ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে সোয়া দুইশ’র বেশি জন আহত হয়েছেন। এরই মধ্যে ২২৬ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এসেছেন।
সোমবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যায় ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টার থেকে এ তথ্য জানা যায়।
কাউন্টারে দায়িত্বরত কর্মী মো. মিজান বলেন, বেলা ২টার পর থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২২৬ জনকে টিকিট দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ১১ শিক্ষার্থীকে ভর্তি করতে বলেছেন চিকিৎসকরা। তাদের জন্য আলাদা ভর্তির ফাইল তৈরি হয়েছে।
এদের মধ্যে রয়েছেন ইয়াকুব (২১), কাজী তাসলিম ফেরদৌসী (২৪), অমি (২৬), আমিনুর (২২), শুভ (২০), গিয়াস উদ্দিন (২০), নাসির (২৩) ও অপি (২২)।
এদিকে ঢাবিতে লাগা সংঘর্ষ ঢামেক হাসপাতালেও ছড়িয়েছে। হাসপাতাল চত্বরে ও ভেতরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে পুরো হাসপাতালজুড়ে রোগীদের মধ্যে ভীতি-আতঙ্ক দেখা যায়।
হাসপাতালের পুরাতন ভবনের তৃতীয় তলায় নাক কান গলা বিভাগে ভর্তি হয়েছেন লেবু মিয়া নামের রোগী। চিকিৎসকরা জরুরি ভিত্তিতে লেবু মিয়াকে এক্স-রে করার পরামর্শ দেন।
তার স্বজন মনির হোসেন লেবু মিয়াকে তিনতলা থেকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এক্স-রে করতে নিয়ে আসেন। তখনই জরুরি বিভাগ চত্বরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হলে তারা এর মধ্যে আটকে পড়েন। ভয় পেয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করে রোগীকে নিয়ে আবার ওয়ার্ডে চলে যান মনির।
তিনি বলেন, হাসপাতাল হচ্ছে রোগীদের চিকিৎসার কেন্দ্র। এখানে কেন মারামারির ঘটনা ঘটে।
সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হাসপাতালের নিরাপত্তায় জরুরি বিভাগে বাড়তি আনসার সদস্য দেখা গেলেও হাসপাতালে চত্বরে কোনো অতিরিক্ত পুলিশ দেখা যায়নি। হাসপাতাল চত্বর ও আশপাশে এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানান, কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনায় দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আনুমানিক শতাধিক শিক্ষার্থীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ভর্তি নেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, ভর্তি রোগীদের মধ্যে কেউ গুরুতর নয়, তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। আর বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।
আহত হয়ে এখনো এক-দুজন করে হাসপাতালে আসছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
Leave a Reply