প্রবল শক্তি নিয়ে উপকূল অতিক্রম করছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। এর প্রভাবে বাগেরহাট উপকূলে সোমবার (২৭ মে) সকাল পর্যন্ত বৃষ্টি ও ঝড়ো হওয়া বয়ে যাচ্ছে। জেলার মোংলা, রামপাল, মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলাসহ বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে। বহু মানুষের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেসে গেছে চিংড়ির ঘের। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে সম্পূর্ণ বাগেরহাট জেলা।
রামপাল উপজেলার বাইনতলা চাকশ্রী গ্রামের চিংড়ি চাষি শেখ নূর ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে নদী ও খালে জোয়ারের পানি তিন থেকে চার ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। রাতে জোয়ারের পানির চাপে ঘেরের বাঁধ ভেঙে প্রায় এক লাখ টাকার চিংড়ি মাছ ভেসে গেছে।
মোড়েলগঞ্জ উপজেলার বারইখালি এলাকার আব্দুল্লাহ আল জিমি বলেন, বাতাসে আমাদের বাড়ির গাছ-গাছালি ভেঙে গেছে। এলাকা পুরো পানিতে তলিয়ে গেছে। আমার ঘরের ভিতরে প্রায় এক ফুট পানি এবং বাইরে তিন চার ফুট পানিতে তলানো। কাল রাতে আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েছিলাম কিন্তু ঘরবাড়ি রক্ষার জন্য আশ্রয়কেন্দ্র থেকে চলে এসেছি। রান্নাবান্না না করতে পেরে কাল রাত থেকে এখনো খাওয়া-দাওয়া হয়নি।
শরণখোলার তাফালবাড়ি এলাকার নাজমুল জানান, গতকাল রাত থেকে সকাল পর্যন্ত একটানা বাতাস হচ্ছে। এই বাতাসে আমাদের বেশ কিছু গাছ পড়ে গেছে। আমাদের এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কও পাওয়া যাচ্ছে না। সব মিলে আমরা খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি।
তাফালবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রাজিব বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আমার ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া গ্রামের একটি বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে ওই এলাকা তিন থেকে চার ফুট পানিতে প্লাবিত রয়েছে। সেখানকার মানুষরা অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে তবে এখনো অনেকে নিজেদের বাড়িঘরে অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এখনো প্রচণ্ড বাতাস ও বৃষ্টি হচ্ছে।
বাগেরহাটের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান বলনে, রোববার দুপুরের পর থেকে এ পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে দুর্যোগ পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply