ভারতের গুজরাট উপকূলে আরব সাগরে একটি ট্যাংকার জাহাজে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, জাপানি মালিকানাধীন এই রাসায়নিক ট্যাংকারে যে ড্রোন হামলা হয়েছে, তা ছোঁড়া হয়েছিল ইরান থেকে।
এর আগে ভারত উপকূলে থাকা জাহাজে ইরান থেকে হামলা হয়েছে বলে দাবি করা হয় ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমেও। রোববার (২৪ ডিসেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি এবং সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার ভারতের উপকূলে জাপানি মালিকানাধীন রাসায়নিক ট্যাংকারে আঘাত হানা ড্রোনটি ‘ইরান থেকে ছোঁড়া হয়েছিল’ বলে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন জানিয়েছে। এই ঘটনাটিকে লোহিত সাগরের এপারেও বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলে ঝুঁকি সম্প্রসারণের লক্ষণ বলে মনে করা হচ্ছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে লোহিত সাগরের গুরুত্বপূর্ণ শিপিং রুটে ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মধ্যে শনিবার ভারতের গুজরাট উপকূলে এই আক্রমণের ঘটনাটি ঘটে।
পেন্টাগন এক বিবৃতিতে বলেছে, ভারতের উপকূলে হামলার শিকার রাসায়নিক ট্যাংকারটিতে ‘ইরান থেকে নিক্ষেপ করা একমুখী হামলাকারী ড্রোন’ আঘাত হানে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মার্কিন সামরিক বাহিনী ‘জহাজটির সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে এবং এটি ভারতের একটি গন্তব্যের দিকে এগিয়ে চলেছে’।
শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০ টায় ভারতের ভেরাভাল থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার (১২০ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে এই হামলাটি ঘটে। হামলায় কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এছাড়া হামলায় লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী এই ট্যাংকারে আগুন ধরে গেলেও পরে তা নিভিয়ে ফেলা হয়।
এদিকে আক্রমণ চালানোর বিষয়ে এখনও কোনও গোষ্ঠী দায় স্বীকার করেনি এবং সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে লোহিত সাগরের মধ্য দিয়ে যাওয়া জাহাজগুলোতে ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সাথে এই হামলাটিও সম্পর্কিত কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।
এএফপি বলছে, গত অক্টোবরে হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এই প্রথম পেন্টাগন খোলাখুলিভাবে ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি জাহাজকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ করল।
পেন্টাগনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এমভি কেম প্লুটো নামের জাহাজটি লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী ছিল এবং ডাচ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচালিত হতো। যদিও জাহাজটি মূলত জাপানি কোম্পানির মালিকানাধীন।
এছাড়া সমুদ্রপথ বিষয়ক একটি সংস্থা জানিয়েছে, আরব সাগরে হামলার শিকার হওয়া জাহাজটির সঙ্গে ইসরায়েলের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
এর আগে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল-১২ দাবি করে, গুজরাট উপকূলে শনিবার জাহাজে এই হামলাটি সরাসরি ইরান থেকে করা হয়েছে। যদিও তথ্যটি নিশ্চিত নয়।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের গাজায় গত আড়াই মাসের বেশি সময় ধরে বর্বরতা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। তাদের এসব বর্বরতার জবাব দিতে লোহিত সাগরে জাহাজকে লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে হুথিরা। তারা মূলত ইসরায়েলি জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করছে।
হুথিরা জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েল বর্বরতা বন্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে তারাও হামলা বন্ধ করে দেবে।
Leave a Reply