নাটোরের বাগাতিপাড়ায় বিয়ের দাবিতে প্রেমিক পুলিশ সদস্যের বাড়িতে অবস্থান করছেন ভুক্তভোগী এক কলেজ ছাত্রী। সোমবার সকাল থেকে এ অনশন শুরু করেন তিনি। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে উপজেলার পাঁকা-সোলইপাড়া গ্রামের প্রেমিক পুলিশ সদস্য রাজিকুল ইসলাম পাপ্পুর বাড়িতে।
তিনি ওই গ্রামের মোস্তফা ইসলামের ছেলে। আর ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রী একই এলাকার গালিমপুর গ্রামের বাসিন্দা। এদিকে বিয়ের দাবিতে প্রেমিক পাপ্পুর বাড়িতে অবস্থান করায় বাড়ির লোকজন ওই কলেজ ছাত্রীসহ তার মামিকে ব্যাপক মারধর করে মোবাইল ফোন কেঁড়ে নেয়া হয়। বর্তমানে তারা বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ভুক্তভোগী ওই তরুণী জানান, প্রায় নয় মাস আগে রাজিকুল ইসলাম পাপ্পুর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক রূপ নেয় দৈহিক সম্পর্কে। কয়েকদিন আগে বিয়ের জন্য চাপ দেন প্রেমিক পাপ্পুকে, কিন্তু তিনি বিয়েতে রাজি না হয়ে নানা টালবাহানা শুরু করেন।
যোগাযোগ বন্ধ করে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের দিয়ে টাকা দিয়ে আপসের চেষ্টা করেন। বাধ্য হয়ে সোমবার সকাল থেকে তিনি প্রেমিকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেন।
এক পর্যায়ে রাজিকুল ইসলাম পাপ্পু ফোন করে পরিবারের লোককে তাকে হত্যার নির্দেশ দেন, তখন তারা তাকে মেরে বাড়ি থেকে বের করে গেট বন্ধ করে দেন।
পরবর্তীতে গেটের সামনেই অনশন চালিয়ে যেতে থাকেন ওই তরুণী। খবর পেয়ে ভুক্তভোগীর মামি তাকে দেখতে গেলে মামিকেও আঘাত করেন তারা। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ভুক্তভোগী নবাব সিরাজউদ্দৌলা সরকারি কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অনার্স প্রথমবর্ষের ছাত্রী। অভিযুক্ত রাজিকুল ইসলাম পাপ্পু তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ সঠিক নয়, তিনিও আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে দাবি করেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান (ভার:) হেলাল উদ্দিন বিয়ের দাবিতে পুলিশের বাড়িতে প্রেমিকার অনশনের কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে আপোস মিমাংসা করার চেষ্টা করলেও এর সমাধান করতে না পারায়, মেয়েটা একরকম নিরুপায় হয়েই এমনটা করেছে বলে জানান তিনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সোহানুর রহমান বলেন, ভুক্তভোগী চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে গেলে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে আবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে বাগাতিপাড়া মডেল থানার ওসি শফিউল আযম খাঁন জানান, মারামারির ঘটনাটি শুনেছি। এ বিষয়ে কলেজছাত্রীর পক্ষে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন তার মামি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply