ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হামাসের হামলায় আরও ৫ ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন। উপত্যকাটির দক্ষিণাঞ্চলে স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র এই গোষ্ঠীটির যোদ্ধাদের অতর্কিত হামলায় প্রাণ হারান তারা।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিস শহরে হামাস যোদ্ধাদের অতর্কিত হামলায় পাঁচ ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে বলে সোমবার সেনাবাহিনী জানিয়েছে।
এক সামরিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর ৫ম ব্রিগেডের ৮১১১তম ব্যাটালিয়নের সৈন্যরা শহরের একটি স্কুলের কাছে বিস্ফোরক ডিভাইসের বিস্ফোরণে নিহত হয়।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মতে, স্কুল থেকে গুলি চালানো ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর জন্য একপর্যায়ে হেলিকপ্টার গানশিপ এবং যুদ্ধবিমানকে ডাকা হয়।
এছাড়া গত ৭ অক্টোবর গাজা সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ৪৩৩ সেনা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
এছাড়া গত রোববার গাজায় আরও তিন ইসরায়েলি সেনার মৃত্যু হয়। এরমাধ্যমে স্থল অভিযান শুরুর পর নিহত সেনার সংখ্যা একশ ছাড়িয়ে যায়। গত কয়েকদিনে যেসব সেনা মারা গেছেন তাদের বেশিরভাগেরই মৃত্যু হয়েছে গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসে। সেখানে বর্তমানে স্থল অভিযান চালাচ্ছে দখলদার ইসরায়েলি সেনারা।
আইডিএফের তথ্য অনুযায়ী, স্থল অভিযানে অংশ নিয়ে শতাধিক সেনা নিহত হওয়ার পাশাপাশি ছয়শ সেনা আহত হয়েছে।
এর আগে গত শনিবার ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ডেইলি ইয়েদিয়োত আহরোনোত জানায়, যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৫ হাজার সেনা আহত হয়েছেন। যারমধ্যে ৫৮ শতাংশ (তিন হাজার সেনা) হাতে-পায়ে গুরুতর জখম হয়েছেন।
সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়, প্রতিরক্ষা বাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে দুই হাজার সেনাকে ‘বিকলাঙ্গ’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
মাঝে হামাসের সাথে এক সপ্তাহব্যাপী মানবিক বিরতির পর গাজা উপত্যকায় পুনরায় বিমান ও স্থল হামলা শুরু করে ইসরায়েল। বিরতির পর শুরু হওয়া এই অভিযানে গাজায় হামলা আরও তীব্র করেছে দখলদার সেনারা।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে সেখানে কমপক্ষে ১৮ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও প্রায় ৫০ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।
নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে কমপক্ষে ৭ হাজারের বেশি শিশু এবং প্রায় ৫ হাজার নারী রয়েছেন।
Leave a Reply