আল কুরআন। আমাদের একমাত্র জীবন বিধান ঐশী গ্রন্থ আল কুরআন। রান্নাঘর থেকে শুরু করে সংসদ পরিচালনা, রাষ্ট্র পরিচালনার সব নিয়মকানুন সুন্দর সুচারুভাবে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বর্ণনা করেছেন আল কুরআনে। জীবনের আনাচে-কানাচে কোথাও একবিন্দু কোনো কিছু বাদ দেননি আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, বিয়ে-তালাক, জমির বিলি-বণ্টন সবই আছে। নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, জন্ম-মৃত্যু, সুদ-ঘুষ, হালাল-হারাম; জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত একজন মানুষের চলতে ফিরতে যা যা লাগবে সবই আছে আল কুরআনে। আরো আছে মৃত্যুর পরের জীবন। কবর, হাশর, মিজান, জান্নাত-জাহান্নাম, আরশ-কুরসি। আছে আরাফের বর্ণনা। আসমান-জমিন, নদী-সাগর, জলবায়ু, ঘূর্ণিঝড় জলোচ্ছ্বাসের বিবরণ। রাগ-হিংসা, ভয়, ঝগড়া ফ্যাসাদ, মামলা-মোকাদ্দমা এসবই লেখা আছে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে। আছে জিনদের কথা। ফেরেশতাদের কথা। আরো আছে ইবলিশের কথা।
আমাদের অবস্থান : কুরআনের যে আয়াতগুলো আমাদের পক্ষে কথা বলে, আমাদের মনের সাথে মিলে যায় সাধারণত সেগুলো শুনলে আমাদের ভালো লাগে। আমরা খুশি হই। আমাদের চাওয়ার সাথে যখন কুরআনের আয়াত মিলে যায় তখন আমরা কুরআন ভালোবাসি পছন্দ করি। কুরআনকে সম্মান করি। আবার যে আয়াতগুলো আমার ইচ্ছার বিরোধিতা করে, নফসের সাথে লড়াই করতে বলে, ইচ্ছেমতো ভোগ-বিলাসে বাধা দেয় তখন কুরআনের কথা শুনতে আমাদের ভালো লাগে না। শত্রু মনে হয় কুরআনকে।
মদ, গাঁজা, হেরোইন, নেশাদ্রব্য পান করতে নিষেধ করে বলে কুরআন ভালো না। পর্দা প্রথার কঠোর বিধিবিধান ভালো লাগে না। শরিয়তের সীমারেখা মেনে চলা আরো কঠিন। তাই তো আমরা সুবিধাভোগী মানুষ নিজেদের পছন্দের আয়াত তিলাওয়াত করি। বাকি আয়াতগুলো লুকিয়ে রাখতে চাই। ওগুলো শুনলেই মানতে হবে, জীবন চলার পথ বদলে দিতে হবে।
আত্মীয়তার বন্ধন ধরে রাখতে হবে। হালাল-হারাম মেনে চললে তো জীবনে আর ভোগ-বিলাস বলতে কিছুই রইল না, এটিই আজ আমাদের মনোভাব।
পরিশেষে বলতে চাই, আমরা মানুষ, মনুষ্যত্বের নিম্নস্তরে পৌঁছে গেছি কুরআনকে না মানার কারণে। কুরআনের অবমূল্যায়ন করতে গিয়ে নিজদের জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে নামিয়ে ফেলেছি। নিজেদের অধঃপতন নিজেরাই ডেকে এনেছি। আমাদের চলার পথ আজ কাঁটায় পরিপূর্ণ। ইবলিশ শয়তান আজাজিলকে সুযোগ করে দিয়েছি ধ্বংসের ফাঁদ পাতার জন্য। আজাজিলের পাতা ফাঁদে আমরা টপাটপ ডুবে যাচ্ছি কিন্তু আমাদের হুঁশ হচ্ছে না। আমরা বোকার স্বর্গে বসবাস করছি। এই অবস্থান থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় কুরআন অধ্যয়ন করা। পরিপূর্ণভাবে কুরআনকে বিশ্বাস করা। কুরআনের বিধিবিধান নিজেদের জীবনে বাস্তবায়িত করা। হালাল-হারাম মেনে চলা। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পরিপূর্ণভাবে আদায় করা। অন্যের হক নষ্ট না করা। অন্যায় অত্যাচার জুলুম করা থেকে বিরত থাকা। প্রতি মুহূর্তে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা। আল্লাহর নাফরমানি থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করা। সর্বোপরি আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস নিয়ে অর্থসহ কুরআন অধ্যয়ন করা।
Leave a Reply