করোনা সহায়তার নামে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ডাকযোগে চিঠি দিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে একটি চক্র। নগদ ১২ হাজার টাকা, ৫০ কেজি চাল, ১০ কেজি আটা, ৫ কেজি ডাল, চিনি, তেলসহ খাদ্য সমাগ্রী সহায়তা দিতে বিকাশে রেজিষ্ট্রেশন করার জন্য রাজশাহী মুক্তিযোদ্ধাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠির ওই নম্বরে ফোন করা হলে ৯৯০ টাকা করে বিকাশে দেওয়ার জন্য বলছে। ঢাকার একটি প্রতারক চক্র এই ফাঁদ পেতেছে। যাদের প্রতারণার ফাঁদে অনেকেই এরই মধ্যে পড়েছেন বলেও দাবি করেছেন।
রাজশাহীর দুর্গাপুরের গৌরিহার গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মুনছুর আলীসহ আরও অনেকেই পেয়েছেন এই ধরনের চিঠি। তাঁদের কেউ কেউ এরই মধ্যে বিকাশে ওই টাকা পরিশোধ করেছেন। কিন্তু কোনো সহযোগিতা তারা পাননি। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে ওই চিঠির মাধ্যমে রীতিমতো প্রতারণার ফাঁদ পাতা হয়েছে বলেও দাবি করেছেন চিঠি পাওয়া মুনছুর আলী।
এদিকে, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার’ টাইটেল দিয়ে ওই চিঠিতে ঠিকানা দেওয়া হয়েছে করোনা ত্রাণ অনুদান অর্থবিভাগ, ত্রাণ ফাউন্ডেশন, তাজমহল রোড, ব্লক-সি, ধানমন্ডি। একটি সিল মেরে ওই ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে।
আরেক মুক্তিযোদ্ধা মখলেছুর রহমান বলেন, আমিও গত কয়েকদিন আগে ডাকযোগে রেজিস্ট্রিকৃত একটি চিঠি পেয়েছি। চিঠিতে শীতকালীন করোনা সহায়তা দেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। চিঠির মোবাইল ০১৭৯৭৯১৬৬৬৭ নম্বরে ফোন করা হলে তারা ৯৯০ টাকা বিকাশ করতে বলে। আমি টাকা দিয়েছি। কিন্তু পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি এটি একটি প্রতারক চক্র। এই চক্রের ফাঁদে পড়ে অনেকেই টাকা দিয়েছেন বলেও শুনেছি।’
মখলেছুর রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরেও খোঁজ নিয়েছি। তারাও বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে পারেনি।’
দুর্গাপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ওই চিঠি অনেককেই দেওয়া হেয়ছে। প্রতারকরা এটি করছে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে করোনা সহায়তার নামে এমন প্রতারণার ফাঁদ যারা পেতেছে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। তা না হলে এরা দেশজুড়ে আরও হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধার নিকট থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে বড় ধরনের প্রতারণা করবে। এটি দ্রুত বন্ধ করতে হবে। তা না হলে মুক্তিযোদ্ধারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।’
এদিকে চিঠিতে দেওয়া আরেকটি ফোন নম্বরে যোগযোগ করা হলে ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে পরিচয় না দিয়ে এক ব্যক্তি বলেন, আমরা একটি বেসরকারী সংস্থা। কয়েকজনকে অনুদান দিব। যারা রেজিষ্ট্রেশন করবে তাদের কুরিয়ারযোগে অনুদান পাঠাবো।’
এক প্রশ্নের জবাবে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী সরকারের নামে চিঠি দেওয়া হয়েছে সরকারের অনুমোদন নিয়ে।’
তবে এই ধরনের কোনো নির্দেশনার কথা জানেন না বলে জানিয়েছেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল। তিনি বলেন, একটি প্রতারক চক্র হয়তো এই ধরনের প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে।’
Leave a Reply