রাজধানীর উত্তরা এলাকায় সাম্প্রতিক সময়ে কিছু সমন্বয়ক নামধারী মব তৎপরতায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি এবার রেহাই পাচ্ছেন না সাংবাদিকরাও।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের একটি ফাস্টফুড দোকানে সাংবাদিকদের ওপর অতর্কিত এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সুইচগেইট ফলের বাজার সংক্রান্ত একটি বিষয়ে আলোচনা শেষে কয়েকজন সাংবাদিক স্থানীয় একটি ফাস্টফুড দোকানে খেতে যান। এ সময় আকাশ নামের এক ব্যক্তি নিজেকে ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়দানকারী ব্যক্তির নেতৃত্বে ২০-২৫ জন অজ্ঞাতনামা মব সন্ত্রাসী অতর্কিতভাবে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা সাংবাদিকদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও মারধর করে এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করে। পরে হামলার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে তাদের হেয় করার চেষ্টাও করে তারা।
ছবিতে অভিযুক্ত সমন্বয়ক পরিচয়ধারী আকাশ
হামলার শিকার সাংবাদিকরা হলেন—উত্তরা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও বিজয় টিভির প্রতিনিধি আলাউদ্দিন আল আজাদ, উত্তরা প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিনিধি মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবির, উত্তরা প্রেস ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৈনিক সকালের সময়ের প্রতিনিধি মো. জোবায়ের আহমেদ।
স্থানীয় সাংবাদিকদের মতে, একের পর এক এমন হামলা ও হুমকির ঘটনায় তারা চরম আতঙ্কে রয়েছেন। ফলে অনেকেই নিরপেক্ষ সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
উত্তরা প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ এ ঘটনায় তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “সাংবাদিকদের নিরাপত্তাহীনতা চরমে পৌঁছেছে। দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে উত্তরায় স্বাধীন সাংবাদিকতা চরম সংকটে পড়বে।”
ঘটনার পর রাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় আকাশসহ ‘সমন্বয়ক’ নামধারী মব সদস্যদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
এ বিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল রহিম মোল্লা বলেন, “আপনারা অভিযোগ দিয়ে যান, আমি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের দাবি, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ দ্রুত সংগ্রহ করে হামলাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
Leave a Reply