আর একদিন পরেই শুরু হচ্ছে মধুমাস জ্যৈষ্ঠ। এই মাসে লিচুর মতো সুস্বাদু ফলে ভরে ওঠে বাজার।
তবে এই রসালো ফলের মৌসুম এখনও পুরোপুরি শুরু হয়নি। সপ্তাহখানেক পরে বাজারে আসবে পরিপক্ব লিচু। তবে এরই মধ্যে রাজধানীর বাজারগুলো ছেয়ে গেছে টক-মিষ্টি স্বাদের অপরিপক্ব লিচুতে।
মঙ্গলবার (১৪ মে) রাজধানীর ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজারে বেশ কয়েকটি দোকানে সবুজাভ ও হালকা লাল রঙের লিচু পাওয়া যাচ্ছে। তবে পুরোপুরি মৌসুমে পাওয়া লিচুর তুলনায় এগুলোর আকার কিছুটা ছোট। মান ও আকারভেদে প্রতি ১০০ লিচুর দাম চাওয়া হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। অনেক ক্রেতাকেই এসব লিচু কিনতে দেখা গেছে।
বিক্রেতাদের দাবি, এসব লিচু নাটোর, রাজশাহী, যশোর, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর থেকে আসে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে বাজারে পাওয়া বেশিরভাগ লিচুই আসছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও ও গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে। এছাড়া মাদ্রাজি জাতের এসব লিচুর বেশিরভাগই এখনও পরিপক্ব হয়নি। এই কথা বিক্রেতারাও স্বীকার করেছেন। যে কারণে এসব লিচুর স্বাদও টক-মিষ্টি।
জানা যায়, রাজশাহী, নাটোর ও দিনাজপুরের বোম্বাই ও বেদানা লিচু আরও এক সপ্তাহ পর বাজারে উঠবে। সেসব পরিপক্ব লিচুর আকার যেমন এখনকার তুলনায় বড় হবে, তেমনি স্বাদও মিষ্টি হবে। সেসব লিচুর রঙ হবে লাল। তবে পরিপক্ব লিচুর দাম এখনকার মতোই হবে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
ফার্মগেটের লিচু বিক্রেতা হিমেল বলেন, এখন যেসব লিচু বাজারে আছে সেগুলো পুরোপুরি মিষ্টি না। কিছুটা টক মিষ্টি স্বাদের। মিষ্টি লিচু সপ্তাহখানেক পরে আসবে।
কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা সোহান বলেন, বছরের প্রথম লিচু বাজারে উঠেছে। ক্রেতাও আছে মোটামুটি। আরও ১০ দিন পর আরও ভালো লিচু আসবে। তখন বিক্রিও বাড়বে।
রুবেল নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, সোনারগাঁও ও গাজীপুর থেকে লিচু আসছে। এগুলো একটু টক-মিষ্টি স্বাদের। দিনাজপুরের লিচু আরও পরে উঠবে। তবে তখন দাম ৩০০-৫০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। আর চায়না লিচুর দাম হতে পারে প্রতি ১০০ লিচু এক হাজার টাকা। এখন বাজারে এই ধরনের লিচু নেই। এটা আরও পরে উঠবে।
এদিকে, বাজারে এখনও পরিপক্ব লিচু না উঠলেও অনেক ক্রেতাকে পরিবারের জন্য অপরিপক্ব লিচু কিনতে দেখা যায়। আবার লিচু পরিপক্ব না হওয়ায় অনেক ক্রেতাকে সেগুলো কেনা থেকে বিরত থাকতেও দেখা যায়।
মো. খোকন সরদার নামের এক ক্রেতা বলেন, বছরের প্রথম লিচু উঠেছে। ঘরে ছোট মেয়ে আছে৷ তার জন্য বছরের প্রথম লিচু কিনলাম।
কারওয়ান বাজারে ফল কিনতে আসা সয়ন চন্দ্র দাসকে লিচু কেনা থেকে বিরত থাকতে দেখা যায়। তিনি বলেন, আমার বাড়ি দিনাজপুর। চাকরির সুবাদে ঢাকায় থাকি। বাজারে এখন যেসব লিচু উঠছে সেগুলো পরিপক্ব নয়। ঝড়ে ডাল ভেঙে যেসব লিচু পড়েছে, সেগুলোই বাজারে এনে বিক্রি করা হচ্ছে। আবার অনেক মুনাফালোভী বিক্রেতা কাঁচা লিচু বাজারে নিয়ে আসছেন। এগুলোর স্বাদ মিষ্টি নয়। এসব লিচু খেলে পেট ব্যথা হতে পারে। তাই অন্য ফল কিনছি।
Leave a Reply