লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ পাঁচজনের নামে ধর্ষণ ও এতে সহায়তার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বিকেলে আদিতমারী থানায় মামলাটি দায়ের করেন নির্যাতিত স্কুলছাত্রীর মা।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- আদিতমারী উপজেলার বড় কমলাবাড়ি গ্রামের শাখা নেওয়াজ ও তার স্ত্রী মর্জিনা বেগম, তার ছেলে মিজানুর রহমান মিজান, মনসুর আলী এবং কমলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিন আলাল।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলার বড় কমলাবাড়ি গ্রামের শাখা নেওয়াজের ছেলে মিজানুর রহমান দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে এক একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেম করেছেন। মেয়েটি এখন এসএসসি পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে তিন বছর আগে মেয়েটির অন্যত্র বিয়ে হলেও প্রেমের সম্পর্ক অটুট রাখে মিজান। বিয়ের এক মাস পরেই প্রেমিকের কথা মতো স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বাবার বাড়িতে চলে আসে মেয়েটি। এরপর বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেয়েটির সঙ্গে দৈহিক সম্পর্কে জড়ান মিজান। বিষয়টি উভয় পরিবারের মধ্যে জানাজানি হলে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন মিজান ও তার পরিবার।
মিজান ও তার পরিবারের প্রতিশ্রুতি মোতাবেক গত ১৮ এপ্রিল প্রথম স্বামীকে তালাক দেন ওই স্কুলছাত্রী। তালাকের একদিন পর প্রেমিক মিজান ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিন আলালের খালাত বোনকে বিয়ে করেন। খবর পেয়ে বিয়ের দাবিতে ওই বাড়িতে অবস্থান নেয় ওই স্কুলছাত্রী। বিয়ের দাবিতে অনশনে থাকায় চলতি এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতেও পারেনি সে।
কমলাবাড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিন আলাল প্রেমিক মিজানকে অন্যত্র বিয়ে দিতে এবং অনশনরত স্কুলছাত্রীকে তাড়িয়ে দিতে নানানভাবে হয়রানি ও হুমকি দেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
এ ঘটনায় অনশনে থাকার ১৩তম দিন ওই স্কুলছাত্রীর মা আদিতমারী থানায় তার মেয়েকে ধর্ষণ, ধর্ষণে সহায়তা ও হুমকির অভিযোগে প্রেমিক মিজান ও তার পরিবার এবং সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের নামে মামলা দায়ের করেন। মামলা গ্রহণ করে প্রেমিক মিজানের বাড়ি থেকে স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। তবে অভিযুক্ত প্রেমিক মিজানসহ সব আসামি পলাতক।
অভিযুক্ত সাবেক চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, মিজানের সঙ্গে আমার খালাত বোনেরও প্রেমের সম্পর্ক ছিল। খালাত বোন বিয়ের দাবিতে অনশন করলে আমি গিয়ে সমাধান করে দিলে তারা বিয়ে করে নেয়। বিয়ের পরদিন থেকে ওই বাড়িতে আরও এক মেয়ে এসে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেছে বলে শুনেছি। এ মামলায় অহেতুক আমাকে জড়ানো হয়েছে।
আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক বলেন, নির্যাতিত মেয়ের মায়ের অভিযোগটি নিয়মিত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে অভিযুক্ত মিজানের বাড়ি থেকে মেয়েকে উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply