শক্তিশালী ঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাতের পর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় বন্যা ও ভূমিধসের সৃষ্টি হয়েছে। বিপর্যয়কর এই আবহাওয়ায় কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন এবং আরও কয়েকজনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্যালিফোর্নিয়াজুড়ে শক্তিশালী ঝড়, বন্যা, ভূমিধস এবং বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। এছাড়া ঝড়ের জেরে গাছ পড়ে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। ঝড় শুরু হওয়ার পর থেকে দমকলকর্মীরা ১৩০ টিরও বেশি বন্যা সম্পর্কিত ঘটনায় সাড়া দিয়েছে এবং বেশ কয়েকটি উদ্ধারকাজ পরিচালনা করেছে।
দুই সপ্তাহের মধ্যে এ নিয়ে দ্বিতীয় বায়ুমণ্ডলীয় নদী ক্যালিফোর্নিয়ায় আঘাত হানল। কর্মকর্তারা লস অ্যাঞ্জেলেসসহ দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার কিছু পাহাড়ি এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার আদেশ জারি করেছেন। এছাড়া মেয়রও জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।
লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন বাস সোমবার বলেছেন, ‘নিরাপদে থাকুন এবং রাস্তা থেকে দূরে থাকুন, এটি এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যদি একেবারেই জোরালো কোনও প্রয়োজন হয় তবেই আপনারা বাড়ি ছেড়ে বাইরে যাবেন।’
এদিকে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের আটটি কাউন্টিতে জরুরি অবস্থাও ঘোষণা করেছেন গভর্নর। ঝড়ের মধ্যে গাছ পড়ে তিনজন লোক মারা গেছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এর মধ্যে স্যাক্রামেন্টো উপত্যকায় এক ব্যক্তি গাছ চাপায় এবং সান্তা ক্রুজ কাউন্টিতে বাড়ির ওপর গাছ আছড়ে পড়ার পর অন্য আরও একজন মারা যান।
বিবিসি বলছে, ঝড় ও বৃষ্টির পর ভূমিধস ও ধ্বংসাবশেষ প্রবাহিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গত রোববার ঘরবাড়ির ভেতর দিয়ে কাদার স্রোত প্রবাহিত হওয়ার পর ১৬ জন বাসিন্দাকে তাদের হলিউড হিলসের বাড়ি থেকে বের করে আনা হয়। কাদার স্রোতে ভবনগুলো কার্যত তাদের ভিত্তি থেকে ছিটকে পড়ে এবং গ্যাস লাইনও ফেটে গিয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা ধ্বংসাবশেষের মধ্যে রাস্তায় রেফ্রিজারেটর এবং পিয়ানোর মতো জিনিসও প্রবাহিত হতে দেখেছেন বলে জানিয়েছেন। লস অ্যাঞ্জেলেসের আপমার্কেট বেল এয়ার এবং বেভারলি হিলস পাড়ায়ও ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
এছাড়া লস অ্যাঞ্জেলেস এবং সান বার্নার্ডিনো কাউন্টিতে বন্যায় আটকে পড়া গাড়ি চালকদের উদ্ধারে কাজে নামতে হয় উদ্ধারকারীদের।
সান বার্নার্ডিনো কাউন্টির দমকল বিভাগের তথ্য অনুসারে, সোমবার ভোরে একজন বাবা, মা এবং মেয়ে তাদের গাড়ি থেকে নামতে এবং ক্রমবর্ধমান বন্যার পানি থেকে বাঁচতে গাছে উঠতে বাধ্য হয়েছিলেন।
এদিকে ঘণ্টায় ৭০ মাইল (১১২ কিলোমিটার) বেগে শক্তিশালী বাতাসের কারণেও বহু বাড়িঘর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়েছে এবং গাছ ভেঙে পড়েছে। যদিও সোমবার রাতের মধ্যে দমকা হাওয়া উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply