প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘোরার জন্য পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় প্রথম দিকে রয়েছে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন। যাওয়া-আসার পথ দুর্গম হওয়ায় সুন্দরবনের বেশিরভাগ স্থান অদেখা থেকে যায় দর্শনার্থীদের।
তবে বাগেরহাটের মোংলা শহর থেকে সব থেকে কাছে হওয়ায় সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রে সহজেই যেতে পারেন দর্শনার্থীরা। ফলে সারা বছরই এখানে দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীদের আনাগোনা থাকে।
ঈদ, পূজাসহ বিভিন্ন উৎসবে স্বাভাবিকের থেকে অনেক বেশি দর্শনার্থী আসেন এখানে। এক কথায় ঈদের ছুটিতে উপচে পড়া ভিড় থাকে করমজলে।
এ উপলক্ষে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ অতিরিক্ত প্রস্তুতিও নিয়ে ছিল। কিন্তু এবারের ঈদে লম্বা ছুটি থাকলেও করমজলে তেমন ভিড় ছিল না। স্বাভাবিক সময়ের থেকেও কম দর্শনার্থী ছিল।
শনিবার (২২ এপ্রিল) ঈদের দিনে শ’দুয়েক এবং রোববার (২৩ এপ্রিল) ঈদের পরের দিনে ৬শ-র মত পর্যটক এসেছিল করমজলে। অন্যান্য বছর এই দিনে ঈদের পরে ৩ হাজারের বেশি দর্শনার্থী করমজল ভ্রমণ করেছিল। শুধু করমজল নয়, সুন্দরবনের হাড়বাড়িয়া, হিরণপয়েন্ট-নীলকমল, আন্ধারমানিক, কটকা, কচিখালী, আলীবান্ধা ও দুবলা এলাকায়ও দর্শনার্থী ছিল স্বাভাবিকের থেকে কম। এ অবস্থার জন্য রমজানজুড়ে তীব্র তাপদাহ আর ঈদের পর কিছুটা বৈরী আবহাওয়াকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে দর্শনার্থী কম হওয়ায় আয় কমেছে ট্রলার চালক ও ট্যুরিস্ট ব্যবসায়ীদের। ট্রলার চালকদের ধারণা বুধ-বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত অনেক বেশি ভিড় থাকতে পারে করমজলে।
মোংলা বন্দর জালিবোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ঈদের পরের দিন অনেক দর্শনার্থী এসে থাকে। কিন্তু আজকে তেমন লোক আসেনি। জালি বোট চালকরা অলস সময় কাটিয়েছে। তবে বুধবার থেকে দর্শনার্থী বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের হাড়বাড়িয়া পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তানভীর হাসান বলেন, তীব্র তাপদাহে পুরো রমজান মাসে মাত্র তিনটি পর্যটকবাহী বোট এসেছিল হাড়বাড়িয়ায়। আর ঈদের দিন কোনো পর্যটকই আসেনি। ঈদের পরদিন দুপুর পর্যন্ত মাত্র একটি বোটে মাত্র চারজন পর্যটক এসেছেন। কিন্তু অন্যান্য বছর এ সময়ে অনেক বেশি দর্শনার্থী এসেছিল হাড়বাড়িয়ায়।
করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন, ঈদের দিনে যেখানে হাজারের বেশি লোক হয়, সেখানে এবার দুইশ এর মতো লোক হয়েছে। পরের দিন (রবিবার) ২ থেকে ৩ হাজার লোক হয়, অনেক সময় চার হাজার পর্যন্ত পৌঁছায় কিন্তু এবার মাত্র ৬শ দর্শনার্থী হয়েছে।
দর্শনার্থী কম হওয়ার কারণ সম্পর্কে আজাদ কবির বলেন, প্রচণ্ড গরমে মানুষ বাইরে আসতে চায় না। সেইসঙ্গে সকাল থেকেই ঝড়ো আবহাওয়া ছিল করমজলে যার কারণে দর্শনার্থী কম এসেছে। তবে যেকোনো সময় দেশি-বিদেশি দর্শনার্থী বাড়তে পারে বলে জানান তিনি।
Leave a Reply