1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : editor :
  3. [email protected] : moshiur :
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৪৮ পূর্বাহ্ন

বাঘায় ৮ চরের মানুষের নৌকা ছাড়ায় পায়ে হেঁটে পদ্মা পারাপার

মহানগর রিপোর্ট :
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৪
  • ৩৬ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

রাজশাহীর বাঘায় আট চরের মানুষ এখন পদ্মা নদী পায়ে হেঁটে পারাপার যাচ্ছে। গত চার মাস আগেও নৌকা দিয়ে পারাপার করতে হতো। এখন শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় নদীতে পানি নেই। মানুষ প্রয়োজনীয় কাজের জন্য পায়ে হেঁটে নদী পারাপার হচ্ছে। এমন দৃশ্য দেখা যায় প্রায় প্রতিদিনই উপজেলার সড়কঘাট এলাকার পদ্মা নদীর ঘাটে।

জানা যায়, উপজেলার পদ্মার মধ্যে চকরাজাপুর ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের ৮টি চরে প্রায় ১৮ হাজার মানুষের বসবাস। এই চরের মানুষ বর্তমানে পায়ে হেঁটে পারাপর হয়। বর্ষা মৌসুমে তারা পানিবন্দী হয়ে যায়। এ সময়ে শত শত একর জমির ফসল পানির নিচে তলিয়েও যায়। একই সাথে অসময়ে তীব্র নদী ভাঙনের ফলে অনেক পরিবার গৃহহীন হয়ে পয়েছে।

বর্ষা মৌসুমে নদী পারাপারে একমাত্র ভরসা নৌকা। প্রতিবছর খরস্রোতা পদ্মা নদী পারাপারে নৌকা ডুবিতে একাধিক ব্যক্তি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। চলতি শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পানি না থাকায় খরস্রোতা পদ্মা এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে।

গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলার সড়কঘাটে দেখা যায়, লোকজন পায়ে হেঁটে নদী পারাপার হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে এই ঘাটে প্রতিদিন নৌকা যোগে শত শত লোক নিত্য প্রয়োজনী জিনিস পত্রসহ নদী পারাপার হতো।

পাকুড়িয়া ইউনিয়নের জোতকাদিরপুর গ্রামের নারী শ্রমিক সোনাভান বেগম, আনেরা বেগম, জামেনা বেগম, আনেমা বেগম পায়ে হেঁটে নদী পার হচ্ছে। এ সময় তারা বলেন, পদ্মার চরে প্রচুর পরিমান পেঁয়াজের আবাদ হয়। পেঁয়াজ তোলা কাজ করে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছি। প্রতিমণ পেঁয়াজের পাতা কাটলে ৭০ টাকা দেন। এরমধ্যে আনেরা বেগম ৫ মণ পেঁয়াজের পাতা কেটেছেন। তিনি রোজগার করেছেন ২৫০ টাকা। তার স্বামী জমির উদ্দিন অসুস্থ্য। কোন কাজ করতে পারেনা। ছেলেরা বিয়ে করে অন্যত্রে চলে গেছে। ফলে নিরুপায় হয়ে পড়েছি। পেট আছে খেতে হবে। প্রতিদিন সকালে পদ্মা নদী পায়ে হেঁটে পার হয়ে পেঁয়াজের পাতা কাটার কাজ করি।

আরেক নারী শ্রমিক সোনাভান বেগম বলেন, নিয়মিত যাতায়াত করি। কিছুদিন আগেও নৌকায় করে যাতায়াত করতে হতো। এখন নদীতে পানি নেই, তাই পায়ে হেঁটে গিয়ে কাজ করে বাড়ি আসছি।

কালদাসখালী চরের গোলাম মোস্তফা বলেন, প্রতি বছর খরস্রোত পদ্মা উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি করে যাচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে বন্যাসহ নদী ভাঙনে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভারে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। ফলে উভয় সংকটে পড়তে হয়েছে।

চকরাজাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, এক সময় প্রমত্ত পদ্মার গর্জনে মাঝি মাল্লারা সাহস পায়নি নৌকা চালাতে। এমনকি জেলেরা সাহস পায়নি মাছ ধরা নৌকা চালাতে। শুধু তাইনা, অনেক সময় পদ্মার বিশাল ঢেউ আর ভয়ঙ্কার গর্জনের মুখে নৌকা চলতে সাহস পায়নি। কিন্তু কালের আবর্তনে সেই প্রমত্ত পদ্মা এখন শুকিয়ে শীর্ণ একটি খালে পরিণত হয়েছে। পদ্মার বুক জুড়ে জেগে উঠেছে ধুধু বালুচর ও ফসলের মাঠ।

চকরাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাবলু দেওয়ান বলেন, সড়কঘাটের খেয়াঘাট থেকে চকরাজাপুর দূরত্ব প্রায় ৪ কি.মি। ২ মাস আগেও হাজার হাজার চরের মানুষ ব্যবসা বাণিজ্যসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে এ খেয়া ঘাট থেকে নৌকাযোগে পদ্মা নদী পার হয়ে উপজেলা সদরে যাতায়াত করতেন। মাত্র ২ মাসের ব্যবধানে পদ্মা শুকিয়ে ধুধু বালু চরে পরিণত হয়েছে। ফলে এলাকাবাসীকে পদ্মার চর পায়ে হেঁটে পারাপার হচ্ছে।

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: সিসা হোস্ট