ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। নিরলস এই হামলায় প্রতিদিনই ঘটছে বিপুল সংখ্যক প্রাণহানির ঘটনা। এমন অবস্থায় ভূখণ্ডটিতে বিক্ষোভ করেছেন শত শত ফিলিস্তিনি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় হামাস-বিরোধী বৃহত্তম বিক্ষোভে শত শত মানুষ অংশ নিয়েছেন। তারা স্বাধীনতাকামী এই গোষ্ঠীর ভূখণ্ডের শাসন ক্ষমতা থেকে সরে আসার দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হামাসের সমালোচনাকারী কর্মীদের ব্যাপকভাবে শেয়ার করা বেশ কিছু ভিডিওতে মঙ্গলবার উত্তর গাজার বেইত লাহিয়ার রাস্তায় যুবকদের মিছিল করতে দেখা গেছে। ভিডিওতে তাদেরকে “বেরিয়ে যাও, বেরিয়ে যাও, বেরিয়ে যাও, হামাস বেরিয়ে যাও” স্লোগান দিতে শোনা যায়।
বিবিসি বলছে, গাজার আরেক সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদের বন্দুকধারীরা ইসরায়েলে রকেট হামলা চালানোর একদিন পর উত্তর গাজায় এই বিক্ষোভ শুরু হয়, যার ফলে ইসরায়েল বেইত লাহিয়ার বিশাল অংশ খালি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা ওই এলাকায় জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
প্রায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েল সম্প্রতি গাজায় সামরিক অভিযান পুনরায় শুরু করেছে এবং নারী ও শিশুসহ শত শত ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। মূলত যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর জন্য একটি নতুন মার্কিন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার জন্য হামাসকে দায়ী করেছে ইসরায়েল।
অন্যদিকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চলতি বছরের জানুয়ারিতে স্বাক্ষরিত মূল চুক্তি পরিত্যাগ করার অভিযোগ এনেছে হামাস। গত ১৮ মার্চ বিমান হামলার মাধ্যমে ইসরায়েলি সামরিক অভিযান পুনরায় শুরু হওয়ার পর থেকে শত শত ফিলিস্তিনি নিহত এবং হাজার হাজার ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
বিক্ষোভকারীদের একজন বেইত লাহিয়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ দিয়াব। যুদ্ধে তার বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং এক বছর আগে ইসরায়েলি বিমান হামলায় তিনি তার ভাইকে হারিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা কারও জন্য, যে কোনও দলের এজেন্ডা বা বিদেশি রাষ্ট্রের স্বার্থের জন্য মরতে রাজি নই।”
বিক্ষোভের ভিডিও ফুটেজে বিক্ষোভকারীদের “হামাসের শাসন নিপাত যাক, মুসলিম ব্রাদারহুডের শাসন নিপাত যাক” বলে চিৎকার করতে দেখা গেছে।
বিবিসি বলছে, ২০০৭ সাল থেকে হামাস গাজার শাসন ক্ষমতায় রয়েছে। এর এক বছর আগে ফিলিস্তিনি নির্বাচনে হামাস জয়লাভ করে এবং তারপর নানা না ঘটনাবলীর মধ্য দিয়ে গাজার শাসনভার নিজের হাতে রাখে গোষ্ঠীটি।
বিবিসি বলছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে রাস্তায় এবং অনলাইনে হামাসের প্রকাশ্য সমালোচনা বেড়েছে। যদিও এখনও এমন কিছু লোক আছেন যারা হামাসের তীব্র অনুগত এবং এই গোষ্ঠীর প্রতি সমর্থন কতটা সরে গেছে তা সঠিকভাবে পরিমাপ করা কঠিন।
অবশ্য যুদ্ধের অনেক আগে থেকেই হামাসের বিরোধিতা ছিল, যদিও প্রতিশোধের ভয়ে বিরোধীদের বেশিরভাগই লুকিয়ে থাকতেন বলে দাবি করেছে বিবিসি।
Leave a Reply