মৌসুমের শুরুতেই বাজার দখল করেছে আম ও লিচু। বাজারে ফজলি, ল্যাংড়া, খিরসাপাত, অরুনা, আম্রপালিসহ পরিচিত নানা প্রজাতির আম না থাকলেও মৌসুমের শুরুতেই মিলছে হিমসাগর, গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ, বারিফল এবং কাঠিমনসহ কয়েক প্রজাতির আম। পাশাপাশি উচ্চদামে বিক্রি হচ্ছে থাইল্যান্ডের জাম্বু আম ও কয়েক প্রজাতির লিচুও। তবে দেশীয় আমের দামও আকাশছোঁয়া। প্রতিকেজি দেশীয় প্রজাতির আম বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজিতে।
ক্রেতারা বলছেন, দাম কমলে মানুষ বেশি করে ফল কিনতে পারবে। সবার খাওয়ার চাহিদাও বাড়বে। অন্যসব বছরের তুলনায় লিচুর দাম অনেক বেশি। আমের দামও অনেক বেশি। বিক্রেতারা বলছেন- প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফলন কমেছে রসালো ফল আম ও লিচুর। ফলে সঙ্গত কারণে একদিকে যেমন বাজারে আম এবং লিচুর সংকট তৈরি হবে তেমনি বিক্রিও হবে চড়া দামে। তবে মৌসুম পুরোপুরি শুরু হওয়ার পর দাম অপেক্ষাকৃত কমবে বলেও দাবি বিক্রেতাদের।
এদিকে বাজারে প্রতি একশ পিস বোম্বাই লিচু ৫০০ টাকা, প্রতি একশ পিস কদমি লিচু ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, চায়না লিচু প্রতি একশ পিস ১৪শ টাকা, বেলোয়ারি লিচু প্রতি একশ পিস ৮০০ টাকা এবং হাওয়াই মিঠাই প্রজাতির একশ পিস লিচু ১৬শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
২৫ বছর ধরে ফলের ব্যবসা করছেন মো. হেলাল মিয়া। সাথে কথা হলে তিনি জানান, এবছর ফলের দাম ভীষণ চড়া। যেসব ফল ১০০ টাকা কেজিতে গতবছর বিক্রি হয়েছে সে ফল পেতেই এ বছর গুনতে হবে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। প্রাকৃতিক দুর্যোগে এ বছর ফলের ফলন কম বলেও দাবি করেন এ ব্যবসায়ী। তবে ভরপুর মৌসুমে ফলের দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালেই থাকবেই বলে মনে করেন এ ফল ব্যবসায়ী।
আইয়ুব আলী মাতুব্বর নামের লিচু ব্যবসায়ী বলেন, এবছর লিচুর দাম বেশি। পাইকারি বাজারে অতিরিক্ত দামে লিচু কিনতে হচ্ছে বলেই বেশি দামে বিক্রি করা লাগছে। সাধারণ ৩০০ টাকায় একশ পিস লিচু বিক্রি যৌক্তিক থাকলেও তা দাম বেড়ে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা বিক্রি করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে বিক্রেতাদেরও।
ফল কিনতে আসা আলী আকবার আকন বলেন, বাজারে ফলের দাম প্রচুর। বিদেশি ফলের চেয়ে দেশি ফলের দাম আরও বেশি। আঙুর বা আপেল ৩শ টাকায় পাওয়া গেলেও লিচু বা আম এ দামে মিলছে না। ১০০ পিস লিচু কিনতে গেলে পকেটের ১ হাজার টাকা নেই। এভাবে তো আর খেয়ে পারা যায় না। দেশের অবস্থা এমন যে আমরা দেশীয় ফলও কিনে খাবার সামর্থ্য হারাচ্ছি।
গোলাম রাব্বী নামের আরেক ক্রেতা বলেন, সবকিছুতেই দাম বেশি। তবে ফলের বাজারে দামের আগুন আরেকটু বেশি। এক কেজি আম যদি ৩০০ টাকায় কিনতে হয় তাহলে যার দৈনিক আয় ৪০০ টাকা সে কি করবে? কীভাবে খাবে? দেশীয় ফলের দাম এত বেশি হওয়া একদম উচিত নয়।
Leave a Reply