে রাগ করছি না। আপনি গ্রহণ করলে ভালো, না করলেও সমস্যা নেই।
বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের আগে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বোয়িং কেনার ব্যাপারে দৌড়ঝাঁপের বিষয়ে মোমেন বলেন, মার্কিনিরা অনেক দিন ধরেই এটা আমাদের কাছে বিক্রি করতে চাচ্ছে। আমরাও কিছু কিনতে চাচ্ছি। কিন্তু আমাদের টাকার সমস্যা। তারা প্রস্তাব দিয়েছে। এদিকে আবার ব্রিটিশ সরকারও যুক্তরাজ্য থেকে ১০টা এয়ারবাস কেনার প্রস্তাব দিয়েছে। এর মধ্যে দুটি কার্গো আছে। টাকা-পয়সার অভাবে কিনতে পারছি না। কিন্তু আমাদের দরকার। ফ্রান্স, ইতালিও চায় বিক্রি করতে। আমাদের টাকা-পয়সা হলে কিনব।
কেনা-বেচার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা বা ভিসানীতির সম্পর্ক বা চাপ আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, কেনাবেচাটা নরমাল প্রসেস। তারা চাপ দেয় না, অনুরোধ করে। অনুরোধকে আমরা চাপ মনে করব কেন? আমরাও তো তাদের বলি এই কর, সেই কর। এটা কি তারা চাপ মনে করে? নো। এটা সিস্টেম। অনুরোধ করে তারা, আমরা নিলে ভালো, না নিলেও ক্ষতি নেই। তারা এবার বলছে, পয়সা কমিয়ে দেবে। এটা ভালো প্রস্তাব।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান সম্পর্ক নিয়ে যে কথা চালাচালি হচ্ছে সে বিষয়ে মোমেন বলেন, সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে না, এগুলো মিডিয়াতে চলছে। আপনারা ওদের ত্যক্ত করেন। আল্লার ওয়াস্তে ওদের ত্যক্ত করবেন না। এটা আমাদের খুব লজ্জা লাগে। বিদেশি একজন রাষ্ট্রদূত কোথাও গেলে তার প্রাইভেসি নষ্ট করেন। আমি এটা পছন্দ করি না।
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ছুটির প্রসঙ্গ টেনে ড. মোমেন বলেন, সেই ব্যটা ছুটিতে গেছে। সেখানেও আপনারা (গণমাধ্যম) বকবক করছেন। সে আমাদের বন্ধু। বন্ধু হলে ভালো-মন্দ বলবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অমুক স্যাংশন হচ্ছে, তমুক স্যাংশন হচ্ছে, এগুলো আপনারা বলেন। ওরা আমাদের এসব বলে না। আমরা আরও শক্ত সম্পর্ক গড়তে চাই। আমরা একটা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করব। তারাও চায় একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক। তার সঙ্গে তারা যুক্ত করেছে, সংঘাতহীন নির্বাচন। কিন্তু আমরা বলেছি, আমরা নিশ্চয়তা দিতে পারছি না।
মোমেন বলেন, আমরা মনে করি, আমেরিকার সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা খুব শক্ত। তারা বন্ধু বলেই আমাদের উপদেশ দেয়। তাই যেটা ভালো হয় সেটাই আমরা গ্রহণ করি। যেটা বাস্তব নয় সেটা আমরা গ্রহণ করি না। সেটার জন্য তারা রাগও করে না।
কোনো দল নির্বাচনে না আসা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, আমেরিকায় অনেক বড় বড় দল নির্বাচনে আসে না। এটা কোনো বিষয় না।
Leave a Reply