গঙ্গা অববাহিকায় নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের সংযোগ রয়েছে। ভাটির দেশ বাংলাদেশকে বর্ষা মৌসুমে গঙ্গা প্রবাহ নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। এ ব্যাপারে নেপালের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ। উজানের দেশটির কাছে বৃষ্টির পরিমাণ সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত চায় ঢাকা। যেন বন্যা বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নেওয়া যায়।
আজ মঙ্গলবার (৩০ মে) ঢাকায় যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) বৈঠকে বসছে বাংলাদেশ ও নেপাল। দুই দেশের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব পর্যায়ের এ বৈঠকে নেপালের সঙ্গে ডাটা শেয়ারিং সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হওয়ার কথা রয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও যৌথ নদী কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, সোমবার ঢাকায় বাংলাদেশ-নেপালের যৌথ নদী কমিশনের টেকনিক্যাল পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ মে) সচিব পর্যায়ে বৈঠক হবে। বৈঠকে উভয়পক্ষ কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চায়। হয়ত বৈঠকে একটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে।
জানা গেছে, বৈঠকে ঢাকার পক্ষে নেতৃত্বে দেবেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান। অন্যদিকে কাঠমান্ডুর পক্ষে দেশটির ওয়াটার রিসোর্স এবং ইরিগেশন মন্ত্রণালয়ের সচিব গোপাল প্রসাদ সিগদেল নেতৃত্ব দেবেন।
ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র বলছে, বৈঠকে মূল আলোচনায় থাকবে গঙ্গা অববাহিকাকে কেন্দ্র করে আগাম বৃষ্টির পরিমাণ সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত শেয়ার করা। এছাড়া বিভিন্ন ক্ষেত্রে যৌথ গবেষণা, রিসোর্স এবং অভিজ্ঞতা শেয়ারের মতো বিষয়গুলোতে জোর দেওয়া হবে।
নদী কমিশনের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, আমাদের গঙ্গার বেসিন নেপালের মধ্যে পড়েছে। আমরা যদি উজানের বৃষ্টিপাতের ডাটা পাই তাহলে বুঝতে পারব বন্যা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসবে কি না। নেপাল যদি আমাদের সঙ্গে ডাটা শেয়ার করে তাহলে আমরা বেসিন ভিত্তিক মডেল করতে পারি। এ নিয়ে আমরা একটি এমওইউ সই করতে চাই। দুই সচিবের বৈঠকের পর আমরা আশা করছি এমওইউ সাইন হবে।
এর বাইরে আলোচনা নিয়ে নদী কমিশনের এ কর্মকর্তা জানান, নেপালে পাহাড়ি জমিতে চাষাবাদ হয়। আর আমাদের এখানে নিচু ভূমিতে চাষাবাদ হয়। এ বিষয়ে বেসিন ভিত্তিক দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হতে পারে। দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং বিশেষজ্ঞদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এ বিষয়গুলো আলোচনায় উঠে আসবে।
সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসের (সিইজিআইএস) নির্বাহী পরিচালক ড. মালিক ফিদা আব্দুল্লাহ খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই জেআরসিতে বাংলাদেশ লাভবান হবে। বৈঠকে ডাটা শেয়ারিংয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। উজানের বৃষ্টিপাতের ডাটা পেলে বাংলাদেশ মডেল ভিত্তিক বেসিন করতে পারবে। যেটা আমাদের বন্যার ক্ষেত্রে আগাম প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে। বাংলাদেশ হার্ডিঞ্জের যে পানির লেভেল বা জিস্টার ডাটা আছে সেটা নেপালকে দেবে। আর নেপালের কোসি ও অন্যান্য নদীগুলো যেগুলো গঙ্গা বেসিনের সঙ্গে মূল কন্ট্রিবিউটারি সেই জায়গাগুলোতে ডাটা শেয়ারিং হবে।
Leave a Reply