বিপুল পরিমাণ টাকা, ডলার ও স্বর্ণালংকারসহ বরিশাল নগর থেকে শিক্ষার্থীদের হাতে আটক হয়েছেন পটুয়াখালী গণপূর্ত দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বিকেলে তাকে নগরের চৌমাথা থেকে শিক্ষার্থীরা আটক করে বলে জানান নির্বাহী হাকিম আশরাফুজ্জামান পলিন।
আটক নির্বাহী প্রকৌশলী হলেন- মো. হারুন অর রসিদ। তিনি পটুয়াখালী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী।
হারুন কুষ্টিয়ার মো. হাবিবুর রহমানের ছেলে।
শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব বলেন, নগরের সিঅ্যান্ডবি রোড হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা এলাকায় যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলায় নিয়োজিত রয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সাড়ে ৪টার দিকে পটুয়াখালী থেকে একটি প্রাইভেটকার আসে। প্রাইভেটকারটি থামানোর পর স্থানীয়দের সন্দেহ হয়।
তখন প্রাইভেটকারের পেছনের ব্যারিয়ার খোলার পর কালো রঙের একটি ব্যাগ পাওয়া যায়। ব্যাগের মধ্যে কিছু টাকা পাওয়া যায়। তখন প্রকৌশলীর স্ত্রী বলেন, ওটা আমাদের পার্সোনাল টাকা। কিন্তু আস্তে আস্তে আরও টাকা বের হচ্ছিল। পরে আর্মিকে খবর দেওয়া হয়। সেনাবাহিনী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এলে তাদের কাছে দেওয়া হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুজ্জামান পলিন বলেন, পটুয়াখালী গণপূর্ত দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হারুন অর রসিদের গাড়িতে টাকা, ডলার ও স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে। টাকা সম্পর্কে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। পরে গাড়িসহ তাদের কোতোয়ালি মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে টাকা ও স্বর্ণালংকার পরিমাণ নিরূপণ করা হয়।
শিক্ষার্থীদের কাছে আটক হওয়ার পর নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রসিদ জানান, তার বাড়ি কুষ্টিয়ায়। তার বাবা বুধবার (৭ আগস্ট) অ্যাকসিডেন্ট করেছেন। তাকে চিকিৎসার জন্য টাকা নিয়ে কুষ্টিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
এদিকে টাকার পরিমাণ কত জানতে চাইলে হারুন অর রসিদ বলেন, ২০ লাখ টাকার মতো হবে। এছাড়া স্ত্রীর কিছু অর্নামেন্টস রয়েছে বলে দাবি করেন।
তবে রাতে থানায় গণনা শেষে বিএনসিসি’র সুন্দরবন রেজিমেন্টের (সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ) সুজন হোসেন জানান, তার কাছে বাংলা টাকায় ২৭ লাখ টাকা ও ১২ লাখ টাকা মূল্যের ডলারসহ মোট ৩৯ লাখ টাকা পাওয়া গেছে। এছাড়া প্রায় এক কেজির মতো অলংকার রয়েছে। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।
যদিও কর্মবিরতিতে থাকায় কোতোয়ালি মডেল থানার কোনো পুলিশ কর্মকর্তা এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেননি। তবে ১০ হাজার ডলারসহ প্রায় ২৬ লাখ টাকা ওই প্রকৌশলীর গাড়ির ভেতরে থাকা ব্যাগে তল্লাশি করে পাওয়া গেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন তারা। সেইসঙ্গে স্বর্ণালংকারের মধ্যে সব স্বর্ণের নয় বলে জানিয়েছেন প্রকৌশলীর স্ত্রী।
সরেজমিনে দেখা গেছে, একটি প্রাইভেটকারে (ঢাকা মেট্রো গ ৩৫ – ৪৬৬৪) প্রকৌশলী ছাড়াও তার স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে, গৃহপরিচারিকা ও চালক রয়েছেন। তাদের নাম জানতে চাইলে কোনো কিছু প্রকাশ করেননি। তবে এক পর্যায় চালক বলেন, তার নাম আলতাফ। প্রকৌশলীর স্ত্রীর নাম সুমা। প্রাইভেটকারটি ভাড়ার। আবার প্রকৌশলীর ছেলে নাম না বললেও প্রাইভেটকার তাদের বলে স্বীকার করেছেন।
Leave a Reply