হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের দেশ নেপালে ৬ দশমিক ৪ মাত্রার এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে অন্তত ৭০ জনের নিহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেয়েছে, সেই সঙ্গে আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
শুক্রবার গভীর রাতের দিকে হওয়া এই ভূমিকম্পের কম্পণ ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতেও অনুভূত হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এনডিটিভি। নেপালের সীমান্ত থেকে নয়াদিল্লির দূরত্ব প্রায় ৮০০ কিলোমিটার।
নেপালের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র শনিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ২৫০ মাাইল উত্তরপূর্বে অবস্থিত জাজারকোট জেলা ছিল এই ভূমিকম্পের এপিসেন্টার বা উৎপত্তিস্থল। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতত্ব জরিপ সংস্থা তাদের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছে— ভূপৃষ্ঠের ১১ মাইল গভীরে উৎপত্তি হয়েছে এ ভূমিকম্পের।
ভূমিকম্পে নেপালের হাজার হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বহু অঞ্চল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দেশটির পার্বত্য জেলা পশ্চিম রুকুমের জেলা প্রশাসক হরি প্রসাদ পন্ত ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, একক জেলা হিসেবে ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি নিহতের ঘটনা ঘটেছে তার জেলায়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে থাকা সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিম রুকুমের বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ৩৬ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সরকারি বাহিনীর উদ্ধার তৎপরতা চলছে এবং মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।’
ভূমিকম্পের এপিসেন্টার জাজারকোট জেলার বিভিন্ন গ্রাম ও শহর থেকে এখন পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাজারকোটের জেলা প্রশাসক হরিশ চন্দ্র শর্মা।
মার্কন বার্তা সংস্থা এপি নিউজকে তিনি বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের কর্মীদের সঙ্গে স্থানীয় পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তারাও ধ্বংসস্তুপ থেকে নিহত ও আহতদের উদ্ধারে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু ভূমিকম্পের জেরে অনেক এলাকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া ও ধ্বংসস্তূপের কারনে রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রত্যন্ত অনেক অঞ্চলে এখনও পৌঁছাতে পারেননি দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের কর্মী ও পুলিশ সদস্যরা।
‘হিমালয় কন্যা’ নামে পরিচিত নেপালে ভূমিকম্প প্রায় নিয়মিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ২০১৫ সালে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার এক ভূমিকম্পে নেপালে নিহত হয়েছিলেন অন্তত ৯ হাজার মানুষ এবং প্রায় ১০ লাখ বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
সূত্র : এনডিটিভি, এপি
Leave a Reply