১ মণ, ২ মণ নয়; বঙ্গোপসাগরে একটি ট্রলারে ৫০ মণ বা ২ মেট্রিক টন মাছ ধরা পড়ছে। শুনতে অবাক লাগলেও এমনটাই হয়েছে বরগুনার পাথরঘাটায়।
যার মধ্যে ৩০ মণই ইলিশ।
গত কয়েক বছরে এক ট্রলারে এতো মাছ আর ধরা পড়েনি। এ অবস্থায় এই ট্রলারের জেলেরা আনন্দে উচ্ছসিত হয়েছে।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) দুপুরের দিকে এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) ঘাটেও মানুষ ভিড় করে।
এর আগে, গত ১১ আগস্ট পাথরঘাটা থেকে সাগরে মাছ ধরতে যায় এফবি অলিউল্লাহ-১ নামে একটি মাছ ধরার ট্রলার। এরপর টানা ৭ দিন বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন স্থানে মাছ ধরেন ট্রলারটির জেলেরা। এতে বাজিমাত করেন তারা। মাত্র ৭ দিনে তারা ধরেন বিভিন্ন প্রজাতির ৫০ মণ সামুদ্রিক মাছ। একসঙ্গে এতো মাছ ধরতে পারায় বেজায় খুশি ট্রলারের জেলেরা।
ট্রলারটির মাঝি শাহ্ আলম বলেন, বঙ্গোপসাগরের আমরা ৭ দিন মাছ ধরেছি। বঙ্গোপসাগরের চালনার বয়া এলাকা পশ্চিম দিকে ৫ ঘণ্টা ট্রলার চালিয়ে গিয়ে মাছ ধরেছি। এছাড়া বাইজদার বয়া এলাকা থেকে ৮ ঘণ্টা পূর্ব দিকে ট্রলার চালিয়ে গিয়ে মাছ ধরেছি।
ট্রলারটির জেলে আব্দুল হাকিম বলেন, আমি অনেক বছর ধরে সাগরে মাছ ধরি। কিন্তু আমার জীবনে; একসঙ্গে এতো মাছ আর কোনোদিন পাইনি। এ রকম মাছ সচরাচর পাওয়াও যায় না।
ইসমাইল নামে আরেক জেলে বলেন, আমরা মোট ৭ বার জাল ফেলেছি। প্রতিবার ৬ মণ, ৭ মণ করে মাছ পেয়েছি। জালে এতো মাছ দেখে আমরা যেমন অবাক হয়েছি, ঠিক তেমনি খুশিও হয়েছি।
রাকিব নামে ট্রলারটির আরেক জেলে রাকিব বলেন, নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের সঙ্গে ২১শ -২২শ ইলিশ পেয়েছি আমরা। এর মধ্যে ১৫শ ইলিশের প্রতিটির ওজন ১ কেজির ওপরে। সে হিসাবে দেড় মেট্রিক টনেরও বেশি পেয়েছি শুধু ইলিশ।
এ বিষয়ে ট্রলারটির মালিক মো. আলম মিয়া বলেন, সাগরে এখন মাছ পাওয়া যাচ্ছে। আমার ট্রলারে যে মাছ পেয়েছি, তার দাম ২১-২২ লাখ টাকা। এভাবে মাছ পাওয়ার ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে আমরা ব্যাপক লাভবান হবো।
তিনি বলেন, আমার ট্রলার ও জাল বড়, সে কারণে গভীর সাগরে মাছ ধরা হয়। যেখানে কম সংখ্যক ট্রলার যেতে পারে।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, আজ কিছু সংখ্যক ট্রলার ঘাটে এসেছে। তবে যতগুলো ট্রলার আসছে, তাতে উল্লেখযোগ্য মাছ ধরা পরেনি। তবে একটি ট্রলারে ৫০ মণ মাছ পাওয়া গেছে।
তিনি আরও বলেন, এখনও অনেক ট্রলার সাগরে আছে, ঘাটে এলে জানা যাবে, সাগরে মাছের অবস্থা কেমন।
পাথরঘাটা বিএফডিসির সহকারী বিপণন কর্মকর্তা মো. রিপন হোসেন বলেন, চলতি বছরে ইলিশ মৌসুমে একটি ট্রলারে এতো বেশি মাছ পাওয়া যায়নি।
Leave a Reply