আজ ১ মে, আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। উৎসাহ-উদ্দীপনা আর বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে শ্রমিকরা তথা পরিবহন শ্রমিকরা দিবসটি পালন করবেন। ফলে ঢাকা থেকে আন্তঃজেলা রুটে চলাচল করা যাত্রীবাহী বাসগুলো বন্ধ থাকবে। এছাড়া ঢাকা সিটি ও আশপাশের জেলায় চলাচল করা বাসগুলোও দুপুর পর্যন্ত বন্ধ থাকার ইঙ্গিত দিয়েছে মালিক সমিতি। ফলে সকাল থেকে যাত্রীদের চলাচলে ভোগান্তিতে পড়তে হতে পারে।
বাস চলাচল প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল কালাম বলেন, ১ মে শ্রমিক দিবস। এদিন পরিবহন শ্রমিকরা দুপুর পর্যন্ত গাড়ি চালায় না। হয়ত দুপুর ২টা পর্যন্ত গাড়ি চলবে না। মূলত শ্রমিকরা মে দিবসের আলোচনা-র্যালিতে যুক্ত হয়। তারা দিনটিকে উৎসব হিসেবে পালন করে।
তিনি আরও বলেন, মে দিবসের কথা বলে লাভ নাই। মে দিবস আসে যায়, কিন্তু শ্রমিকদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না। তারা দিনের পর দিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যে প্রত্যাশা নিয়ে ১৮৮৬ সালে হে মার্কেটের শ্রমিকরা রক্ত দিয়েছিল; তার ৮ ঘণ্টা শ্রম, ৮ ঘণ্টা বিশ্রাম এবং ৮ ঘণ্টা বিনোদন— সেসব এখন আর ধারে কাছে নাই। এত বছর পরে এসেও পরিবহন শ্রমিকরা প্রায় ১৮ ঘণ্টা টানা কাজ করে। গার্মেন্টস শ্রমিকরা ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা কাজ করে।
বাস বন্ধ সম্পর্কে তিনি বলেন, এই দিন সারা দেশের আন্তঃজেলা পরিবহনগুলো বন্ধ থাকবে। সিটির গাড়িগুলো বন্ধ থাকার কথা। সিটির গাড়িগুলো কোনো বেসিক রুলে অন্তর্ভুক্ত না থাকার কারণে মালিকরা শ্রমিকদের চুক্তিভিত্তিক দিয়ে দিচ্ছে। যে কারণে এই গাড়িগুলোর কিছু বন্ধ থাকে, আর কিছু চলে।
তারাকান্দি-ঢাকা-তারাকান্দি রুটের একটি বাসের চালক মোহাম্মদ আকবার বলেন, মে দিবস উপলক্ষ্যে বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
মে দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটি থাকাতে সকালে ঢাকা থেকে সরিষাবাড়ী যেতে চান যাত্রী জাহিদ আহসান। তিনি বলেন, বাস কাউন্টারে কল করে জানতে পারলাম— আগামীকাল বাস চলবে না। ফলে ট্রেনে যাত্রীর চাপ বেড়ে যাবে। আসলে কখন বাস চালু হবে, সেটি ঠিক করে কাউন্টার থেকেও জানাতে পারেনি।
উল্লেখ্য, ১৮৮৬ সালের এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকেরা শ্রমের উপযুক্ত মূল্য ও দৈনিক অনধিক আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। ওই দিন আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর পুলিশ গুলি চালায়। এতে অনেক শ্রমিক হতাহত হন। তাদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে দৈনিক কাজের সময় আট ঘণ্টা করার দাবি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এর পর থেকে দিনটি মে দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়ে আসছে মে দিবস। এবারের মে দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘শ্রমিক-মালিক গড়বো দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ’।
Leave a Reply