সংসদ নির্বাচনে যেসব প্রার্থীর মনোনয়ন নির্বাচন কমিশনের যাচাই-বাছাইয়ে বাতিল হয়েছে তারা আজ দ্বিতীয় দিনের মতো আপিল করার সুযোগ পাচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা সকাল থেকেই ভিড় করেছেন ইসি ভবনের সামনে। তবে ভেতরে নিরাপত্তা স্বার্থে প্রার্থীর সঙ্গে দুজন অর্থাৎ মোট তিনজনের বেশি প্রবেশ করতে পারছেন না। ভেতরে প্রবেশের দুটি ফটকেই করা হয়েছে নিরাপত্তার কড়াকড়ি। যারা ভেতরে প্রবেশ করতে চাচ্ছেন সবার ব্যাগ ও দেহ তল্লাশি করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ইসি ভবনে জনসাধারণের প্রবেশও সীমিত করা হয়েছে।
>> ২ নম্বর বুথটি করা হয়েছে রাজশাহী অঞ্চলের জন্য। যেখানে জয়পুরহাট, বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, রাজশাহী নাটোর, সিরাজগঞ্জ এবং পাবনা জেলার প্রার্থীরা আপিল দায়ের করছেন।
>> ৩ নম্বর বুথটি করা হয়েছে খুলনা অঞ্চলের জন্য। যেখানে মেহেরপুর, কুষ্টিয়া চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, যশোর মাগুরা, নড়াইল, বাগেরহাট খুলনা এবং সাতক্ষীরা জেলার প্রার্থীরা আপিল দায়ের করছেন।
>> 8 নম্বর বুথটি করা হয়েছে বরিশাল অঞ্চলের জন্য। যেখানে বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, ঝালকাঠি এবং পিরোজপুর জেলার প্রার্থীরা আপিল দায়ের করছেন।
>> ৫ নম্বর বুথটি করা হয়েছে ময়মনসিংহ অঞ্চলের জন্য। যেখানে টাঙ্গাইল, জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা এবং কিশোরগঞ্জ জেলার প্রার্থীরা আপিল দায়ের করছেন।
>> ৬ নম্বর বুথটি করা হয়েছে ঢাকা অঞ্চলের জন্য। যেখানে মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ঢাকা, গাজীপুর, নরসিংদী এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার প্রার্থীরা আপিল দায়ের করছেন।
>> ৭ নম্বর বুথটি করা হয়েছে ফরিদপুর অঞ্চলের জন্য। যেখানে রাজবাড়ী, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর এবং শরীয়তপুর জেলার প্রার্থীরা আপিল দায়ের করছেন।
>> ৮ নম্বর বুথটি করা হয়েছে সিলেট অঞ্চলের জন্য। যেখানে সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার এবং হবিগঞ্জ জেলার প্রার্থীরা আপিল দায়ের করছেন।
>> ৯ নম্বর বুথটি করা হয়েছে কুমিল্লা অঞ্চলের জন্য। যেখানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী এবং লক্ষ্মীপুর জেলার প্রার্থীরা আপিল দায়ের করছেন।
>> আর সবশেষ ১০নম্বর বুথটি করা হয়েছে চট্টগ্রাম অঞ্চলের জন্য। যেখানে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি এবং বান্দরবান জেলার প্রার্থীরা আপিল দায়ের করছেন।
আপিল করতে আসা প্রার্থীদের মানতে হচ্ছে যেসব নির্দেশনা
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রার্থীদের জন্য দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু নিয়ম। সেসব মেনেই প্রার্থীদের আপিল কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হচ্ছে। নির্বাচনী আপিল দায়েরের জন্য আপিলকারীর জন্য নির্দেশিত সাধারণ নির্দেশাবলী গুলোহলো—
এক.
ঘোষিত তফসিল মোতাবেক ৫-৯ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে নির্ধারিত বুথে আপিল দায়ের করতে হবে।
দুই.
আপিল দায়েরের ক্ষেত্রে আইনে বর্ণিত নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ করে (স্মারকলিপি আকারে) বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনকে সম্বোধন করে ৭ সেট আপিল আবেদন (১ সেট মূলকপি এবং ৬ সেট ছায়ালিপি) দাখিল করতে হবে।
তিন.
দাখিল করা আপিল আবেদনের সঙ্গে অবশ্যই রিটার্নিং অফিসারের দেওয়া সার্টিফাইড কপির মূলকপিসহ আপিল দায়ের সংক্রান্ত সকল প্রকার কাগজপত্র (১% ভোটার তালিকা, ঋণ খেলাপি, হলফনামা, দলীয় মনোনয়ন সংক্রান্ত কাগজপত্র যার জন্য যেটা প্রযোজ্য) প্রত্যেক আপিল আবেদন সেটের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। অন্যথায়, নির্বাচন কমিশনে শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে না।
চার.
আপিলের ক্রমানুযায়ী নির্ধারিত তারিখে সম্মেলন কক্ষে (বেজমেন্ট-২) নির্বাচন কমিশন কর্তৃক শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এই শুনানিতে প্রার্থী এবং প্রার্থীর পক্ষের আইনজীবী ব্যতীত কোনো জনসাধারণ থাকতে পারবেন না।
পাঁচ.
দায়ের করা আপিলসমূহের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছে পাঠানো হবে এবং নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটেও (www.ecs.gov.bd) প্রকাশ করা হবে। এছাড়া আপিলের ফল নির্বাচন ভবনের সামনে প্রদর্শিত মনিটরে প্রদর্শন করা হবে৷ একইসাঙ্গে রায়ের পিডিএফ কপি রিটার্নিং অফিসার ও সংশ্লিষ্ট পক্ষের ই-মেইল একাউন্টে পাঠানো করা হবে।
ছয়.
আপিলের রায়ের অনুলিপি উত্তোলনের জন্য নির্ধারিত ফরম সংগ্রহ করে সেটি যথাযথভাবে পূরণ করে নির্বাচন কমিশনের অভ্যর্থনা ডেস্কে জমা দিতে হবে। নামঞ্জুর আপিলের রায়ের অনুলিপি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রদান করা হবে।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে সারা দেশে প্রার্থীদের জমা দেওয়া মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষ হয়েছে গত সোমবার (৪ ডিসেম্বর)। সারা দেশে ১৯৮৫ জন প্রার্থীকে বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে ৭৩১ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র।
Leave a Reply