রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলার আসামি মিয়া মো. মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসি কার্যকরে আর আইনি কোনো বাধা নেই। তাই আসামি জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে শেষ দেখা করতে কারাগারে এসেছেন তার স্বজনরা।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে মৃত্যুর দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জাহাঙ্গীরের বড় ভাই সৌরভ হোসেন, ছোট ভাই মিজানুর রহমান মিজান, বাবা আজিম উদ্দিন, ভাগিনা শাহিন আলমসহ নিকট আত্মীয় ৩০ থেকে ৩২ জন দেখা করতে যান। তবে অপর আসামি মহিউদ্দিনের পরিবারও এদিন সকালে সাক্ষাৎ করে গেছে বলে জানা গেছে।
রাবির শিক্ষক মিয়া মো.মহিউদ্দিন ও শিক্ষক ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলমকে নিম্ন আদালতের দেওয়া ফাঁসির রায় বহাল রেখেছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ফাঁসি বহালের পর আসামি প্রাণভিক্ষা চেয়েছিলেন রাষ্ট্রপতির কাছে। সেই আবেদনও খারিজ হয়েছে। কিন্তু ফাঁসি কার্যকরে কারা কর্তৃপক্ষের প্রস্তুতি ঠেকাতে রিট করেছিলেন তারা। সেই রিটও খারিজ হয়েছে। সেই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ গিয়েছিলেন আপিল বিভাগে। মঙ্গলবার সেই আবেদনও খারিজ করা হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টারের ম্যানহোল থেকে অধ্যাপক তাহেরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল চারজনকে ফাঁসির আদেশ দেয়। হাইকোর্ট ২০১৩ সালে মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীরের ফাঁসি বহাল রাখেন। সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন দেওয়া হয় নাজমুল ও সালামকে। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন।
রিভিউ খারিজের আদেশ কারাগারে পৌঁছলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চান আসামিরা। সেই প্রাণভিক্ষার আবেদনও নাকচ হয়ে যায়। নাকচের সেই চিঠি গত ৬ জুলাই রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছে। জেল কোড অনুযায়ী চিঠি হাতে পাওয়ার ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে যেকোনো ফাঁসি কার্যকরের নিয়ম রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টারের ম্যানহোল থেকে অধ্যাপক তাহেরের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় ৩ ফেব্রুয়ারি তার ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ বাদী হয়ে নগরীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপরে ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেয় পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালত চারজনকে ফাঁসির আদেশ ও দুজনকে খালাস দেন।
Leave a Reply