1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : editor :
  3. [email protected] : moshiur :
শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১২:২৫ অপরাহ্ন

রাজশাহী কলেজে শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনায় কথা রাখেনি ছাত্রনেতা রাশিক

মহানগর রিপোর্ট :
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ৩১০ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

দেশসেরা রাজশাহী কলেজ ছাত্রাবাসে টর্চার সেলে সাংবাদিকসহ সাধারণ শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের বহিষ্কারের সুপারিশ করবে বলে অঙ্গীকার করে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাশিক দত্ত। তবে অঙ্গীকারের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম পার হলেও করেন নি কোনো সুপারিশ। উল্টো অভিযুক্তদের বহিষ্কার চেয়ে সুপারিশের এখতিয়ার নেই বলে দাবি করেন এই বিতর্কিত ছাত্রনেতা।

এদিকে কলেজ ছাত্রলীগের সুপারিশ না পেলেও দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে অভিযুক্তদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগ। নগর ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক রুদ্র ধর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা শাহরুখ আলম, কাওসার আজম রাফি ও রাজু আহমেদকে শোকজ করা হয়।

শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অভিযুক্তদের পাঠানো শোকজ বার্তায় জানানো হয়, নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার উপযুক্ত কারণসহ লিখিত জবাব আগামী এক কার্য দিবসের মধ্যে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে নগর ছাত্রলীগের দপ্তর সেলে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, যাদেরকে দোষী মনে হয়েছে তাদের প্রাথমিকভাবে শোকজ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবো। আজকে শাহরুখ আলম, কাওসার আজম রাফি ও রাজু আহমেদকে শোকজ করা হয়েছে।

তবে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাশিক দত্ত বলছেন ভিন্ন কথা। অভিযুক্তরা রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের পদে না থাকায় তাদের ব্যবস্থা গ্রহণ চেয়ে লিখিত সুপারিশ করার এখতিয়ার নেই তাদের। তাই সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণে লিখিত সুপারিশ না করে মৌখিকভাবে বলা হয়েছে। যদিও তা অস্বীকার করেছেন নগর ছাত্রলীগের সভাপতি।

কলেজ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে কোনো সুপারিশ পেয়েছেন কি না প্রশ্নের উত্তরে নগর ছাত্রলীগের সভাপতি সিয়াম বলেন, তারা আমাদেরকে এখন পর্যন্ত কিছু জানায় নি। আমরা আমাদের দায়িত্বের জায়গা থেকে ওপরের নির্দেশনায় শোকজ করেছি। তারা কেন আমার সাথে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করে নি আমি তা বলতে পারবো না।’

রাশিক দত্ত বলেন, আমাদের রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের এখনও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয় নি, সেজন্য লিখিত সুপারিশ করতে পারবো না। আর তারা মহানগরীর পোস্টে আছে, তাই মহানগর একদিনের সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। কালকে ওরা যে রিপ্লাই দিবে তারপর ওদের বহিষ্কার করা হবে।

আমরা মৌখিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। তারা রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের পদে থাকলে আমাদের পেডে সুপারিশ করতে পারতাম। তারা মহানগরীর হওয়ায় সিয়াম ভাই (নগর সভাপতি), সবুজ ভাই (নগর সম্পাদক) শোকজ করেছে বলে দাবি রাশিকের।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে রাজশাহী কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটি, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন (আরইউজে) ও রাজশাহী টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আরটিজেএ) নেতাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সভায় ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয় কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাশিক দত্তকে। এই সময়ের মধ্যে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণে লিখিত সুপারিশ করতে প্রতিশ্রুতিও দেন রাশিক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রাবাস সুপার ও ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আনিসুজ্জামান মানিক বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।’

কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আব্দুল খালেক বলেন, ‘একটা জরুরি কাজে রাজশাহীর বাহিরে এসেছি। এ বিষয়ে কিছু জানা নেই।’

প্রসঙ্গত, গত ২২ ফেব্রুয়ারি জোর করে দলীয় প্রোগ্রামে নিতে রাজশাহী কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটির (আরসিআরইউ) দুই শিক্ষানীতির রিপোর্টার শরিফুল ইসলাম ও সাকিবসহ অন্তত ৩০ সাধারণ শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। হামলাকারী শাহরুখ, রাফি, ইমন, তরিকুল, রাজু, হাসান, আহসানসহ সবাই রাশিক দত্তের অনুসারী বলে জানা যায়।

অভিযোগ ওঠে, কলেজ ছাত্রাবাসে থাকা শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক মিছিল-মিটিংসহ দলীয় কর্মসূচিতে নিয়ে যায় ছাত্রলীগ। যেতে না চাইলে মারধরসহ নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। নির্যাতন করা হয় টর্চার সেলে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ বা অসুস্থ থাকলেও ছাড় পান না শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও রয়েছে সিট বাণিজ্যের অভিযোগ। সাধারণ শিক্ষার্থীরা মা-বাবা তুলে গালিগালাজসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হন প্রতিনিয়তই।

এ ঘটনায় সাংবাদিকদের নিয়ে ছাত্রাবাস পরিদর্শনে গিয়ে ছাত্রলীগের তোপের মুখে পড়েন কলেজ অধ্যক্ষ। এক পর্যায়ে কলেজ অধ্যক্ষ, ছাত্রাবাসের সুপারসহ সাংবাদিকদেরও প্রকাশ্যে হুমকি দেয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

তবে, সাধারণ শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের সামনে কলেজ অধ্যক্ষকে হুমকি দেওয়ায় বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েন অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আব্দুল খালেক এবং ছাত্রাবাস সুপার ও ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আনিসুজ্জামান মানিক। পরে কলেজ ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যদের ডাকলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা রুমে ফিরে যায়।

বছর কয়েক আগে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়ে হামলা চালায় রাশিক দত্তের অনুসারী ছাত্রলীগের উচ্ছৃঙ্খল নেতাকর্মীরা। পরে দেড় বছর নেতৃত্বহীন থাকার পর গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর কলেজ ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসেন রাশিক দত্ত ও আশরাফুল ইসলাম জাফর। ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই নানা অপকর্মে সমালোচিত হোন রাশিক।

সম্প্রতি কলেজ হোস্টেলের কক্ষে মাদক সেবনের ভিডিও ভাইরাল হলে আলোচনায় আসেন রাশিক দত্ত। যা জাতীয় সংবাদমাধ্যমেও প্রচারিত হয়েছে। এ ছাড়াও সালাম না দেওয়া, দেখে না দাঁড়ানো, মিছিলে না আসা, প্রোগ্রামে না যাওয়ার মতো তুচ্ছ ঘটনায় ক্যাম্পাসে ও হোস্টেলে একাধিক শিক্ষার্থীকে মারধর করেন বলে রাশিক ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: সিসা হোস্ট