কথিত এক বিকাশ কর্মকর্তার প্রতারণার ফাঁদে পড়েছিলেন চিত্রনায়িকা প্রার্থনা ফারদিন দীঘি। নিজের বিকাশ অ্যাকাউন্ট নম্বর থেকে হারান দেড় লক্ষাধিক টাকা।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে গিয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের হাত থেকে উদ্ধার হওয়া টাকা বুঝে নেন দীঘি। এ সময় সঙ্গে ছিলেন তার বাবা অভিনেতা সুব্রত বড়ুয়া ও মামা ভিক্টর।
অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, গত শনিবার দীঘির মোবাইল ফোনে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে কল আসে। ওই ব্যক্তি নিজেকে বিকাশ অফিসের কর্মী দাবি করেন। বিকাশ অ্যাকাউন্ট ব্লক হওয়ার তথ্য জানিয়ে ঠিক করে দেওয়ার নামে দীঘির কাছে একটি ওটিপি নম্বর চাইলে সরল মনে সেটা দিয়ে দেন অভিনেত্রী।
এর কিছুক্ষণ পরই বিকাশ অ্যাকাউন্টের ব্যালান্স চেক করলে দীঘি দেখতে পান, তার অ্যাকাউন্ট থেকে এক লাখ ৬২ হাজার টাকা উধাও। পরে তিনি শেরেবাংলা নগর থানা ও ডিবিতে অভিযোগ করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে দুই প্রতারককে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার হয় হাতিয়ে নেওয়া টাকা।
ডিবিপ্রধান হারুন আরও বলেন, একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্যরা ব্যক্তির অজান্তে ভুয়া রেজিস্ট্রেশন করা সিম ব্যবহার করে। সিমগুলো দিয়ে বিকাশ বা নগদ কাস্টমার কেয়ারের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে কৌশলে টার্গেট করা ব্যক্তিকে ফোন কল করে তার বিশ্বাস অর্জন করে।
এরপর বিভিন্ন কথা বলার পর অবৈধভাবে টার্গেট ব্যক্তির বিকাশ নম্বরে লগইন করার জন্য তার নম্বরে ওটিপি পাঠিয়ে দেয় এবং টার্গেট ব্যক্তিকে তার মোবাইলে যাওয়া ওটিপি বলার জন্য অনুরোধ করে। নায়িকা দীঘি সরল বিশ্বাসে এবং তার বিকাশ অ্যাকাউন্ট সচল করা বা অন্য কোনো আশায় তার মোবাইলে আসা ওটিপি বলে দেয়।
এরপর প্রতারক চক্র দীঘির অ্যাকাউন্টে লগইন করে ভুয়া নামে বিকাশ রেজিস্ট্রেশন করা নম্বর দিয়ে টাকা তুলে নেয়। পরবর্তী সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ওই টাকা নগদ উত্তোলন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করে। এভাবে দেশের অসংখ্য সাধারণ মানুষ এসব চক্রের প্রতারণার শিকার হচ্ছে বলেও জানান ডিবিপ্রধান।
এ ঘটনার সঙ্গে গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।
ডিবি কার্যালয় থেকে বের হয়ে দীঘি সাংবাদিকদের বলেন, বিকাশের নির্দিষ্ট নম্বর থেকে একটি কল আসে। আমার বিকাশ নম্বর বন্ধ করে দেওয়ায় আমি ওই কলে অনেকক্ষণ ধরেই কথা বলি। এক সময় সে আমার ওটিপি নম্বর চায়। আমি ভেবেছিলাম, পিন নম্বর না দিলে সে আমার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে পারবে না। আমি শুটিংয়ের কাজে ও স্ক্রিপ্ট নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। তাই মাথা তেমন কাজ করেনি। এরপর দেখি অ্যাকাউন্ট থেকে দেড় লাখ টাকা নেই। প্রতারণাকারীকে আমার পরিচয় দিয়েছিলাম।
Leave a Reply