1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : editor :
  3. [email protected] : moshiur :
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৭:০৪ অপরাহ্ন

পাহাড়ে শান্তি কেড়ে নিয়েছে কেএনএফ, কঠোর পদক্ষেপ চান স্থানীয়রা

মহানগর রিপোর্ট :
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৪
  • ১০০ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

দেশের তিন পার্বত্য জেলায় আতঙ্কের নাম—‘কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট’ বা (কেএনএফ)। সম্প্রতি বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকের তিনটি ব্রাঞ্চে নজিরবিহীন ডাকাতির ঘটনা ঘটায় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনটি। এরপর থেকেই কেএনএফকে নিয়ে পাহাড়ে চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে। 

সম্প্রতি ব্যাংক ডাকাতি ও থানায় হামলার ঘটনায় কেএনএফ—এর তাণ্ডব প্রকাশ্যে আসে। এর পর থেকে এসব এলাকায় চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছেন বলেও জানা গেছে।

 

মুঠোফোনে রুমা উপজেলার ১নং পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উহ্লামং মার্মা বলেন, কেএনএফের কারণে রুমা উপজেলায় আগে থেকেই শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্ট হয়ে আছে। তাদের অত্যাচারে অনেক আগে থেকেই ঘর ছাড়া অনেক মানুষ। এখন আবার নতুন করে তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের কারণে ঘর ছেড়ে আরও মানুষ পালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের কারণে আমি নিজেও এলাকা ছাড়া।

তিনি বলেন, তাদের সঙ্গে শান্তি আলোচনা করে কোনো লাভ হবে না। গত কয়েক দিনের ঘটনার পর মনে হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে এখন সরকারের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। আমার এলাকায় মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।

চাঁদাবাজি থেকে ব্যাংক লুটে কেএনএফ

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরে কেএনএফ রুমা ও থানচির বিভিন্ন উপ-জাতি গোষ্ঠীর কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা নিয়ে আসছে। এছাড়া এসব এলাকায় কোনো ব্যবসা করতে গেলেও তাদের চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা না দিলে তারা অপহরণ করে নিয়ে যায়। তখন মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে আনতে হয়। এবার তারা চাঁদাবাজির পাশাপাশি ব্যাংক লুটও শুরু করেছে।

কেএনএফ নিয়মিত পাহাড়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। চাঁদাবাজিসহ অপহরণ কেএনএফের নিত্যদিনের কার্যক্রম। সর্বশেষ তারা রুমা ও থানচিতে ব্যাংক লুট করেছে এবং থানায় হামলা করেছে

রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহ্লাঅং বলেন, কেএনএফের কারণে কথা বলতেও আমাদের এখন ভয় হয়। তারা বান্দবানের সুখ শান্তি কেড়ে নিয়েছে। তাদের চাঁদাবাজির কারণে এলাকায় কেউ ব্যবসা করতে পারে না। টাকা না দিলে মারধর করে কিংবা অপহরণ করে। এখন তারা আবার ব্যাংক লুটে নেমেছে। দিন দিন তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম বৃদ্ধি পাচ্ছে।

 

 

জেলার মানবাধিকার কর্মী উচিংমং মারমা বলেন, কেএনএফের কারণে পাহাড়ি গ্রামের মানুষজন অনেক সমস্যায় আছে। নিয়মিত চাঁদাবাজির কারণে গ্রামের মানুষ অতিষ্ঠ। তারা এত দিন চাঁদাবাজি করে সংগঠনের খরচ চালাতো। তারা এখন ব্যাংক লুট করা শুরু করেছে।

কেএনএফ-কে শ্রীলঙ্কার তামিল বিদ্রোহীদের মতো দমন করা উচিত   

শ্রীলঙ্কার বিদ্রোহী সংগঠন তামিল টাইগারদের মতো কেএনএফকে দমন করা উচিত বলে মনে করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের সভাপতি কাজী মুজিবুর রহমান।

তিনি বলেন, কেএনএফ শুধু সন্ত্রাসী নয়, তারা পাহাড়ি কয়েকটি উপ-জাতি সম্প্রদায়কে নিয়ে আলাদা একটি রাষ্ট্র গঠন করতে চায়। তাই তাদেরকে সরকারের উচিত শক্তভাবে দমন করা। শ্রীলঙ্কার তামিল বাহিনীর মতো তাদেরও নির্মূল করতে হবে। তোষামোদ করে পৃথিবীর কোথাও শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়নি। গত ২৬ বছর ধরে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আলোচনা করে কোনো শান্তি আসেনি। সরকারের এখন সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার শক্ত হাতে তাদের দমন করার। সেনা সদস্যসহ পুলিশকে হত্যা করা হয়, ব্যাংক লুট করা হয় কিন্তু  স্থানীয় রাজনীতিবিদরা চুপ কেন। তাহলে তারা কি সন্ত্রাসীদের লালন করেন।

তিনি বলেন, কেএনএফকে দমনে পাহাড়ে সেনাবাহিনীর বিকল্প নেই। পাহাড়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনা সদস্যদের উপস্থিতি আরও বাড়ানো এখন সময়ের দাবি। সেনাবাহিনীকে ছাড়া পুলিশ কিংবা অন্য কোনো বাহিনীর পক্ষে এসব অপ-তৎপরতা বন্ধ করা সম্ভব নয়। পাহাড়ের শান্তি শৃঙ্খলার জন্য সেনাবাহিনীর আরও ক্যাম্প প্রয়োজন।

 

কারা এই কেএনএফ

গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, কেএনএফের লোগোতে প্রতিষ্ঠাকাল ২০০৮ লেখা থাকলেও ২০১৮ সালে সংগঠনটির সন্ত্রাসী কার্যক্রম সবার নজরে আসে। সর্বশেষ গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে পাহাড়ে সংগঠনটির সন্ত্রাসী কার্যক্রমের ভয়াবহতা বাড়তে থাকে। এর পর থেকে সংগঠনটির বিরুদ্ধে খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে। সংগঠনটি পার্বত্য অঞ্চলের প্রায় অর্ধেক আয়তনের অঞ্চলকে নিয়ে বেআইনি ও মনগড়া মানচিত্র তৈরি করেছে। তাদের এই কল্পিত মানচিত্রের তিন পাশে রয়েছে বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও ভারতের সীমান্ত। বান্দরবান পাহাড়ের বম, পাঙ্খুয়া, খুমি, ম্রো এবং খিয়াং নামক ক্ষুদ্র ছয়টি জাতি-গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠন হয়েছে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফ। কেএনএফ প্রধানের নাম হলো নাথান বম।

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: সিসা হোস্ট