প্রতিবারই শেষ সময়ে এসে বাণিজ্যমেলার সময় বাড়ানোর দাবি করা হয় ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে। এ বছর বিভিন্ন কারণে মেলার শুরুতে স্টল নির্মাণে দেরি হওয়া, শৈত্যপ্রবাহের কারণে লোক কম হওয়া, পাশাপাশি এ মাসে দুই দফা ইজতেমার কারণে ৬ দিন লোক সমাগম কম থাকায় ব্যবসায়ীদের দাবি তারা ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
সবকিছু বিবেচনায় মেলার সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন কেউ কেউ। বিগত বছরগুলোয় তিন থেকে সাত দিন পর্যন্ত বাণিজ্যমেলার সময় বাড়ানোর ইতিহাস থাকলেও এবার আয়োজক সংস্থা ইপিবি জানিয়েছে তার কোনো সুযোগ নেই। তাই নির্দিষ্ট সময়েই শেষ হচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা।
শনিবার (২৮ জানুয়ারি) মেলার পরিচালক ও আয়োজক সংস্থা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব ইফতেখার আহমেদ বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই মেলা শেষ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমেলার পরিচালক ও ইপিবির সচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, সার্বিকভাবে আমরা চেষ্টা করছি মেলাটা যেভাবে চলছে যাতে সফলভাবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে। আর সামনের দিনগুলোতে আমরা চেষ্টা করছি মানুষকে যেন আরো ভালো মেলা উপহার দিতে পারি। এবারের মেলা থেকে আমরা অনেক ধরনের অভিযোগ ও পরামর্শ পেয়েছি। সেগুলোকে ভালো করে বিবেচনা করে আরও নতুন কিছু সংযোজন করে মেলাটাকে কীভাবে আগামীতে আকর্ষণীয় করা যায় সেই চেষ্টা করছি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাণিজ্যমেলার সমাপনী অনুষ্ঠান হবে ৩১ জানুয়ারি বিকেল ৪টায়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। বিশেষ অতিথি থাকবেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি, এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
২৮ তম দিনে এসে বাণিজ্যমেলার সার্বিক পরিস্থিতি জানিয়ে ইপিবি সচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বাংলা নিউজকে বলেন, মেলার শেষ শুক্রবারে (২৭ জানুয়ারি) এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ সংখ্যক লোকসমাগম হয়েছে। শেষ শুক্রবার দেখে গতকাল প্রায় চার লাখ লোক বাণিজ্যমেলায় এসেছিলেন। আজও ইতোমধ্যে প্রায় দুই থেকে আড়াই লাখ লোক বাণিজ্যমেলায় এসেছেন। আশা করছি মেলার শেষ দিন পর্যন্ত এমন লোকসমাগম থাকবে। যদিও অনেক ব্যবসায়ী বলেছেন তাদের বেচাকেনা কম ছিল। তবে আমি মনে করি শেষ ১০ দিনে যে পরিমাণ লোক হয়েছে তাতে ব্যবসায়ীদের পুষিয়ে যাওয়ার কথা। শুক্রবারও প্রচুর বিক্রি হয়েছে। যারাই এসেছেন কিছু না কিছু কিনে নিয়ে গেছেন।
উল্লেখ্য, এবার নিয়ে দ্বিতীয়বার রাজধানীর পূর্বাচলে বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে (বিবিসিএফইসি) এ মেলার উদ্বোধন করেন। এতে দেশ-বিদেশের ৩৩১টি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মিনিপ্যাভিলিয়ন আছে, যা গত বছরের চেয়ে ১২৬টি বেশি। মেলার প্রবেশ ফি বড়দের জন্য ৪০ টাকা, আর শিশুদের জন্য ২০ টাকা।
মেলা প্রাঙ্গণে সাধারণ মানুষকে পৌঁছে দিতে বিআরটিসির পক্ষ থেকে ১৫০ শাটল বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ সার্ভিস তিনশ ফুট কুড়িল বিশ্ব রোড থেকে পূর্বাচল বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত যাতায়ত করছে। যা প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে মেলা শেষ হওয়া পর্যন্ত চলাচল করে। ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে জন প্রতি ৩৫ টাকা।
সূত্র : বাংলা নিউজ
Leave a Reply